জুমবাংলা ডেস্ক : ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের নির্মম নি’র্যাতনে অকালে প্রাণ হারিয়েছেন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। এই মৃত্যুর ঘটনায় গোটা দেশে নেমে এসেছে শোখের ছায়া। তিন দফায় প্রায় সাত ঘণ্টার টানা নি’র্যাতনে মা’রা যায় ছেলেটি। কিন্তু মরার আগেও বাঁচার আকুতি ছিলো আবরারের মুখে। খবর : বিবিসি বাংলার।
প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃতি দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে আবরার হ’ত্যার লোমহর্ষক কিছু মুহূর্ত। প্রতিহিংসামূলক হামলার শিকার হওয়ার শঙ্কায় নাম না প্রকাশ করে বুয়েটের এক শিক্ষার্থী বলেন, যে কক্ষে আবরারকে মারধর করা হয়, সেখানে রাত ২টা পর্যন্ত জীবিত ছিলেন আবরার।
তিনি বলেন, ‘আমি আবরারকে ২০০৫ নম্বর কক্ষে দেখতে পাই, তখনো সে জীবিত। কয়েকজন জুনিয়র শিক্ষার্থীকে সঙ্গে করে আমি তাকে সিঁড়ির কাছে নিয়ে যাই।’ তখনো সে জীবিত। সে বলছিল- ‘প্লিজ, আমাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে চলো।’ বিশেষ করে বিশেষায়িত কোন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সে।
বুয়েটের ওই প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী আরো জানায়, ‘এম্বুলেন্স আসতে দেরি হচ্ছিল। পুলিশ ছিল। যেকোন কারণেই হোক আমার আর সেখানে থাকা সম্ভব হয়নি।’
ঘটনাস্থলে থাকা আরেক শিক্ষার্থী বলেছেন, আবরারকে বাঁচাতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কয়েকজন শিক্ষার্থী হলের সহকারী প্রভোস্টের কক্ষে যান। তখন বাইরে থেকে ওই কক্ষের দরজায় ধাক্কাধাক্কি করছিল ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। তারা কক্ষে ঢোকার চেষ্টা করে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ-ভারত পানি চুক্তি নিয়ে সরকারের সমালোচনা করে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার পর আবরারকে ধরে নিয়ে যায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এরপর তার ওপর চলে অকথ্য নি’র্যাতন। হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে হামলাকারীদের নির্মম নি’র্যাতনের মুখে আবরার দুবার বমি করেন। সঙ্গে প্রস্রাবও করেন। এই নি’র্যাতন সইতে না পেরে এক সময় মৃ’ত্যুর কোলে ঢলে পড়ে আবরার। এরপর তার মরদেহ ফেলে রাখা হয় বুয়েটের শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার মাঝামাঝি সিঁড়িতে। সেখান থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বুয়েট ছাত্রলীগের ১৪ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা যায়, ফেনী নদীর পানি বণ্টন ও বন্দর ব্যবহারসহ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন চুক্তির সমালোচনা করে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় শিবির সন্দেহে তাকে পি’টিয়ে হ’ত্যা করেছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। যদিও শিবিরের সঙ্গে আবরারের কোনো সম্পৃক্ততা খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার পরিবারের লোকজন আওয়ামী লীগ করে বলে শোনা গেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।