জুমবাংলা ডেস্ক : রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার মৌগাছি ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামের একটি মসজিদের উন্নয়নের লক্ষ্যে ইসলামি জলসার আয়োজন করে মসজিদ কমিটি। কিন্তু ওয়াজ চলাকালীন স্থানীয় এক নারী রঙিন একটি আম দান করেন যা নজর কাড়ে সকলের। পরে ওয়াজ মাহফিলে নিলামে ওই আমটি ৯৫০ টাকায় বিক্রি হয়।
মঙ্গলবার (০৯ মার্চ) রাত সাড়ে ১২টার দিকে মোহনপুর উপজেলার বসন্তপুর গ্রামে ওই নিলাম হয়। অসাধারণ সুন্দর রঙিন এই অসময়ের আমটি ৯৫০ টাকায় কেনেন ওই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক নামের এক তরুণ। আমের ওজন প্রায় ৩০০ গ্রাম।
ওয়াজ মাহফিলের সভাপতি মো. দেরাজ উদ্দীন বলেন, বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলে দান করা জিনিসগুলো ডাকের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। বিক্রির সেই টাকা দানের মধ্যে গণ্য হয়। এ বছরও মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিল। তবে অসময়ের আম দেখে সবার মধ্যে অন্যরকম উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়। এ কারণে গভীর রাতেও ওয়াজ মাহফিলে শেষ পর্যন্ত ছিল মানুষের ঢল। সবশেষ ৯৫০ টাকায় বিক্রি হয় আমটি, যা অবিশ্বাস্য।
এদিকে, একটি আমের অস্বাভাবিক দামের খবর এলাকার ছড়িয়ে পড়লে পরদিন বুধবার সকাল থেকেই ওই যুবকের বাড়িতে ভিড় জমাতে শুরু করেন আশপাশের এলাকার জনসাধারণ। আমটির সঙ্গে মুঠোফোনে সেলফি তোলার খবরও শোনা যায়। এ ঘটনায় এলাকায় বেশ কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ওয়াজ শেষ হয় প্রায় ১২টার দিকে। মসজিদের উন্নয়নকল্পে অনেকেই অনেক জিনিস দিয়েছেন। মুরগি, ডিম, সোনার নাকফুল, ফলমুল, আমসহ সবাই বিভিন্ন জিনিস দান করেন। কিন্তু সবার নজর ছিল ওই রঙিন পাকা আমটির দিকেই।
সব জিনিস বিক্রি হওয়ার পর আমটি নিলামে তোলা হয়। আমটি কিনতে দাম হাকাতে শুরু করেন স্থানীয় কয়েকজন তরুণ। ২০ টাকা থেকে শুরু হওয়া আমের দাম গিয়ে ঠেকে ৯৫০ টাকায়। আব্দুর রাজ্জাক সর্বোচ্চ দাম বলায় তিনি হন আমটির মালিক।
অসময়ের রঙিন আমের ক্রেতা আব্দুর রাজ্জাক নামের ওই তরুণ বলেন, মসজিদের উন্নয়ন ও সৃষ্টিকর্তার প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনের কারণেই মূলত রঙিন আম এত দামে কিনেছি। অসময়ের আম কিংবা উৎসাহের বসে নয়। মসজিদের জিনিস বেশি দামে কিনলে মসজিদে আমার ওই টাকাগুলো কাজে দেবে। এটাই আসল কথা, এতে লস নেই।
এ বিষয়ে ওই মসজিদ কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সাদেকুল আলম বলেন, অসময়ের রঙিন আমের মূল্য অনেক বেশিতে ঠেকবে এমনটি ধারণা করেছিলাম। শেষ পর্যন্ত সেটিই হয়েছে। যেখানে সোনার নাকফুলের দাম ১ হাজার ৫০ টাকা উঠেছে সেখানে একটি আমের মূল্যই উঠেছে ৯৫০ টাকা, যা সত্যিই অবিশ্বাস্য।
অসময়ে রঙিন আমে বিস্ময় প্রকাশ করেন রাজশাহী ফল গবেষণা ইনস্টিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জিএমএম বারি ডলার। তিনি বলেন, সবে মাত্র গাছে মুকুল ফুটেছে। আর সেই রকম কোনও আম এই অসময়ে হয় তা আমার জানা নেই। তবে কিছুদিন আগেই ‘বারি-১৪’ নামের রঙিন আমের জাত জাতীয় নিবন্ধন বোর্ডে অনুমোদন পেয়েছে। কিন্তু এই ‘বারি-১৪’ অসময়ে পাওয়া অসম্ভব। ওই রঙিন আম হয়ত বাইরের কোনও দেশের হতে পারে।
ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দীন এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।