আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনা আতঙ্কে কাঁপছে সারা বিশ্ব। প্রতিদিনই নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে করোনা রোগী। করোনার করাল গ্রাসে বিধ্বস্ত চীনের পরিস্থিতি এখন কিছুটা উন্নতির দিকে হলেও ভয়ংকর থেকে ভংয়করতম হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের পরিস্থিতি। লন্ডনে বর্তমানে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৫৪৩ জন। মৃত্যু হয়েছে ৫৫ জনের।
তবে সরকারি এই হিসাবের সঙ্গে একমত নয় দেশটির প্রভাবশালী গণমাধ্যম ডেইলি মিরর। সরকারের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ এনে গণমাধ্যমটি বলছে ব্রিটেনে এরই মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৫৫ হাজার মানুষ। এদের মধ্যে সম্ভাব্য ২০ হাজার মৃত্যুর ঘটনা ঘটতে পারে।
সরকারের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা স্যার প্যাট্রিক আজ মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) ঘোষণা করেছেন, ‘যুক্তরাজ্যে এরই মধ্যে ৫৫ হাজার করোনভাইরাস আক্রান্ত রোগী থাকতে পারে। আশা করি আমরা সেলফ কোয়ারেন্টাইনের মাধ্যমে এই বিপুল মৃত্যু রুখে দিতে পারবো। পূর্ববর্তী ভবিষ্যদ্বাণী ২ লাখ মৃত্যু থেকে আমরা এই সংখ্যা ২০ হাজারের মধ্যে নামিয়ে আনতে পারি।’
স্যার প্যাট্রিক বলেছিলেন, যুক্তরাজ্যে মৌসুমী ফ্লুতে বাৎসরিক অতিরিক্ত মৃত্যুর সংখ্যা ছিল প্রায় ৮ হাজার। আমরা যদি করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ২০ হাজারের চেয়ে কমে আনতে পারি সেটা হবে এই মহামারি মোকাবেলায় বড় সফলতা।
তবে এটি এখনও যুক্তরাজ্যে ভয়াবহ অবস্থায় আছে। এখনও আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি। এটি স্বাস্থ্যসেবার উপর একটি বিরাট চাপ ফেলেছে।।
ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে (এনএইচএস) পরামর্শদাতা এবং একাডেমিক ক্যারিয়ারে ২০ বছর অতিবাহিত করার পরে আমি ঠিক জানি যে এই বিপুল মৃত্যু দেখতে কেমন লাগে।
তিনি আরও বলেছিলেন যে, প্রতিটি রোগী বর্তমানে দুই থেকে তিনজনকে সংক্রামিত করছে, তাই সংক্রমণের হার কমা শুরু হতে এখনও অনেক সময় লাগবে। কয়েক সপ্তাহ আগে পদক্ষেপ নেওয়া হলে এটা সহজ ছিল, তখন হাতে অনেক সময় ছিল।
স্বাস্থ্য কমিটির চেয়ারম্যান জেরেমি হান্ট জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, প্রতি এক হাজার রোগীর ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত মৃত্যুর হার একটাই কি-না, যার অর্থ হবে,সম্ভাব্য ৫৫ হাজার করোনা রোগী আছে।
এটি সঠিক মনে হয়েছে কিনা জানতে চাইলে স্যার প্যাট্রিক বলেছিলেন, “আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি (জরুরী পরিস্থিতিতে বৈজ্ঞানিক পরামর্শদাতা)। তবে আপনি যদি সমস্ত তথ্য একসাথে রাখেন তবে এটি গবেষণার জন্য যুক্তিযুক্ত হবে না। এরচেয়ে বেশি বলাটা ঠিক হবে না।
করোনা সিনট্রোমে ভোগা সবাইকে পরীক্ষা না করায় সরকারের নিন্দা জানিয়ে স্যার প্যাট্রিক বলছিলেন যে, আমাদের বিপুল সংখ্যক জনগণের পরীক্ষা করার মতো সামর্থ হয়তো এখন নেই। এটা বড় ধরণের বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। তবে যতটুকু সম্ভব দ্রুত পরীক্ষার সহজলভ্যতা ও যতটা বেশি মানুষকে পরীক্ষার আওতায় আনা যায় সেই প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
তবে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, সবাইকে পরীক্ষার আওতায় আনা সম্ভব নয়। কেবল মাত্র যাদের মধ্যে করোনার লক্ষণগুলো প্রকাশ পাবে তাদেরই পরীক্ষা করা হবে। জনগণকে এই বিপর্যয় মোকাবেলায় সরকারের পরামর্শ মেনে চলার পাশাপাশি নিজেদেরও সচেতন হতে হবে। গণ জমায়েত এড়িয়ে চলতে হবে।
ইংল্যান্ডের ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার জোনাথন ভ্যান-ট্যাম বলেছেন, করোনায় উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীগুলির থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শটি বেশ কার্যকরি। করোনার সংক্রমণ রুখতে এটা বেশ শক্তিশালী একটা পদক্ষেপ।
যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কিংবা আক্রান্তের ঝুঁকিতে রয়েছেন তারা সরকারের পরামর্শ অনুসরণ অন্যদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলবেন। এটা যাতে সবাই পালন করে সে জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।