জুমবাংলা ডেস্ক : জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম টিকটকের ব্যবসায়িক কার্যক্রম কানাডাতে বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। ফলে কানাডাতে নিজেদের ব্যবসা গুটিয়ে নিতে হতে পারে শর্ট-ফর্ম ভিডিও হোস্টিং প্ল্যাটফর্ম টিকটক-কে। তবে কানাডায় বসবাসকারীদের টিকটক ব্যবহারে কোনো বাঁধা নেই বলেও জানিয়েছে সরকার।
চীন-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন টিকটকের ৫৮ লাখ ব্যবহারকারী রয়েছে কানাডাতে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কী কারণে টিকটকের ব্যবসায়িক কার্যক্রম দেশটিতে বন্ধ করা হচ্ছে। মূলত জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে কানাডা সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
দেশটির উদ্ভাবন বিষয়ক মন্ত্রী ফান্সোয়া-ফিলিপ শ্যাম্পেইন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘কানাডাতে বাইটড্যান্স লিমিটেড তাঁদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে চাইছে টিকটক টেকনোলজি কানাডা ইনকর্পোরেশন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। এ সম্পর্কিত সুনির্দিষ্ট কিছু জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকির মোকাবেলায় সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে।’
কানাডাতে টিকটকের বিনিয়োগ ও ব্যবসা বিস্তারের পরিকল্পনাকে সন্দেহের চোখে দেখছে দেশটির সরকার। কানাডার আইন অনুযায়ী সরকার বিদেশী বিনিয়োগের কারণে জাতীয় নিরাপত্তাজনিত যেকোনো সম্ভাব্য ঝুঁকি মূল্যায়ন করার ক্ষমতা রাখে। টিকটকের ক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে।
গত বছর দেশটিতে টিকটকের বিনিয়োগ পরিকল্পনা পর্যালোচনা (রিভিউ) করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তবে কানাডার আইন অনুযায়ী সন্দেহজনক বিনিয়োগের বিস্তারিত বিবরণ ও তথ্য প্রকাশ করতে পারে না সরকার।
তাই এ বিষয়ে বিস্তারিত না জানালেও শ্যাম্পেইন বলেছেন, ‘কানাডার নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা বিভাগ এবং অন্যান্য সরকারি অংশীদারদের পরামর্শ অনুযায়ী এবং রিভিউ চলাকালীন সংগৃহীত তথ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
এদিকে টিকটক জানিয়েছে তাঁরা কানাডা সরকারের এই সিদ্ধান্তকে আদালতে চ্যালেঞ্জ জানাবে। টিকটকের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে প্ল্যাটফর্মটির মুখপাত্র বলেছেন, ‘কানাডায় টিকটকের অফিস বন্ধ করে দেওয়া এবং ভালো বেতনের শত শত স্থানীয় চাকরির সুযোগ নষ্ট করা কারও স্বার্থই রক্ষা করে না। আজকের এই ব্যবসা বন্ধের আদেশও ঠিক তাই করবে।’
কানাডা সরকার ইতোমধ্যেই সরকারী ডিভাইসে টিকটক অ্যাপের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। টিকটক অ্যাপ ব্যবহারের কারণে গোপনীয়তা ও নিরাপত্তাজনিত যে ঝুঁকি থাকে সেটা গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছে সরকার।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে টিকটককে আইনের দ্বারস্থ হতে হয়েছে আমেরিকাতেও। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রণীত একটি আইন বাতিলের জন্য গত মে মাসে আমেরিকার ফেডারেল আদালতে আবেদন জানায় টিকটক ও তাঁদের মালিক প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স। এপ্রিলে বাইডেন স্বাক্ষরিত এই আইন অনুযায়ী আগামী বছরের ১৯ জানুয়ারির মধ্যে টিকটকের মালিকানায় পরিবর্তন আনতে হবে, অন্যথায় দেশটিতে নিষিদ্ধ হতে পারে টিকটক।
টিকটক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চীন সরকারের সাথে শেয়ার করার অভিযোগ রয়েছে বাইটড্যান্সের বিরুদ্ধে। ফলে আমেরিকা সরকার চায় জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে চীন-ভিত্তিক মালিকানা না থাকুক। তবে টিকটককে নিষিদ্ধ করার কোনো ইচ্ছে নেই বাইডেন প্রশাসনের। সেজন্যই টিকটককে বিক্রি করে দেওয়ার জন্য বাইটড্যান্সকে আগামী ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে আমেরিকা।
উল্লেখ্য, সারা বিশ্বে টিকটক ব্যবহারকারী সংখ্যা ১০০ কোটি। এর মধ্যে ১৫ কোটি ব্যবহারকারী আমেরিকা থেকেই অ্যাক্সেস করেন প্ল্যাটফর্মটি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।