রশ্মিকা মন্দানা
(জন্ম: ৫ এপ্রিল ১৯৯৬) একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী এবং মডেল, রশ্মিকা মন্দানা মূলত তেলুগু এবং কন্নড় চলচ্চিত্রে অভিনয় করে থাকেন। গণমাধ্যম এবং কন্নড় চলচ্চিত্র শিল্পে তিনি ‘কর্ণাটক ক্রাশ’ নামে পরিচিত। খুবই স্বল্পসংখ্যক অভিনেত্রীর মধ্যে রশ্মিকা অন্যতম, যিনি অল্প সময়ের মাঝে কোন চলচ্চিত্রে ১ বিলিয়ন রুপি আয় করেছিলেন। তেলুগু এবং কন্নড় চলচ্চিত্র শিল্পে তিনি অন্যতম জনপ্রিয় এবং সর্বাধিক বেতনের একজন অভিনেত্রী রাশমিকা।
রশ্মিকা ২০১৬ সালের কন্নড় চলচ্চিত্র কিরিক পার্টি-এর মাধ্যমে অভিনয়ে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। ২০১৭ সালে তিনি চমক এবং আঞ্জানী পুত্রা নামক দুটি বাণিজ্যিকভাবে সফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। পরে তিনি ২০১৮ সালের প্রণয়ধর্মী চলচ্চিত্র চালো দিয়ে তেলুগু চলচ্চিত্রে অভিষেক করেছিলেন। একই বছর তিনি গীতা গোবিন্দম-এ অভিনয় করেছিলেন, যা তেলুগু চলচ্চিত্রে সর্বাধিক মুনাফা অর্জনকারীদের তালিকায় স্থান করে নেয় এবং তিনি ব্যাপক পরিচিতি অর্জন করতে সক্ষম হন। তার তৃতীয় তেলুগু প্রকল্পটি ছিল দেবদাস নামে একটি তারকাবহুল বড় বাজেটের চলচ্চিত্র। কন্নড় চলচ্চিত্র শিল্পে প্রথম হ্যাট্রিক-হিট করার পরে তেলুগু চলচ্চিত্র শিল্পেও একই বছরে পরপর তৃতীয় সফল চলচ্চিত্র হিসাবে এটি চিহ্নিত হয় এবং তেলুগু ও কন্নড় চলচ্চিত্রে মুখ্য অভিনেত্রী হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
রাশমিকা মন্দানার বাণিজ্যিকভাবে সফল চলচ্চিত্র, যেমন: কিরিক পার্টি (২০১৬), আঞ্জানী পুত্রা (২০১৭), চমক (২০১৭), চালো (২০১৮), গীতা গোবিন্দম (২০১৮), যাজামানা (২০১৯), সারিলেরু নিকেভ্যারু (২০২০) এবং ভীষ্ম (২০২০)। চলচ্চিত্রে একের পর এক সাফল্য তাকে দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পে অন্যতম সর্বাধিক চাহিদাসম্পন্ন অভিনেত্রী হিসেবে গড়ে তুলেছে।
রশ্মিকা মন্দানা প্রারম্ভিক জীবন
রশ্মিকা মন্দানা কর্ণাটকের কোড়গু জেলার একটি শহর বিরাজপেটে ১৯৯৬ সালের ৫ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মহীশূর বাণিজ্য ও কলা ইনস্টিটিউট-এ প্রাক-বিশ্ববিদ্যালয় কোর্স করার আগে তিনি কোড়গু পাবলিক স্কুল (সিওপিএস), কোড়গুতে পড়াশোনা করেছিলেন। তিনি এমএস রামাইয়া কলা, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য কলেজ থেকে মনোবিজ্ঞান, সাংবাদিকতা এবং ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। পড়াশুনার পাশাপাশি তিনি মডেলিং করছিলেন এবং বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনেও কাজ করেছিলেন।
রশ্মিকার কর্মজীবন
রশ্মিকা ২০১২ সালে মডেলিং শুরু করেছিলেন। একই বছর তিনি ক্লিন অ্যান্ড ক্লিয়ার ফ্রেশ ফেস অব ইন্ডিয়া খেতাব অর্জন করেছিলেন এবং ক্লিন অ্যান্ড ক্লিয়ার এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে যুক্ত হয়েছিলেন। তারপরে লামোডে বেঙ্গালুরুর টপ মডেল হান্টে ২০১৩-তে তিনি টিভিসির খেতাব অর্জন করেছিলেন। প্রতিযোগিতায় তার চিত্রগুলি কিরিক পার্টি-এর নির্মাতাদের মুগ্ধ করেছিল, ফলস্বরূপ ২০১৪ সালের প্রথম দিকে চলচ্চিত্রটিতে রশ্মিকা অভিনেত্রীর ভূমিকা পালন করেছিলেন।
রাশমিকা মন্দানার ব্যক্তিগত জীবন
রাশমিকা অভিনেতা রক্ষিত শেঠির সাথে বাগদান করেছিলেন। তারা কিরিক পার্টি চলচ্চিত্রটি নির্মাণের সময় ডেটিং শুরু করেছিলেন এবং ২০১৭ সালের ৩ জুলাই রশ্মিকার নিজ শহর বিরাজপেটে একটি ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে তাদের বাগদান সম্পন্ন হয়েছিল। কিন্তু এই যুগল পারস্পরিকভাবে অসামঞ্জস্যতার বিষয়গুলি উল্লেখ করে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে তাদের সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল।
রশ্মিকার মন্দানার চলচ্চিত্রের তালিকা
রশ্মিকা কন্নড় ভাষায় ২০১৬ সালে কিরিক পার্টি, ২০১৭ সালে চমক ও অজ্ঞানী পুত্র এবং ২০২০ সালে পগারু (ডাবিং চলছে) সিনেমায় অভিনয় করেন। তার অভিনীত তেলেগু ছবিগুলো হলো- গীতা গোবিন্দম, দেবদাস, যাজমানা, ডিয়ার কমরেড, সারিলেরু নিকেভ্যারু, ভীষ্ম, পুষ্প (নির্মানাধীন)। এছাড়াও ২০২০সালে সুলতান সিনেমার মাধ্যমে তার তামিল চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়।
রাশমিকা মন্দানার পুরষ্কার
রশ্মিকা এখন পর্যন্ত মোট ১৩ বিভিন্ন পুরুস্কারের জন্য মনোনয়ন পান এবং ৮ টিতে বিজয়ী হন। রাশমিকার বিজয়ী পুরস্কারগুলো হলো- শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে ভারতীয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দক্ষিণ, লাভ লাভিকে পাঠক পছন্দ পুরস্কার, জি কন্নড় হেমমেয়া কন্নদাথি পুরস্কার, ফিল্মিবিট পুরস্কার, জি সিনে পুরস্কার, শ্রী কালা সাদু তেলুগু পুরস্কার, জেএফডব্লিউ পুরস্কার, ফিল্মফেয়ার পুরস্কার (সমালোচক দ্বারা নির্বাচিত), বিহাইন্ডউডস স্বর্ণ পদক (সমালোচক দ্বারা নির্বাচিত) ইত্যাদি।
‘মোস্ট ইনফ্লুয়েন্সিয়াল অ্যাক্টর’-এর তালিকার শীর্ষে রশ্মিকা মান্দানা
তারকাদের পোস্টে গড় লাইক, গড় কমেন্ট, এনগেজমেন্ট রেট, গড় ভিডিও ভিউ এবং ফলোয়ারের সংখ্যার ওপর নির্ভর করেই তালিকা তৈরি হয়েছে। এই প্রত্যেকটি পরিসংখ্যান মোট দশের বিচারে বিবেচিত হয়।
আপাতত বেশ ব্যস্ত দক্ষিণী অভিনেত্রী রশ্মিকা মান্দানা। বিভিন্ন ভাষায় একের পর এক ছবি মুক্তির অপেক্ষায়, কিছু মুক্তি পেয়েছে ইতিমধ্যেই।
খুব শীঘ্রই বলিউডেও পা রাখতে চলেছেন রাশমিকা। শেষ হয়েছে শ্যুটিংও। ইতিমধ্যেই তাঁর মুকুটে যোগ হল আরও এক নতুন পালক। ফোর্বস ইন্ডিয়ার সবচেয়ে বেশি ‘ইনফ্লুয়েন্সিয়াল’ অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মধ্যে রশ্মিকা শীর্ষে রয়েছেন। পিছনে ফেলেছেন সামান্থা প্রভু, সাই পল্লবী ও বিজয় দেবেরাকোন্ডাকেও।
২০১৬ সালে কন্নড় ছবির মাধ্যমে অভিনয় জগতে পা রাখার সময় থেকে সোশ্যাল মিডিয়া পেজে ক্রমবর্ধমান ফলোয়ার সংখ্যা রশ্মিকার। ‘অর্জুন রেড্ডি’ ছবি খ্যাত বিজয় দেবেরাকোন্ডা রয়েছেন দ্বিতীয় স্থানে। তারপরেই রয়েছেন কন্নড় ছবির অন্যতম হ্যান্ডসম অভিনেতা যশ। চতুর্থ স্থানে সামান্থা রুথ প্রভু এবং তারপর তালিকায় রয়েছেন অল্লু অর্জুন।
তারকাদের পোস্টে গড় লাইক, গড় কমেন্ট, এনগেজমেন্ট রেট, গড় ভিডিও ভিউ এবং ফলোয়ারের সংখ্যার ওপর নির্ভর করেই তালিকা তৈরি হয়েছে। এই প্রত্যেকটি পরিসংখ্যান মোট দশের বিচারে বিবেচিত হয়। রশ্মিকার সেখানে স্কোর ৯.৮৮, বিজয় দেবেরাকোন্ডার স্কোর ৯.৬৭, যশের স্কোর, ৯.৫৪। সামান্থা পেয়েছেন ৯.৪৯, অল্লু অর্জুন পেয়েছেন ৯.৪৬।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।