জুমবাংলা ডেস্ক: ভারত থেকে বন্ধ রয়েছে পেঁয়াজ আমদানি। এ সুযোগে বাজারে হু হু করে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। এরই মধ্যে পেঁয়াজ আমদানির আভাস পাওয়ায় অবশেষে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর ও দিনাজপুর শহরে একদিনের ব্যবধানেই কেজিতে ৫ টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম।
এদিকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির জন্য প্রস্তুত রয়েছেন হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে গত ১৫ মার্চ থেকে বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করে সরকার। ফলে হিলি স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দর দিয়ে বন্ধ হয়ে যায় বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি। নির্ভরশীল হয়ে ওঠে দেশীয় পেঁয়াজের ওপর। কৃষকদের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী ও মজুদদারদের হাতে চলে যাওয়ায় বাজারে ইচ্ছামতো দাম বাড়াতে শুরু করে ব্যবসায়ীরা। ভরা মৌসুমে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২৫ টাকা দরে বিক্রি হলেও তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। বাজারে অস্বাভাবিকভাবে দাম বৃদ্ধি শুরু হওয়ায় রবিবার কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার ঘোষণা দেন, এভাবে দাম বাড়তে থাকলে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে।
এ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার থেকেই বাজারে কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের পাইকারি বাজারে শনিবার প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হলেও একদিনের ব্যবধানে রবিবার বিক্রি হয় ৬০ টাকা কেজি দরে।
রবিবার বিকালে হিলি স্থলবন্দরের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা আবু তাহের হোসেন বলেন, লোকমুখে শুনছি-ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি হবে। এমন খবরে মোকামে দাম কমেছে। আজকে (রবিবার) কেজিতে ৫ টাকা কমে দেশীয় পেঁয়াজ বিক্রয় হচ্ছে ৬০ টাকায়; যা শনিবার বিক্রয় করেছি ৬৫ টাকা কেজি দরে।
দিনাজপুর শহরের বাহাদুরবাজার এলাকার পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা মাজেদুর রহমান জানান, তিনি রবিবার নাটোর থেকে এক ট্রাক পেঁয়াজ নিয়ে এসেছেন। দাম কমেছে। শনিবার প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা দরে বিক্রি করলেও রবিবার প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন ৬০ টাকা দরে। সোমবার দাম আরও কমতে পারে বলে জানান তিনি।
বাহাদুরবাজারের খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকা থেকে নেমে রবিবার বিক্রি হয় ৬০ টাকায়।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুনর রশিদ জানান, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির ব্যাপারে আলাপ আলোচনা চলছে। হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকরাও প্রস্তুত আছেন। অনুমতি পেলেই ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে পেঁয়াজের পাশাপাশি হিলি স্থলবন্দরে কমতে শুরু করেছে কাঁচামরিচের দাম। একদিনের ব্যবধানে হিলিতে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম কমেছে ২০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এক সপ্তাহ আগেও বাজারে কাঁচামরিচের সরবরাহ কম থাকায় কাঁচামরিচ পাইকারি বাজারে বিক্রি হয়েছিল ১২০ টাকা কেজি দরে। রবিবার সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় কেজিতে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ফরহাদ নামে একজন ক্রেতা বলেন, শনিবার মরিচ ১২০ টাকা কেজি কিনেছি। রবিবার হাটবার ১০০ টাকা কেজিতে কিনলাম।
কাঁচামরিচ বিক্রেতা বিপ্লব শেখ বলেন, কাঁচা পণ্য সকালে বাড়ে বিকালে কমে। আমরা বেশি দামে কিনলেই বেশি বিক্রি করি, আবার কম দামে কিনলে কম দামেই বিক্রি করে থাকি। সরবরাহ বেশি থাকলে দাম কিছুটা কম হয়।
তিনি বলেন, বগুড়া-পঞ্চগড়, ডোমার, নীলফামারীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কাঁচামরিচের আবাদ বাড়লেও তীব্র তাপদাহের কারণে কাঁচামরিচের সরবরাহ কম ছিল। সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় কাঁচামরিচের দাম কমতে শুরু করছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, রবিবার সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ সংক্রান্ত এক সভায় শিগগিরই পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার। তিনি বলেছেন, উৎপাদন ও মজুত বিবেচনায় দেশে এই মুহূর্তে পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। অথচ বাজারে দাম কিছুটা বেশি। কৃষি মন্ত্রণালয় বাজার পর্যবেক্ষণ করছে। দাম বাড়তে থাকলে শিগগিরই পেঁয়াজ আমদানির বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।