আন্তর্জাতিক ডেস্ক : একেক দেশে একেক ভাষায় কথা বলা হয়। আবার জাতিভেদেও নানা ভাষা রয়েছে পৃথিবীতে। তবে এসবের ভিড়ে এমন গ্রাম রয়েছে, যাদের ভাষা শুনলে আপনি অবাক হবেন। কারণ সেখানকার বাসিন্দারা কথা বলেন পাখির ভাষায়।
গ্রামটির নাম কুসকয়। তুরস্কের উত্তরাঞ্চলে পাহাড়ঘেরা এই গ্রামের বাসিন্দারা কথা বলেন সুরে সুরে, পাখির শিসে। তারা কোনো শব্দ ব্যবহার করেন না, একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করেন পাখির মতো শিস দিয়ে।
পাখির মতো শিস দিয়ে তৈরি এই ভাষার নাম ‘কুস দিলি’। শিস দিয়ে তৈরি বলেই একে বলা হয় ‘পাখির ভাষা’। আর এই গ্রামকে কুসকয় বা ‘পাখির গ্রাম’ বলা হয়।
গ্রামটিতে পাখির ভাষা বা কুস দিলি’র প্রচলন প্রায় ৫০০ বছর ধরে। গ্রামবাসী তাদের পূর্বসূরিদের থেকে এ ভাষা পেয়েছে বলে জানা যায়। গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা এ ভাষায় কথা বললেও, তাদের প্রধান ভাষা তুর্কি। তবে সেখানে পাহাড়ি এলাকা এবং বাসিন্দাদের বাড়িগুলোর দূরত্ব বেশি হওয়ায় তারা যোগাযোগের ক্ষেত্রে শিস ব্যবহার করেন।
তাদের দেওয়া শিস পাখির শিসের মতোই শোনায়। কুসকয় গ্রামের পাখির ভাষাকে ২০১৭ সালে ইউনেস্কো ‘ইনট্যানজিবল কালচারাল হেরিটেজ’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। ২০১৪ সাল থেকে সেখানকার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক বিদ্যালয় স্তরে পাখির ভাষা শেখানো শুরু করে।
১৯৯৭ সাল থেকে কুসকয় গ্রামে ‘কুস দিলি’ উৎসব আয়োজন করা হয়। উৎসবে শিস বাজানোর প্রতিযোগিতাও হয়। কুস দিলি শেখার জন্য গ্রামে নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানও হয়, যেখানে পর্যটক ও বহিরাগতদের পাখির ভাষা বা কুস দিলি শেখানো হয়। এই ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
২০১৯ সাল থেকে তুরস্কের গিরেসুন বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যটন অনুষদে কুস দিলি নামে একটি ঐচ্ছিক বিষয় পড়ানো হয়। ইউনেস্কোর তথ্যমতে, তুরস্কের এই গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ পাখির ভাষা অর্থাৎ শিস দিয়ে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করেন। সূত্র: বিবিসি, নিউইয়র্ক টাইমস।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।