বহির্জাগতিক প্রাণ বা এলিয়েনদের কথা শুনলে একই সঙ্গে হাস্যকর ও অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। তবে কোনো কিছু আসলেই সম্ভব কি অসম্ভব, সেটা আগে থেকে বলার কি আদৌ কোনো উপায় আছে? পৃথিবী যে সূর্যের চারদিকে ঘোরে এবং এটি যে খুবই নগণ্য এক গ্রহ, এ কথা ষোড়শ শতকের কাউকে বললে তিনি কি তা বিশ্বাস করতেন?
এই নগণ্য গ্রহের এক কোণে বসে, হিসাব কষে নক্ষত্র থেকে ছায়াপথ—সবকিছুর গতি-প্রকৃতি বের করে ফেলা সম্ভব—কে ভাবতে পেরেছিল? তার ওপর আমাদের এত দিনের চেনাজানা ডিএনএতে নাইট্রোজেন বেস (ক্ষার) ছিল কেবল চারটি। গত ২২ ফেব্রুয়ারির সায়েন্স ম্যাগাজিনে প্রকাশিত একটি পেপার থেকে আমরা এখন জানি, বিজ্ঞানীরা আটটি নাইট্রোজেন বেসযুক্ত কৃত্রিম ডিএনএ তৈরি করেছেন। যেটি সম্পূর্ণ স্থিতিশীল এবং পুরোপুরি প্রাকৃতিক ডিএনএর মতোই আচরণ করে!
বহির্জাগতিক প্রাণ নিয়ে এই চিন্তাভাবনা কিন্তু কোনো সাম্প্রতিক ঘটনা নয়। সেই ষোড়শ শতকেই জিওর্দানো ব্রুনো বহির্জাগতিক প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন।
কিন্তু কথা হলো, বহির্জাগতিক প্রাণ যদি থাকে, সেটা আমরা বুঝব কীভাবে? কীভাবে যোগাযোগ করব তাদের সঙ্গে? এই যোগাযোগ আসলে দুভাবে হতে পারে। আমাদের পাঠানো বার্তার জবাবে সাড়া দিতে পারে অন্য ভুবনের কেউ। অথবা তারা নিজে থেকেই যোগাযোগ করতে পারে।
বেতার তরঙ্গ আবিষ্কৃত হওয়ার কিছুকাল পর থেকেই মানুষ বহির্জাগতিক প্রাণের সঙ্গে যোগাযোগের উদ্দেশ্যে মহাকাশে সিগন্যাল পাঠিয়ে যাচ্ছে। এই তরঙ্গের শক্তি প্রচণ্ড। দূরপাল্লায় তথ্য পাঠানোর জন্য আমাদের কাছে বেতার তরঙ্গের চেয়ে ভালো আর কিছু নেই। আলোর বেগে মহাশূন্যের মধ্যে দিয়ে ছুটে যাওয়ার সময় বহির্জাগতিক কোনো প্রাণের হাতে পড়তে পারে এই সিগন্যাল।
তবে সেই প্রাণ আদৌ বুদ্ধিমান হবে কি না, আমাদের সিগন্যালের মর্ম বুঝতে পারবে কি না, এটা একটা বড় প্রশ্ন। তা ছাড়া অনেকটা পথ পাড়ি দেওয়ার ফলে বেতার তরঙ্গ শক্তি হারিয়ে দুর্বল হয়ে পড়বে। তবে বহির্জাগতিক সভ্যতা যদি যথেষ্ট উন্নত হয় এবং মহাকর্ষীয় লেন্স ব্যবহার করতে জানে, তাহলে আশা করা যায় তারা সিগন্যালটি ধরতে পারবে। মহাকর্ষীয় লেন্স আসলে গ্রহ, উপগ্রহ বা গ্যালাক্সি ক্লাস্টারের মতো ভারী কোনো বস্তু থেকে উৎপন্ন হয়।
এসব বস্তু নিজেদের বিপুল ভরের জন্য সৃষ্ট মহাকর্ষ ব্যবহার করে আলো থেকে শুরু করে বেতার তরঙ্গ—যেকোনো তড়িৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গকে বেঁকে ফেলতে পারে এরা। এ সময় এরা তরঙ্গটিকে কিছুটা বিবর্ধিত করে দিতে পারে। ফলে তরঙ্গটি কিছুটা শক্তি হারালেও, মহাকর্ষীয় লেন্স ব্যবহার করে এ ধরনের সিগন্যাল রিসিভ করা এবং প্রয়োজনীয় তথ্য উদ্ধার করা সম্ভব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।