বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক: শিশু ও কিশোরদের ওপর টিকটকের শারীরিক ও মানসিক প্রভাব নিয়ে তদন্ত চালু করতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের একদল অ্যাটর্নি। এর আগে মেটার ফটো শেয়ারিং অ্যাপ নিয়েও এ ধরনের তদন্ত করেছিলেন মার্কিন অ্যাটর্নিরা। খবর টেকক্রাঞ্চ।
মহামারীর সময়টায় বাজারে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে বাইটড্যান্স মালিকানাধীন প্লাটফর্মটি। ২০২১ সালে সর্বোচ্চ ডাউনলোড হওয়া অ্যাপ ছিল টিকটক। যুক্তরাষ্ট্রে শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের কাছে প্রিয় প্লাটফর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে এটি। অল্প বয়সীদের ওপর টিকটকের প্রভাব তদন্তে মাঠে নেমেছেন যুক্তরাষ্ট্রের আটটি অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলরা। এ দলে থাকছে যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রতিনিধিদের একটি দল, যেখানে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাই থাকবেন। অল্প বয়সীদের ওপর কোনো ক্ষতিকর প্রভাবের বিষয়ে টিকটকের জানা ছিল কিনা বা প্রতিষ্ঠানটি জেনেশুনে ক্ষতিকর ব্যবসা কৌশল অব্যাহত রেখেছে কিনা—এ প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজবেন তদন্তকারীরা।
টেনেসির অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, তদন্তকারী দলটিতে আছেন ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা, কেনটাকি, ম্যাসাচুসেটস, নেব্রাস্কা, টেনেসি ও ভারমন্টের অ্যাটর্নি জেনারেলরা; সঙ্গে আছেন আরো অনেকে।
ম্যাসাচুসেটসের অ্যাটর্নি জেনারেল মাউরা হিলির কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, আরো বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি অল্প বয়সীদের হাতে প্লাটফর্মটির ব্যবহার বাড়াতে টিকটক যে পদ্ধতি ও কৌশল ব্যবহার করেছে তার ওপর গুরুত্ব দেবে এ তদন্ত দল।
তবে চীনভিত্তিক বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন টিকটক এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা কম বয়সী ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তার ওপর জোর দেয় এবং বয়সভেদে বিভিন্ন ফিচারে প্রবেশাধিকার ও ব্যবহার সীমিত করে দেয়।
বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, কিশোর বয়সীদের জন্য আমাদের অনেক নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা ফিচার আছে। এ বিষয়ে তথ্য সরবরাহ করতে আমরা সানন্দে প্রতীক্ষা করছি।
ফেব্রুয়ারির শুরুতেই প্রতিষ্ঠানটি বলেছিল, বয়সের ভিত্তিতে কনটেন্টের শ্রেণীবিন্যাস ও বিধিনিষেধ আরোপের প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করছে তারা। প্রাপ্তবয়স্ক ব্যবহারকারীদের জন্য তৈরি ভিডিও কনটেন্ট যেন অপ্রাপ্তবয়স্কদের কাছে না পৌঁছে, সেটি নিশ্চিত করতেই এ পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।
তরুণ বয়সীদের ওপর ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার সেবাগুলোর বিরূপ প্রভাব তদন্তে এরই মধ্যে মাঠে নেমেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল। বিশেষ করে ইনস্টাগ্রাম নিয়ে বিপাকে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। মেটার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তরুণ বয়সীদের ওপর ইনস্টাগ্রামের বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে জানা থাকলেও পুরো বিষয়টি মুনাফার লোভে অগ্রাহ্য করে গেছে শীর্ষ সোস্যাল সাইটটি।
গত মঙ্গলবার স্টেট অব দি ইউনিয়নে দেয়া ভাষণে সোস্যাল মিডিয়ার ক্ষতিকর প্রভাবের প্রসঙ্গ টেনেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জনপ্রিয় অ্যাপগুলোর কারণে মহামারী শুরু হওয়ার আগে থেকেই শিশুরা ভুগছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শিশুদের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আরো কঠোর নীতিমালা এবং শিশুদের বিজ্ঞাপনী ‘টার্গেট’-এ পরিণত করা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বাইডেন বলেন, সোস্যাল প্লাটফর্মগুলো মুনাফার লোভে শিশুদের ওপর যে পরীক্ষা চালাচ্ছে, সেজন্য তাদের অবশ্যই দায়ী করতে হবে আমাদের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।