জুমবাংলা ডেস্ক : রাজধানীর মিরপুরে অভিনব কায়দায় চাদাঁবাজি ও প্রতারণা করে টাকা লুট করে নেয়ার অভিযোগে ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির মিরপুর মডেল থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মোঃ মহসিন মুন্সি, মোঃ মাজাহারুল ইসলাম, মোঃ রেজাউল করিম, তৈয়ব, মোঃ হুমায়ুন কবির ও নূর মোহাম্মদ ওরফে নতু। গ্রেফতারের সময় তাদের হেফাজত থেকে ৫৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকাসহ ১টি পিস্তল সদৃশ্য গ্যাস লাইট, ৬টি মোবাইল ফোন ও একটি লোহার সিন্দুক জব্দ করা হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাকছেদুর রহমান।
উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, ধানমন্ডির বাসিন্দা মোঃ হারুনুর রশিদ ভূঞা (৬০) নাফকো ডেভেলপার কোম্পানী লিমিটেডের ধানমন্ডির রোড ৪/এ নির্মাণাধীন ১০ তলা বিশিষ্ট ভবনের ২য়, ৩য় ও ৮ম ফ্লোর ক্রয়ের জন্য ৩ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা মূল্যে ৩০ লক্ষ টাকা বায়না নামা দলিলমূলে ক্রয়ের জন্য বায়না করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন তারিখে বিভিন্ন সময়ে ১ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। নাফকো ডেভেলপার কোম্পানীর ডিএমডি ও এমডি মোবাইল ফোনে ভিকটিমকে জানায় যে, ৮ অক্টোবর ২০২৪ তারিখ সন্ধ্যার পরে মিরপুর মডেল থানার বাসা নং-৯/২, ব্লক-বি, সেকশন-০৬, রোড নং-০৫ এ তার অফিসে রেজিষ্ট্রেশন করে দিবে এবং রেজিষ্ট্রেশনের জন্য বকেয়া সমুদয় টাকা সঙ্গে করে আনতে। তখন বাদী ডিএমডি ফয়সাল শেখকে বকেয়া টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যেমে দিতে চাইলে তিনি তাকে নগদ টাকা নিয়ে আসার জন্য জোর অনুরোধ করে।
তিনি আরও বলেন, কোম্পানীর এমডি ও ডিএমডির অনুরোধের প্রেক্ষিতে ০৮ অক্টোবর ২০২৪ অনুমান ০৬.১০ ঘটিকার সময় ভিকটিম, তার পরিবারের সদস্যসহ নগদ ৭২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা দুইটি ব্যাগে করে নিয়ে নাফকো ডেভেলপার কোম্পানীর অফিসে যান। এ সময় ভিকটিমের কাছে থাকা সাদা শপিং ব্যাগের ভিতরে ৩২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকাসহ অজ্ঞাতনামা একজন ব্যক্তি কার পার্কিং হতে ভিকটিমকে ৬ষ্ট তলার অফিসে নিয়ে যায়। অবশিষ্ট ৪০ লক্ষ টাকা ভিকটিমের স্ত্রী একটি ব্যাগে করে নিয়ে অফিসের নিচে ব্যক্তিগত গাড়ির ভেতর অবস্থান করেন। ভিকটিম, ডিএমডি ফয়সাল শেখ এর অফিসে বসে কথা বলার সময় হঠাৎ অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জন ব্যক্তি মুখে মাস্ক পরা অবস্থায় পিস্তল সদৃশ্য বস্তু দিয়ে গুলি করার ভয় দেখিয়ে ভিকটিমকে মারধর করে ৩২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা কেড়ে নেয় ও তাদেরকে পাশের রুমে আটকে রাখে। পরবর্তীতে উক্ত অজ্ঞাত ব্যক্তিরা কার পার্কিংয়ে থাকা ভিকটিমের স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও ড্রাইভারকে মারধর করে তাদের কাছে থাকা আরো ৪০ লক্ষ টাকা কেড়ে নেয়। ভিকটিমের স্ত্রীর গলায় থাকা ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ও পরিবারের সদস্যদের ব্যবহৃত ৫টি মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। পরে ভিকটিমের স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে ও ড্রাইভারকে ডিএমডি ফয়সাল শেখ এর অফিস কক্ষের পাশের রুমে সকলের সঙ্গে আটকে রেখে বাহির থেকে তালাবন্ধ করে চলে যায়। তাদের চিৎকারে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি দরজা খুলে দিলে তারা রুম থেকে বের হয়। তাদের আর্তচিৎকারে পার্শ্ববর্তী লোকজন ছুটে আসে এবং মিরপুর থানায় বিষয়টি জানালে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিমদের উদ্ধার করে। পবর্তীতে পল্লবী থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অপরাধীদের গ্রেফতার করে ও তাদের নিকট হতে নগদ ৫৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ও অন্যান্য আলামত উদ্ধার করে।
‘রিসেট বাটন’ নিয়ে বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলো প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রিয়েল এস্টেট কোম্পানির মালিক ফয়সাল শেখও এ প্রতারণার সাথে জড়িত। ইতিপূর্বেও তারা এধরণের প্রতারণা ও টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটিয়েছে। কতিপয় নিজস্ব লোক রয়েছে যাদের দিয়ে অর্থের বিনিময়ে এ ধরণের প্রতারণা ও চাদাঁবাজির কাজ করে থাকে। এঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
এ ঘটনায় মিরপুর মডেল থানায় ৯ অক্টোবর একটি মামলা রুজু হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।