হাজার হাজার বছর আগে আধুনিক মানুষের সঙ্গে নিয়ান্ডারথালদের দেখা হয়েছিল, এ কথা আমরা আগেই জেনেছি। একসঙ্গে তারা অনেক দিন বসবাসও করেছিল, কিন্তু পরের দিকে এসে তারা সমস্যায় পড়ে। কিছু জেনেটিক গবেষণা থেকে জানা যায়, তাদের জিনগত বৈচিত্র্য কম ছিল। এ ছাড়া আধুনিক মানুষের তুলনায় তাদের গোষ্ঠীর আকারও ছোট ছিল, যা নিয়ান্ডারথালদের সম্ভাব্য বিলুপ্তির কারণের দিকে ইঙ্গিত করে।
বিষয়টি নিয়ে বাফেলো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবর্তনীয় জিনোমিক বিশেষজ্ঞ ওমের গোকচুকেন বলেন, ‘এখান থেকেই আমরা জিনগতভাবে একটি বড় সূত্র পাই। তা হলো হেটেরোজাইগোসিটির ধারণা। একজন ব্যক্তি মা–বাবার কাছ থেকে একটি জিনের দুটি কপি বা অ্যালিল পায়। যদি কেউ মা–বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে ভিন্ন অ্যালিল পায়, তাহলে সেই জিনের জন্য সে ‘হেটেরোজাইগাস’ হবে। নিয়ান্ডারথালরা ছোট ছোট গোষ্ঠীতে ভাগ হয়ে থাকত।
গোষ্ঠীগুলোতে ২০ জনের বেশি কম বয়সের ছিল। তাদের রক্তের সম্পর্কের মধ্যেই বিয়ে হতো। ফলে তাদের মধ্যে কমসংখ্যকই মা–বাবার কাছ থেকে জিনের ভিন্ন সংস্করণ উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে। ফলে তাদের মধ্যে হেটেরোজাইগোসিটি কম ছিল।
এই ‘মিউটেশনাল বার্ডেন’-এর কারণে নিয়ান্ডারথালরা ভুগে থাকতে পারে। এ ছাড়া জেনেটিক গবেষণায়ও দেখা গেছে, নিয়ান্ডারথালদের অনেক ত্রুটিপূর্ণ মিউটেশন ছিল, যা তাদের বেঁচে থাকার ওপর প্রভাব ফেলেছে। সংখ্যায় অল্প হওয়ায় তারা এই ত্রুটিপূর্ণ জিনগুলো দূর করতে পারেনি। তাদের বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
যেকোনো প্রাণীর টিকে থাকা নির্ভর করে সফল প্রজননের মাধমে বংশবৃদ্ধি ও সন্তান লালন–পালনের মাধ্যমে বড় করার ওপর। নিয়ান্ডারথাল শিশুদের মৃত্যুহার বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা দেখেছেন, তাদের বেঁচে থাকার হারে মাত্র ১ দশমিক ৫ শতাংশ হ্রাস হলেও দুই হাজার বছরের মধ্যে তারা বিলুপ্ত হয়ে যেত।
একদিকে নিয়ান্ডারথালদের সংখ্যা কমে আসছিল। তারা আলাদা হয়ে বাস করছিল। অসুস্থ শিশুদের দেখভাল করার জন্য যথেষ্ট সামাজিক সমর্থন ছিল না। অন্যদিকে আধুনিক মানুষেরা দ্রুত ইউরোপে ছড়িয়ে পড়েছিল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।