স্পোর্টস ডেস্ক : বার্সেলোনা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন লিওনেল মেসি। যে ক্লাবকে এতোকিছু দিয়েছেন, পেয়েছেনও; সেই ক্লাবের পাঠ চুকিয়ে ফেলতে চান বিশ্বের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার। তাতেই মেসি-বার্সার মধুর সম্পর্ক দিনে দিনে তিক্ত থেকে তিক্ততর হচ্ছে।। ক্লাবের ইতিহাসের সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় ক্লাব ছাড়তে চাইছেন, ওদিকে বার্সেলোনা তাকে সহজে যেতে দিতে রাজি নয়।
একদিকে ক্লাব অসম্ভব এক মূল্য সেঁটে দিয়েছে যাতে মেসিকে কেউ নিতে না পারে, ওদিকে অধিনায়কের দাবি চুক্তির শর্তানুযায়ী মুফতেই ছাড়তে পারবেন ক্লাব।দীর্ঘদিনের সম্পর্ক চুকিয়ে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড ন্যু ক্যাম্প ছেড়ে যেতে চাইলেও ৭০০ মিলিয়ন ইউরো রিলিজ ক্লজের কারণে ঝুলে আছেন তিনি।
তবে রিলিজ ক্লজ ছাড়া বিনামূল্যে তাকে ক্লাব ছাড়ার পথ করে দিতে কঠিন একটি শর্ত দিতে যাচ্ছে কাতালানরা। মেসি কোনো ট্রান্সফার ফি ছাড়াই বার্সা ছাড়তে পারবেন, তবে তাকে নিশ্চয়তা দিতে হবে যে, আগামী মৌসুমে তিনি কোথাও ফুটবল খেলতে পারবেন না!
ক্লাব ছাড়ার ব্যাপারে এতো শক্ত অবস্থান কেনো নিলেন মেসি? স্প্যানিশ সংবাদ মাধ্যম মার্কা তুলে ধরেছে দশটি কারণ। মূল কারণ দুটি। একটি আইনি অন্যটি মাঠের। এর মধ্যে আইনি কারণ তিনটি। তবে গুরুতর।
আইনগত কারণ
১. মেসি বার্সেলোনা ছাড়ার ইচ্ছেটা ক্লাবের কাছে প্রকাশ করেছেন অনেক পরে, কিছুটা সময় নিয়ে। কারণটা হচ্ছে, মৌসুম শেষ করার ক্ষেত্রে বিলম্ব হওয়া। মূলতঃ তার ইচ্ছা-অনিচ্ছা প্রকাশ করার শেষ সময় ছিল ১০ জুন। যদিও এখন এই তারিখটা নিয়েই চলছে আইনী খেলা। এই তারিখটা নিয়ে বার্সা তার সঙ্গে যে আচরণ করছে, তাতে কিছুটা ক্ষুব্ধ হয়েছেন মেসি।
২. সর্বশেষ মেসির সঙ্গে বার্সার যে চুক্তি হয়েছে, সেখানে কিন্তু ৭০০ মিলিয়ন ইউরোর রিলিজ ক্লজ নির্ধারিত ছিল না।
৩. বার্সা প্রেসিডেন্ট হোসে মারিয়া বার্তেম্যু বেশ কয়েকবার কয়েকটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, মেসি যখনই চাইবেন, তখনই বার্সা ছেড়ে যেতে পারবেন।
খেলাধুলা সম্পর্কিত কারণ
৪. বার্সেলোনার সামনে যেসব প্রজেক্ট রয়েছে, সেগুলো খুব বেশি উচ্চাভিলাসি নয় এবং মেসিও বার্সার ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব বেশি শঙ্কিত। তিনি নিশ্চিত নন, কি হতে যাচ্ছে ভবিষ্যতে। এমনকি প্রায় সময়ই পুরো দল একা তার ওপর নির্ভর করে দলের জয়-পরাজয়ের ব্যপারে। যেটা কোনোভাবেই মানতে রাজি নন মেসি।
৫. কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দেকে বরখাস্ত করার সময় এবং আচরণ- কোনোটাই পছন্দ ছিল না মেসির। মূলতঃ তখন থেকেই মেসি বার্সেলোনায় নিজেকে অনিরাপদ ভাবতে শুরু করেন।
৬. বার্সেলোনা বোর্ডের সঙ্গেই মূলতঃ মেসির সমস্যার শুরু। গত কয়েকমাসে বার্সেলোনা এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেগুলোর সঙ্গে মোটেও একমত ছিলেন না মেসি। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্যান্ডাল এবং ইআরটিই নিয়ে বার্সার অবস্থানকেও মেসি সমর্থন করেননি।
৭. বার্সার অন্য অনেক কর্মকর্তার সঙ্গেই মেসির সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল। যেমন স্পোর্টিং ডিরেক্টর এরিক আবিদাল। যাকে অনেক খেলোয়াড়ই দায়ী করে থাকেন আর্নেস্তো ভালভার্দেকে বরখাস্ত করার জন্য।
৮. মেসি মনে করেন, বিভিন্ন বিষিয়ে তিনি কোনো মতামত দিলে সেগুলো শোনা হয় না ক্লাবে। বিশেষ করে বার্সার একাডেমিকে কিভাবে আরও ব্যবহারযোগ্য করা যায়, কিভাবে সেখান থেকে প্রতিভা তুলে আনা যায়, কিংবা ক্লাবের বিভিন্ন বিষয়ে কোনো মতামত দিলে সেগুলো আগ্রাহ্য করা হয়।
৯. মেসি মনে করেন, বার্সায় একটি যুগের সমাপ্তি হতে চলেছে। তিনি জেরার্ড পিকের সঙ্গে একমত যে, সিনিয়র খেলোয়াড়দের এখনই জায়গা ছেড়ে সরে দাঁড়ানো প্রয়োজন এবং সে জায়গায় নতুন রক্তের সঞ্চার করা প্রয়োজন।
১০. বার্সেলোনার সোশ্যাল মিডিয়া কেলেঙ্কারিতে টার্গেট করা হয় মেসি এবং তার পরিবারকে। ক্লাবের পক্ষ থেকে এসব ঘটার কারণে তিনি মানসিকভাবেও বেশ আহত হয়েছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।