জুমবাংলা ডেস্ক : রংপুরে গত বছর উদ্ভাবিত ‘ব্রি-১০৩’ ধান উৎপাদনে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন কৃষিবিজ্ঞানীরা। এ বছরই রংপুর বিভাগে ১০০ একর জমিতে এই ধান চাষে শতভাগ সাফল্য এনেছেন তারা। গুণে-মানে ঠিক থাকায় এবং উচ্চ ফলনশীল হওয়ায় এ ধানে অপার সম্ভাবনা দেখছেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয় ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২২ সালে প্রথম উদ্ভাবন করা হয় ‘ব্রি ধান ১০৩’। জাতটিতে আধুনিক উফশী ধানের সকল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এ জাতের কান্ড শক্ত, সহজে হেলে পড়ে না এবং ধান পাকার পরও গাছ সবুজ থাকে। গাছের গড় উচ্চতা ১২৫ সেন্টিমিটার, চিকন ও সাদা । জাতটির ফসল কর্তন করে ১৪ ভাগ আর্দ্রতায় ৩৩ শতাংশে ২২ মণ বা ৬.৬৮ টন পাওয়া যায় এবং এ জাতের জীবনকাল ছিল ১৩০ দিন।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ে এ জাতের ধানের ফসল কর্তন উৎসবের আয়োজন করে। ওই উৎসবে কৃষক ও কৃষির সঙ্গে সম্পর্কিত প্রায় ১০০ জন অংশগ্রহণকারী ছিলেন।
ব্রি’র রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রিন্সিপাল বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ রকিবুল হাসান জানান, বাংলাদেশে পরিবর্তিতে জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলা করে ধানের ফলন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশে ধানের চাহিদা মেটানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ ছাড়া কৃষি জমির পরিমাণ, জমির উর্বরতা, ভূগর্ভস্থ পানিসহ প্রাকৃতিক সম্পদ এবং কৃষি শ্রমিক ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। ধান উৎপাদনে সীমিত সম্পদ ব্যবহার করে উচ্চ ফলনশীল আধুনিক জাত ও টেকসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং সম্প্রসারণের মাধ্যমে ফলন বাড়ানো তথা খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ করা কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর অন্যতম লক্ষ্য।
তিনি বলেন, কৃষক পর্যায়ে নতুন এ জাতটি ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণের মাধ্যমে রংপুর অঞ্চলের ‘ব্রি ধান১০৩’ আবাদ বৃদ্ধির অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
রংপুরের সদরের মমিনপুরের কৃষক সামিউল ইসলাম বলেন, ‘আমি এ ধান প্রথম আবাদ করেছি। অন্য ধানও আবাদ করেছি। কিন্তু ‘ব্রি ধান-১০৩’ তে বেশি ফল হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এ ধানে সার কিটনাশক কম লাগে, পোকা মাকড়ও কম ধরে। সেই হিসেবে অন্যান্য ধানের তুলনায় ভালো মনে হচ্ছে।’
বদরগঞ্জের কৃষক সাহেদ আলী বলেন, ‘কৃষি স্যার এসে এ ধানের সংবাদ দেয়। পরে আমি বীজ সংগ্রহ করে ধান লাগাই। স্যারের বলেছিলেন ১৩০ দিনের দিনের মধ্যে ধান উঠবে ঠিক ওই সময়ে ধান উঠছে। ধানের দানাও ভালো, রঙও ভালো। মনে হচ্ছে ভালো হবে। এবার প্রথম আবাদ করছি, আর দুই চার বছর গেলে ভালো ধাারনা পাওয়া যাবে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ আফতাব হোসেন বলেন, ‘এ ধানে অনেক ভালো মনে হচ্ছে, চালও চিকন। মাঠ পর্যায়ে বেশ আলোচিত হয়েছে। কৃষকরা শুনে খুশি হচ্ছেন। আমরা মনে করছি, এ ধান কৃষক পর্যায়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করবে এবং চাষিরা এ ধান চাষে আগ্রহ প্রকাশ করবেন।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।