ভারতের অন্যতম প্রভাবশালী এবং সম্মানিত শিল্পপতি রতন টাটার জীবন যেন এক অনন্য অধ্যায়। ব্যবসা, মানবতা ও নৈতিকতার এক অদ্ভুত মেলবন্ধনের নাম রতন টাটা। টাটা গোষ্ঠীর প্রাক্তন চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি শুধু ভারতের নয়, বিশ্বের অন্যতম সজ্জন ও দূরদর্শী কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব। অথচ এই অসাধারণ মানুষের জীবনে ছিল না কোনও বিবাহিত সম্পর্ক। জীবনের ৮৬টি বসন্ত একা কাটালেও প্রেম তাঁর জীবনে এসেছিল একাধিকবার। নানা সাক্ষাৎকারে নিজেই বলেছেন, বারবার বিয়ের কথা উঠলেও শেষপর্যন্ত তা ভেঙে যায়।
কিন্তু একাকীত্ব মানেই কি হৃদয় ছিল শূন্য? একেবারেই না। জীবন তাঁকে প্রেমের স্বাদ দিয়েছিল, এমনকি বলিউডের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও গড়ে উঠেছিল ভালোবাসার বাঁধনে।
রতন টাটা একাধিকবার সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তাঁর জীবনে একাধিকবার বিয়ে ঠিক হলেও শেষ মুহূর্তে তা ভেঙে যায়। কিছুটা পারিবারিক কারণ, কিছুটা সামাজিক চাপ আর কিছুটা তাঁর কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা—সব মিলিয়ে ব্যক্তিগত জীবনে একাকীত্বকেই বেছে নিতে বাধ্য হন তিনি।
তবে তাঁর জীবনের একটি অধ্যায় বহু মানুষকে কৌতূহলী করে তুলেছে — বলিউডের এক লাস্যময়ী অভিনেত্রীর সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক।
কে সেই রহস্যময়ী প্রেমিকা?
বলিউডের নামজাদা অভিনেত্রী, যাঁর সঙ্গে রতন টাটার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, তিনি আর কেউ নন—সিমি গারেওয়াল।
১৯৪৪ সালের ১৭ অক্টোবর পাঞ্জাবের লুধিয়ানায় এক গারেওয়াল জাট-শিখ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন সিমি। শৈশবেই তিনি লন্ডনে পাড়ি জমান, এবং সেখানে তাঁর সাংস্কৃতিক বিকাশ ঘটে।
অভিনয়জীবন শুরু করেন ‘টারজান গোজ টু ইন্ডিয়া’ ছবির মাধ্যমে। তাঁর রূপ, ব্যক্তিত্ব ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা তাঁকে দ্রুত জনপ্রিয় করে তোলে। এরপর সত্যজিত রায়ের ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’, রাজ কাপুরের ‘মেরা নাম জোকার’, এবং আরও অনেক বলিউড ক্লাসিক ছবিতে অভিনয় করে নিজের জায়গা পাকা করে নেন।
সিমি ছিলেন ঠিক ততটাই আধুনিক, স্বাধীনচেতা ও আত্মবিশ্বাসী, যতটা রতন টাটা নিজেও। এই দু’জনের মধ্যকার সম্পর্ক ছিল গোপন নয়—বলিউড মহল থেকে কর্পোরেট অঙ্গন পর্যন্ত এই প্রেমের খবর ছিল আলোচনার বিষয়।
এই প্রশ্নের কোনও নির্দিষ্ট উত্তর আজও মেলেনি। রতন টাটাও কখনও এই সম্পর্ক নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি, যেমনটা তাঁর স্বভাবই। তবে সিমি গারেওয়াল এক সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছিলেন— “রতন আর আমার এক পুরনো সম্পর্ক রয়েছে। ও খুব ভালো মানুষ।”
ধারণা করা হয়, সময় এবং পরিস্থিতি তাঁদের আলাদা করে দেয়। একদিকে সিমি তখন তাঁর অভিনয়জীবনের শিখরে, অন্যদিকে রতন টাটার সামনে দায়িত্বের পাহাড়। সমাজের কাঠামো, পারিবারিক চাপ কিংবা একে অপরের জীবনের ভিন্ন পথ—এই সব কিছু হয়তো সেই সম্পর্কে দেওয়াল তুলে দেয়।
https://inews.zoombangla.com/%e0%a6%b6%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%81%e0%a6%a4%e0%a6%bf-%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%a8-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a7%87-%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a7%87/
৮৬ বছর বয়স পর্যন্ত বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ না হলেও, রতন টাটা কখনও একাকীত্ব নিয়ে হতাশা বা হতভম্ব হননি। বরং জীবনের প্রতিটি অধ্যায় তিনি ব্যয় করেছেন সমাজের কল্যাণে। তাঁর তৈরি উদ্যোগ, দানশীলতা, এবং পশুপ্রেম আজও অনুপ্রেরণা দেয় নতুন প্রজন্মকে।
তাঁর জীবনে কেউ স্থায়ী সঙ্গী না হলেও, তাঁর কাজ ও নীতিগত অবস্থান তাঁকে এক অনন্য মানবিকতার প্রতীক করে তুলেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।