দক্ষিণ মেরুর বরফের মাঝে এক মাইলেরও বেশি গভীর গর্ত খুঁড়ে বিভিন্ন যন্ত্র বসাতে হবে। সাধারণ টেলিস্কোপের মতো এখানে কোনো লেন্স বা আয়না নেই। বর্তমানে এতে বাস্কেটবল আকারের গোল কাচের আবরণে মোড়া ছিয়াশি কিলোমিটার লম্বা লাইট ডিটেক্টরের স্ট্রিং রয়েছে (পরবর্তীতে এটি আরও বাড়ানো হতে পারে)। এসব কাচ আবার যেনতেন কাচ না, বরফের চাপ নিতে পারবে, এমন।
সায়েন্টিফিক আমেরিকান একবার আইসকিউব অবজারভেটরির কথা বলতে গিয়ে লিখেছিল, আধুনিক জ্যোতির্বিদ্যার সাত আশ্চর্যের হিসেব করা হলে এটি হবে এদের মধ্যে সবচেয়ে অদ্ভুত জিনিস। এই মানমন্দিরের সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার হলো, অন্যান্য টেলিস্কোপের মতো এটি ওপরের দিকে তাক করা নেই, বরং এর চোখ বরফের মধ্য দিয়ে নিচে তাক করা। হ্যাঁ, আইসকিউব অবজারভেটরির আসল কাজ হলো দক্ষিণ মেরুতে বসে উত্তরের আকাশ পর্যবেক্ষণ করা।
অন্য কোনো কণা এসে পড়ে অযথা ভুল সিগন্যাল যেন না দেয়, সে জন্য আইসকিউব অবজারভেটরি মূলত পৃথিবীকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে। কাজেই উত্তর দিক থেকে কোনো কণা যদি পৃথিবী পেরিয়ে এপাশে এসে আইসকিউব অবজারভেটরির পাল্লায় পড়ে, নিশ্চিতভাবে বলা যাবে, এটি নিউট্রিনোই।
অন্য কোনো কণা এসে পড়ে অযথা ভুল সিগন্যাল যেন না দেয়, সে জন্য আইসকিউব অবজারভেটরি মূলত পৃথিবীকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে। কাজেই উত্তর দিক থেকে কোনো কণা যদি পৃথিবী পেরিয়ে এপাশে এসে আইসকিউব অবজারভেটরির পাল্লায় পড়ে, নিশ্চিতভাবে বলা যাবে, এটি নিউট্রিনোই।
নিউট্রিনো যেহেতু সবকিছুর মধ্য দিয়েই নির্বিকারভাবে ছুট দেয়, স্বাভাবিকভাবেই নিউট্রিনোর দল আইসকিউব অবজারভেটরির মধ্য দিয়েও চলে গেছে এবং যাচ্ছে, প্রতিমুহুর্তে। সাধারণত কিছু না করলেও হঠাৎ কোনো সময় ডিটেক্টরের ভেতরে কিংবা এর চারপাশের বরফের সঙ্গে, কিংবা বরফের নিচে পৃথিবীর ভেতরের পাথরের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে কোনো ধরনের চার্জিত কণা উৎপন্ন করে নিউট্রিনো। এসব কণা নিউট্রিনো যেদিকে আসছিল, সেদিকেই ছুট দেয়, সঙ্গে করে বয়ে নেয় মৃদু নীল আলো। আইসকিউবের লাইট ডিটেক্টর এই আলো শনাক্ত করতে পারে।
২০১৩ সালের নভেম্বরের কথা। প্রথমবারের মতো আইসকিউব অবজার্ভেটরির বিজ্ঞানীরা বহিঃর্বিশ্ব থেকে আসা উচ্চশক্তির নিউট্রিনো শনাক্তের ঘোষণা দেন। এরপর থেকে নিয়মিতই উচ্চশক্তির নিউট্রিনো শনাক্ত করছে আইসকিউব অবজারভেটরি। ফলে নিউট্রিনোকে ঘিরে তৈরি হয়েছে জ্যোতির্বিজ্ঞানের আস্ত একটি শাখা—নিউট্রিনো জ্যোতির্বিজ্ঞান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।