জুমবাংলা ডেস্ক : পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিতে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি শেষে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবী মানুষ। পাশাপাশি ছুটি থাকায় এখনও ঢাকা ছাড়ছেন অনেকে।
বুধবার (১১ জুন) কমলাপুর রেল স্টেশনে সকাল থেকেই নিয়মিত বিরতিতে ছেড়ে যাচ্ছে ট্রেন।
যাওয়া-আসা দুই পথের যাত্রীদেরই চাপ ছিলো প্রায় সমান। সরকারি ছুটির হিসেবে বাকি রয়েছে আরও দিন তিনেক। এই সময়টা নিজেদের মতো করে কাটাতে ঢাকা ছাড়ছেন অনেকেই।
অনেকে ঢাকায় ঈদ উদযাপন করতে এসেছিলেন, তারাও ফিরে যাচ্ছেন নিজের কর্মস্থলে। যাত্রীরা জানান, ঈদের পরপর যাত্রাপথে অনেকটা স্বস্তি মেলে, তাই ঈদের পরেই যাচ্ছেন বাড়িতে।
সরেজমিন দেখা গেছে, সকাল থেকেই ঢাকায় এসে পৌঁছেছে জাহানাবাদ এক্সপ্রেস, মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস, যমুনা এক্সপ্রেস, এগারসিন্ধু এক্সপ্রেস, রংপুর এক্সপ্রেস, একতা এক্সপ্রেস, পর্যটন এক্সপ্রেসসহ প্রায় ১৫টি ট্রেন। এসব ট্রেনে বিগত সময়ের মতো যাত্রীদের ভিড় দেখা যায়নি। প্রায় সব ট্রেনেই নির্ধারিত সময়ে অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ ছাড়াই ঢাকা এসে পৌঁছেছে।
এদিকে রাজশাহী থেকে খুলনা অভিমুখে ছেড়ে আসা সাগরদাঁড়ি ট্রেন ও ঢাকাগামী মধুমতি, বনলতা, সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস অবরোধের মুখে প্রায় আড়াই ঘণ্টা থেমে থাকে। ফলে সারাদেশের সঙ্গে রাজশাহীর ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ ছিল কিছুক্ষণ। তবে এ ঘটনায় ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে ঢাকা রেলওয়ে।
দেখা গেছে, আজ সকাল থেকে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাচ্ছে— রংপুর এক্সপ্রেস, নারায়ণগঞ্জ কমিউটার, তিস্তা ঈদ স্পেশাল, তিস্তা কমিউটারসহ বেশ কিছু ট্রেন। ঈদ শেষ করে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের পাশাপাশি গ্রামেও যাচ্ছেন অনেকেই। পরিবার পরিজন নিয়ে যারা ঈদের ছুটি পাননি তারা এখন গ্রামের উদ্দেশ্য পাড়ি জমাচ্ছেন। অনেকে আবার জরুরি কাজেও ঢাকা ছাড়ছেন।
সকাল ৯ টা ৪৫ মিনিটে কমলাপুরে পৌঁছানো জাহানাবাদ এক্সপ্রেসের যাত্রী মীর মো. আমিনুল বলেন, আসতে কোনো সমস্যা নেই। প্রতিবছর তো দেখি মাথার কাছে দশজন স্টান্ডিং টিকেটে দাঁড়িয়ে থাকে। এবার এমন সমস্যা হয়নি। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ একটা ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। এ কারণেই ছুটি শেষ হওয়ার আগেই স্ত্রী এবং সন্তানসহ ঢাকায় চলে এসেছি।
একই ট্রেনের আরেক যাত্রী মিজানুর রহমান বলেন, আসতে কোনো সমস্যা হয়নি। নির্ধারিত সময়ে ট্রেন ছেড়েছিল। প্রতিবারই তো ভোগান্তি হয়। এবার ভোগান্তি নেই বললেই চলে। তবে শুক্রবার এবং শনিবার মনে হয় সবাই ঢাকায় আসবে। সরকারি অফিস আদালত খুলেনি বলেই চাপ কিছুটা কম।
সকাল ১০ টায় জামালপুরগামী ট্রেন জামালপুর এক্সপ্রেসের যাত্রী ফজলে রাব্বী বলেন, আমি একটি বেসরকারি আইটি ফার্মে কাজ করি। ঈদে ছুটি পাইনি বলে গ্রামে যেতে পারিনি। ঈদে সহকর্মীরা ছুটি শেষ করে ঢাকায় আসায় আজ থেকে ছুটি পেলাম। স্ত্রী সন্তানরা গ্রামেই আছে। আমি এখন ওদের সঙ্গে যোগ দেব। প্রতি বছর সবাই একসঙ্গে হওয়ার আনন্দই আলাদা।
এদিকে ঈদ যাত্রা নিয়ে স্টেশন ম্যানেজার মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, কোনো ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় নেই। সবকিছু ভালোভাবেই চলছে। শুধু রাজশাহী রুটের তিনটি ট্রেনে আন্দোলনের কারণে বিলম্ব হয়েছে। বাকি সব রুটেই ট্রেন যথাসময়ে এসেছে। রাজশাহীর ট্রেনে যে সমস্যা হয়েছিল সেটাও সমাধান হয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, সকাল থেকে ঢাকায় ১৫টি ট্রেন এসেছে। ঢাকা থেকে ছেড়ে গেছে ১০টি ট্রেন। রাজশাহী থেকে যে ট্রেন কিছুটা বিলম্ব হয়েছে সেটা ঢাকা থেকে নির্ধারিত সময়েই ছেড়ে যাবে।
সাজেদুল ইসলাম বলেন, ঈদ ফেরত যাত্রায় যাত্রীর চাপ কম এখনো। শেষের দিকে চাপ দেখা দিতে পারে। তবে শুক্র ও শনিবার চাপ বাড়তে পারে। মাস্ক পরা শুরু করা হয়েছে। আমরা যাত্রীদের সচেতন করছি। সবাইকে মাস্ক পরে ট্রেনে যাত্রা করার অনুরোধ করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।