ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : দীর্ঘ ৮ মাস পর ঝিনাইদহ সরকারি উচ্চ বালক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির মেধাবী ছাত্র সামিউল আলম সাফিন হ’ত্যার মোটিভ ও ক্লু উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতার করা হয়েছে হ’ত্যার সাথে সরাসরি জড়িত মেহেদী হাসান বিল্টু (৩৫)। এই মামলায় বিল্টুর মা জাহানারা বেগম পলাতক রয়েছে। বিল্টু ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পাগলাকানাই ইউনিয়নের গয়াশপুর গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে।
ঝিনাইদহ পিবিআই’র পুলিশ সুপার আবু আশ্রাফ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সাফিন হ’ত্যার মোটিভ উদ্ধার করতে পেরে পিবিআই গর্বিত। এতো দিন ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশের কাছে সাফিন হ’ত্যা মামলাটি ক্লু লেস ছিল। কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় ছায়া তদন্তকারী সংস্থা হিসেবে ঝিনাইদহ পিবিআই সাফিন হ’ত্যার মোটিভ উদ্ধারে অত্যন্ত গোপনে মাঠে নামে।
শনিবার বিকালে ঝিনাইদহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রফিকুল ইসলামের আদালতে গ্রেপ্তারকৃত ঘাতকের ৬ পাতার জবানবন্দির মধ্য দিয়ে চঞ্চল্যকর এই মামলার রহস্য উন্মোচন করলো পিবিআই।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইর এসআই তৌহিদুল ইসলাম সাফিন হ’ত্যার মোটিভ উদ্ধারে যে বর্ণনা দিয়েছেন তা রীতিমতো সিনেমার মতোই। এসআই তৌহিদুল বলেন, ঘাতক মেহেদী হাসান বিল্টুকে খুঁজে পেতে আমরা তার বড় ভাই লাল্টুকে টাইলসের কাজ করার কথা বলে কৌশলে পিবিআই অফিসে ডেকে নজরবন্দি করে ফেলি।
এরপর তাকে নিয়ে ২৫ জুলাই ঢাকায় রওনা দেয় পিবিআই’র একটি চৌকস দল। লাল্টুকে দিয়ে বিল্টুর মোবাইল ফোনে ফোন দিয়ে অবস্থান শনাক্ত করে সেখানে হানা দেয় পিবিআই। এরপর ঢাকার পল্লবী থানার কালসি এলাকা থেকে বিল্টুকে আ’টক করা হয়।
ঝিনাইদহ পিবিআই অফিসে জিজ্ঞাসাবাদে সাফিনকে কীভাবে হ’ত্যা করা হয় তার বর্ণনা দেয় বিল্টু। বিল্টু পিবিআইকে জানিয়েছে, ঝিনাইদহ প্রিন্স হাসপাতালে টাইলসের কাজ করার সময় সে ও তার মা ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন আলমের বাড়িতে চুরি করার ছক আটে। ২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর বিল্টু ও তার মা জাহানারা বেগম আলমের বাসায় চুরি করে বেরিয়ে আসার সময় স্কুলছাত্র সাফিন তাদের দেখে ফেলে।
এ সময় মা ও ছেলে দুজনে মিলে স্কুলছাত্র সাফিনকে নির্মমভাবে শ্বাসরুদ্ধ করে হ’ত্যার পর পালিয়ে যায়। নিহতের পিতা কালীচরণপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন আলম এ ঘটনায় পরদিন ২৯ নভেম্বর ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি হ’ত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করেন ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি অপারেশন মহসিন আলী।
পুলিশ এ ঘটনায় হামদহ শান্তিনগর পাড়ার মিন্টুর ছেলে রিফানকে আ’টক করলেও তার কাছ থেকে তেমন কোনো তথ্য উদ্ধার করতে পারেনি। ৮ মাস মামলাটি মোটিভ ও ক্লুলেস থাকার পর অবশেষে ঝিনাইদহ পিবিআই’র পুলিশ সুপার আবু আশ্রাফের নিবিড় অনুসন্ধানে মামলাটির গতি ফিরে পায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।