জুমবাংলা ডেস্ক: মেক্সিকোর সিনেট অব রিপাবলিক এবং ইবেরোআমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বাংলাদেশ দূতাবাসের সম্মিলিত উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ পালন করা হয়েছে।
এ দিনের কর্মসূচি তিনটি পর্বে বিভক্ত ছিল।
প্রথম পর্বে, গত ২০ ফেব্রুয়ারি মেক্সিকোর নৃগোষ্ঠীর ভাষা অধিকার সংরক্ষণ সংক্রান্ত কমিটি প্রজাতন্ত্রের সিনেটের ( সিনেট অব রিপাবলিক ) স্থায়ী কমিশন হলে “আদিবাসীদের ভাষাগত অধিকারের সাধারণ আইনের ২০ বছর” শীর্ষক ফোরামের অধীনে প্রথম বারের মতো মেক্সিকোস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে যৌথ উদ্যোগে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” পালন করে।
আদিবাসী বিষয়ক কমিশনের সিনেটর সোচিত গাল্ভেজ রুইজের সভাপতিত্বে, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও আদিবাসী শিক্ষার সমন্বয়ক (INPI) মিসেস বার্থা দিমাস হুয়াকুজ, রাজনৈতিক সমন্বয় বোর্ডের সভাপতি সিনেটর রিকার্ডো মনরিয়াল আভিলা, সিনেটর নেস্টোরা সালগাডো গার্সিয়া, অন্যান্য সিনাটর এবং আদিবাসী বিষয়ক কমিশনের সদস্যদের উপস্থিতিতে রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম ২১ ফেব্রুয়ারির প্রেক্ষাপট, বাংলাদেশে বহুভাষিকতার মর্যাদাসহ স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনে ২১শে ফেব্রুয়ারির অবদান তুলে ধরেন।
তিনি বাংলাদেশের ভাষা শহীদদের পাশাপাশি বিশ্বের সকল ভাষা সংগ্রামীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
রাষ্ট্রদূত গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন- সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান- যিনি বাঙালির ভাষা আন্দোলনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
সিনেটর সোচিত গাল্ভেজ রুইজ তার বক্তব্যে মাতৃভাষা দিবসকে আন্তর্জাতিকীকরণের জন্য বাংলাদেশের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং মেক্সিকোতে ৬৮টি আদিবাসী ভাষা সংরক্ষণে তার সরকারের উদ্যোগের কথা জানান।
অন্যান্য সিনেটররাও বাংলাদেশের ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং তাদের আদিবাসীদের ভাষার বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন। তারা বিগত দুই দশকে উপরোক্ত সাধারণ আইনের কর্মকান্ড এবং অর্জনগুলিও পর্যালোচনা করেন।
২১ ফেব্রুয়ারি সকালে চ্যান্সেরি প্রাঙ্গণে রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম কর্তৃক জাতীয় সংগীতের সুরে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করণের মধ্য দিয়ে দিবসটির দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়।
পরে দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয় এবং এই উপলক্ষে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এই পর্বটি সমাপ্ত হয়।
চূড়ান্ত পর্বে, ইবেরোআমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় মেক্সিকো সিটিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস যৌথভাবে একটি সেমিনারের আয়োজন করে যেখানে সিনেটর সোচিলত গালভেজ রুইজ সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।
আইভরি কোস্ট, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত ও গুয়াতেমালার রাষ্ট্রদূতরা উক্ত সেমিনারে অতিথি বক্তা হিসেবে তাদের নিজ নিজ দেশের বহুভাষিকতার বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন।
ফিলিস্তিন, ইরান, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রদূত এবং কূটনৈতিক প্রতিনিধি, স্থানীয় গণমাধ্যমের কর্মীসহ প্রায় ৮০ জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে দূতাবাসের কাউন্সেলর শাহানাজ রানু উক্ত অনুষ্ঠানে ইউনেস্কো মহাপরিচালকের বাণী পাঠ করেন।
এছাড়া, ইবেরো-আমেরিকান ইউনিভার্সিটির বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের পরিচালক হাভিয়ের সার্ভান্তেস গঞ্জালেজও অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
সাংস্কৃতিক পর্বে মেক্সিকো ও আইভরি কোস্ট অংশগ্রহণ করে. বাংলাদেশের প্রখ্যাত গায়ক সুজিত মোস্তফার গাওয়া ‘ অমর একুশে’ গানটি প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি ঘটে।
ইবেরো-আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক বিষয়ক প্রশাসনের ব্যাচেলর শিক্ষার্থীদের সমন্বয়কারী ডক্টর অ্যারিবেল কনট্রেরাস এই অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।