আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যুদ্ধাবসানে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসতে ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আনন্দবাজার জানিয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেইন সফরে থাকা মোদী জেলেনস্কিকে কূটনৈতিক পদ্ধতিতে যুদ্ধ থামানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
জেলেনস্কিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে বলার পর মোদী বলেন, প্রয়োজনে ব্যক্তিগতভাবে এই যুদ্ধ থামাতে তিনি সাহায্য করবেন।
ইউক্রেইনে গিয়ে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ভারত শান্তির পক্ষে।
গত মাসে ইউক্রেইনের একটি শিশু হাসপাতালে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরপরই মোদীর মস্কো সফর অনুষ্ঠিত হয়।
এই আক্রমণের জন্য মোদী রুশ নেতার সঙ্গে বৈঠকে পরোক্ষভাবে সমালোচনা করেছিলেন।
ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি মোদীর ওই সময় মস্কো সফর নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে শান্তি প্রচেষ্টার জন্য ওই সফরকে ধাক্কা বলে অভিহিত করেছিলেন।
তবে এবার মোদী ইউক্রেইন সফরে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে সংলাপ ও কূটনৈতিক সমাধানের পথ খোঁজার পরামর্শ দিয়েছেন।
জেলেনস্কিকে মোদী বলেছেন, “যুদ্ধে সময় নষ্ট না করে আমাদের আলোচনার মাধ্যমেই এগোনো উচিত।
“আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, ভারত শান্তির লক্ষ্যে যেকোনও প্রচেষ্টায় সক্রিয় ভূমিকা নিতে প্রস্তুত। আমি যদি ব্যক্তিগতভাবে এ ব্যাপারে কোনো ভূমিকা রাখতে পারি, আমি তা করব, বন্ধু হিসেবে আপনাদের পাশে থাকতে চাই।”
শুক্রবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সঙ্গে প্রায় তিন ঘণ্টার বৈঠক শেষে জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, “একটি ইতিহাস তৈরি হলো। ইউক্রেইনের স্বাধীনতার পর এই প্রথম ভারতের প্রধানমন্ত্রী এ দেশে পা রাখলেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, ইউক্রেইনের জাতীয় সার্বভৌমত্বকে সমর্থন করে ভারত এবং ভারত আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
জুলাইয়ের ইউক্রেইনের হাসপাতাল হামলায় নিহত শিশুদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মোদী সফর শুরু করেছেন, এতে জেলেনস্কি তার প্রশংসা করেছেন।
আনন্দবাজার আরও জানায়, মোদীর এই সফরে ভারত এবং ইউক্রেইনের মধ্যে মোট চারটি বিষয়ে চুক্তি হয়েছে। তার মধ্যে চিকিৎসা, কৃষি, মানবিক সম্পর্ক এবং সাংস্কৃতিক বিষয় রয়েছে।
এছাড়া দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, কৌশলগত আংশীদারত্ব এবং প্রযুক্তিগত এবং প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সহযোগিতা চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়েও কথা হয়েছে।
বৈঠকের আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মিখাইলো পোদোলিয়াক রয়টার্সকে বলেছেন, মোদীর কিইভ সফর গুরুত্বপূর্ণ, কারণ রাশিয়ার ওপর ভারতের কিছুটা প্রভাব রয়েছে।
মস্কোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক ও প্রতিরক্ষা সম্পর্ক থাকা ভারত প্রকাশ্যে যুদ্ধে নিরীহ মানুষের মৃত্যুর সমালোচনা করেছে।
জেলেনস্কি ও তার উপদেষ্টারা মনে করেন, রাশিয়ার ওপর ভারতের প্রভাব উল্লেখযোগ্য। আগ্রাসনের জেরে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং দেশটির সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার পর ভারত মস্কোর সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্কও জোরদার করেছে।
এদিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের সাম্প্রতিক হামলার পর আলোচনা সম্ভব নয়।
ইউক্রেনের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা দাবি করেছেন, এই হামলায় প্রায় ১০০টি বসতি দখল করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।