মৃত্যু মানবজীবনের এক চিরন্তন সত্য। জন্ম হলে মৃ ত্যু হবে এটাই স্বাভাবিক। সাধারণত কারো হৃদস্পন্দন থেমে গেলে তাকে মৃ ত ঘোষণা করা হয়। বলা হয়, পৃথিবীর সঙ্গে ওই ব্যক্তির আর কোনো স’ম্পর্ক নেই। এমনকি এই পৃথিবীতে তার চারপাশে কী ঘটছে তার কিছুই শুনতে বা বুঝতে পারেন না তিনি। কিন্তু আদৌ কি তাই হয়?
সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, মৃ ত ঘোষণা করার পরও মানুষের মস্তিষ্ক বেশ কিছুক্ষণ সজাগ থাকে। তাই মৃ ত ব্যক্তি নিজ কানেই শুনতে পান তাকে মৃ ত ঘোষণা করা হয়েছে। এমনকি চার পাশে চিকিৎসক বা মানুষের ছোটাছুটিও বুঝতে পারেন। কিন্তু আর দশজন মৃ ত মানুষের মতোই হৃদস্পন্দন থে’মে যাওয়ায় সাড়া দিতে পারেন না তিনি।
মানুষের অন্তিম মুহূর্ত বা মৃ ত্যু নিয়ে গবেষণাটি চালিয়েছে নিউ ইয়র্ক সিটির স্টোনি ব্রুক ইউনিভার্সিটি অব মেডিসিনের এক দল গবেষক। হৃদস্পন্দন থে’মে যাওয়ার পরও মানুষের মস্তিস্ক সজাগ থাকার বিষয়ে তারা জানান, হৃদপিণ্ড থেকে মানবদে’হের প্রতিটি জায়গায় পরিশ্রুত র ক্ত ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু হঠাৎ করে হৃদপিণ্ড কাজ করা বন্ধ করে দিলে এর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত যে পরিশ্রুত র ক্ত ছড়ানো শুরু করেছে তা তখনো সারাদে’হে ছড়াতে থাকে। এই র ক্ত পেয়ে মস্তিস্ক তখনও সজাগ থাকে এবং কাজ করে।
তাই চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুযায়ী, চিকিৎসকরা যখন কাউকে মৃ ত ঘোষণা করেন, তখন ওই ব্যক্তি মস্তিস্ক সজাগ থাকার কারণে নিজের মৃ ত্যু সংবাদ নিজের কানেই শুনতে পারেন। পাশাপাশি বেশ কিছুক্ষণ পর্যন্ত বুঝতেও পারেন চারপাশে কী ঘটছে।
গবেষকরা তাদের এই গবেষণার জন্য কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে মৃ ত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা মানুষের অভিজ্ঞতার কথাও শুনেছেন। যাদের হৃদস্পন্দন থে’মে গিয়েও আবার চালু হয়ে গেছে, এই অভিজ্ঞতার কথা তাদের স্মৃতিতে থেকে যায়। এই ঘটনাটিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ‘নিয়ার ডেথ এক্সপেরিয়েন্স’।
এ ধরনের রো’গীর মুখ থেকেই তাদের অভিজ্ঞতার কথা শুনে গবেষণার কাজ এগিয়ে নেন গবেষকরা। এই ঘটনার সঙ্গে মহাজাগতিক এক ঘটনার মিল রয়েছে। পৃথিবী থেকে বহু বহু আলোকবর্ষ দূরে থাকা কিছু নক্ষত্র দেখা যায় রাতের আকাশে। আসলে এদের অধিকাংশই মৃ ত। পৃথিবীতে ওই সব নক্ষত্রের আলো এসে পৌঁছেছে যখন, ততদিনে তারা ধ্বং’স হয়ে গেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।