বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : ধরুন একটি মিসাইল তার লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আর সেটিতে আঘাত করতে না পারলে নিজেই নিজেই ফিরে আসছে। বলা হচ্ছিল, মার্কিন কোম্পানি অ্যান্ডুরিলের তৈরি একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সম্পন্ন ড্রোন রোডরানারের কথা।
এই ড্রোনটি তৈরি করেছেন পালমার লাকি। আলোচনা তৈরিতে পটু পালমার ২০১৪ সালে অকুলাস নামের একটি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেট তৈরি করেন। পরে তিনি এ প্রযুক্তি ফেসবুকের কাছে ২ বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে বিক্রি করে দেন। ২০১৭ সালে তিনি অ্যান্ডুরিল নামের একটি কোম্পানি খোলেন এবং অস্ত্র তৈরির দিকে মনযোগী হন। ওই বছরের ২৯ নভেম্বর লাকি জানান, তিনি নতুন ঘরানার একটি অস্ত্র বানাবেন, যা এর আগে কখনও দেখা যায়নি। এর কয়েকদিন পরই তিনি রোডরানার নামের একটি মিসাইল বহনকারী ড্রোনের কথা জানান।
রোডরানারের মিশনের ওপর নির্ভর করে এর কার্যক্ষমতা পরিবর্তন করা যেতে পারে। এতে সেন্সর লাগিয়ে নজরদারি করা যেতে পারে। তবে কোম্পানিটি রোডরানার-এমের প্রতি জোর দিয়েছে। এটি ড্রোন ধ্বংসের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এটি পুনরায় ব্যবহারযোগ্যও । আমেরিকার প্যাট্রিয়ট এবং ইসরায়েলের আয়রন ডোমসহ বেশিরভাগ বায়ু-প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, একটি রকেট ধ্বংস করতে বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এতে অব্যবহৃতগুলো নষ্ট হয়ে যায়। রোডরানারগুলো চলাচলের সময় একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। যদি একটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত না করতে পারে তাহলে বাকিগুলো ফিরে আসে।
রোডরানার তৈরিকারী প্রতিষ্ঠান অ্যান্ডুরিলের দাবি, রোডরানার প্রতিযোগী অস্ত্রের থেকে অনেক উন্নত। এর টেক অফ গতিও অনেক বেশি। এছাড়া দশগুণ রেঞ্জসহ এর একটি বড় পেলোড রয়েছে। অ্যান্ডুরিল বস ব্রায়ান শিম্পফ বলেছেন, রোডরানার ভবিষ্যতে আসা অত্যাধুনিক ড্রোনগুলোর মোকাবিলা করতে পারবে।
ইসরায়েলের আয়রন ডোম ছোট রকেট ঠেকাতে পারে। প্যাট্রিয়ট বড় ক্ষেপণাস্ত্র ও প্ল্যান ঠেকাতে পারে। পেন্টাগন জানিয়েছে, গ্রুপ ওয়ান এবং টু ড্রোনের জন্য কায়োটি তৈরি করা হয়েছে, যার ওজন ২৫ কেজির কম এবং সাড়ে তিন হাজার ফুট নিচে ওড়ে। তবে রোডরানার গ্রুপ থ্রি ড্রোনের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যার ওজন প্রায় ৬০০ কেজি এবং ১৮ হাজার ফুট পর্যন্ত উড়তে পারে। উদাহরণ হিসেবে ইরানি শাহেদ-১৩৬ ড্রোনের কথা বলা যায় যা রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহার করছে।
কায়োটির একটি ইউনিটের দাম ১ লাখ ডলার। আর রোডরানারের দাম ছয় সংখ্যার নিচে। এরইমধ্যে রোডরানার কিনেছে আমেরিকার বিশেষ বাহিনী। অ্যান্ডুরিল আশা করছে, ভবিষ্যতে উৎপাদন বাড়লে এর দাম আরও কমবে।
তথ্যসূত্র: ব্লুমবার্গ, ইকোনমিস্ট, লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।