জুমবাংলা ডেস্ক: ‘কয়দিন হাতে কুয়াকাপ শীত পৈছে বাপু। কাপড় পইল্লেও হাড় পর্যন্ত ঠাণ্ডা লাগেছে। নদীর পাড়ত বাড়ি। ঘরবাড়ি ভাঙা। হুহু করি বাতাস ঢুকেছে ঘরখানত। দুই এগনা কাঁথা কম্বল আছে। ওইলা দিয়া ঠাণ্ডা মানে না। ওইতানে উঠানত আগুন করি বসে রয়েছি।’ বাড়ির উঠোনে বসে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আগুনে হাত সেঁক দিতে দিতে কথাগুলো বলছিলেন পঞ্চগড়ের তুলারডাঙ্গা এলাকার নাজিনা বেগম।
তার মতো পঞ্চগড়ের নিম্ন আয়ের অনেক মানুষের অবস্থা একই রকম। শীত তাদের জীবনে নিয়ে এসেছে দুর্ভোগ। প্রয়োজনীয়সংখ্যক শীতবস্ত্র না থাকায় তারা কষ্টে রাত কাটাচ্ছেন। সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত সড়কের পাশে আগুন করে শ্রমজীবীরা উষ্ণতা নিচ্ছেন।
পৌষের দাপটে কাঁপছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। ঘন কুয়াশার সাথে বেড়েছে ঠাণ্ডা বাতাসের বেগ। এ ছাড়া তাপমাত্রাও কমে আসছে উল্লেখযোগ্য হারে। এই মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মঙ্গলবার ৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। তবে সকাল ১০টার মধ্যেই মেলে সূর্যের দেখা। সূর্যের দেখা মেলায় স্বস্তি মিলে এ জনপদের জনজীবনে। চার-পাঁচ ঘণ্টা পর আবারও কমে আসে তাপ। আর বাড়তে থাকে ঠাণ্ডা বাতাস। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে শীতের তীব্রতা। রাত যতই গভীর হয় তাপমাত্রাও বাড়ে পাল্লা দিয়ে। সেই সঙ্গে চলে কুয়াশাপাত। সকালে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকে পথ-ঘাট।
শীতের প্রকোপ বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন জেলার নিম্ন আয়ের মানুষেরা। জীবিকার তাগিদে মানুষজন কাজে বের হলেও সীমাহীন কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। জেলার বালু ও পাথর শ্রমিকদের অনেকেই বেকার হয়ে পড়েছেন। কাজ পাচ্ছেন না দিনমজুর মানুষেরা।
ভ্যানচালক আব্দুল করিম বলেন, কাজ না করলে সংসারের চুলা জ্বলবে না। তাই ভোরে ভ্যান নিয়ে বের হতে হয়। ঠাণ্ডা বাতাস আর কুয়াশায় বেশিক্ষণ থাকা যায় না। যেখানে আগুন পাই হাত-পায়ে সেঁক দিয়ে আবার ভ্যান চালানো শুরু করি। শীতে আমাদের খুব কষ্ট হয়।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, বর্তমানে পঞ্চগড়ের ওপর দিয়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আগামী কয়েক দিন আবহাওয়া এমনই থাকবে।
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত পঞ্চগড়ের দরিদ্র শীতার্তদের মাঝে ৪০ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় পঞ্চগড়ের নিম্ন আয়ের মানুষকে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।