ইতিহাস বলছে, ১৬১৩ খ্রিস্টাব্দে রাজস্থানের বিকানিরে শাহী রাজ কচুরি তৈরির চল ছিলো। তবে শাহী রাজ কচুরির সঙ্গে আর পাঁচটা কচুরির অবশ্য খানিকটা হলেও পার্থক্য রয়েছে। শাহী রাজ কচুরি কিন্তু লুচির মতো ছিঁড়ে আলুর তরকারি দিয়ে খাওয়ার নিয়ম নেই। এটি আসলে একটি চাট। ফুচকা যেমন আঙুলের চাপে মাঝখানে গর্ত করে তাতে আলু মাখা ও টক জল সহকারে খাওয়া হয়, শাহী রাজ কচুরিও খাওয়া হয় খানিকটা সেই নিয়মে, শুধু এটি একটু বড় থাকে। তাতে থাকে পরিমাণমতো আলুর স্টাফিং, তেঁতুল ও ধনেপাতার চাটনি, দই, চাট মশলা। ওপরে ছড়ানো থাকে ঝুরি ভাজা, ধনে পাতা আর বেদানার দানা। এছাডা়ও থাকে কচুরির মতো পুর। আর এই জিভে জল আনা চাট একবার মুখে দিলেই হারিয়ে যাবেন এর স্বাদে। ঘরে বানিয়ে খেতে চাইলে জেনে নিন রেসিপি।
ডো-এর উপকরণ:
সুজি- ১/২ বা ২/৩ কাপ, ময়দা- ১/২ কাপ, বেকিং সোডা- ১/৪ চা চামচ, স্বাদমতো লবণ
স্টাফিংয়ের জন্য লাগবে:
বেসন- ১/২ কাপ, মরিচের গুঁড়ো- ১ চা চামচ, ঘি- আধ চা চামচ, বেকিং সোডা- ১/৪ চা চামচ, স্বাদমতো লবণ, পানি- সামান্য
চাট মশলার জন্য দরকার:
আস্ত জিরা- ১ টেবিল চামচ, মৌরি- ১ টেবিল চামচ, আস্ত ধনে- ১/২ টেবিল চামচ, গোল মরিচ- ১ টেবিল চামচ, মরিচের গুঁড়ো- ১ চা চামচ, লবণ- ১/২ চা চামচ, আমচুর পাউডার- ১/৪ চা চামচ
রাজস্থানের শাহী রাজ কচুরি
পুরের জন্য প্রয়োজন:
১টি বড় আলু, সিদ্ধ করে ডুমো করে কাটা
১টি ছোটো পেঁয়াজ (কুচোনো)
২টি কাঁচা মরিচ (কুচোনো)
ঘুগনির মটন সেদ্ধ- আধ কাপ
ধনেপাতা কুচি
বিট লবণ
১/২ খানা পাতিলেবুর রস
১/২ চা চামচ গোলমরিচ গুঁড়ো
এছাড়াও লাগবে:
ভাজার জন্য সাদা তেল, ধনেপাতার চাটনি, তেঁতুলের চাটনি, ভালো করে ফেটিয়ে রাখা দই, ধনে পাতা কুচি, ঝুরিভাজা, বেদানার দানা
প্রণালী:
প্রথমে চাট মশলা তৈরি করে আলাদা করে রেখে দিন। শুকনো কড়াইয়ে জিরা, মৌরি, ধনে, গোলমরিচ হালকা ভাবে ভেজে তুলে নিন। একটি পাত্রে এটি তুলে নিয়ে তাতে লবণ, মরিচের গুঁড়ো এবং আমচুর পাউডার মিশিয়ে নিন। এবার মিশ্রণটি ব্লেন্ডারে মিহি করে গুঁড়ো করে নিন।
চাট মশলার পর বানিয়ে ফেলুন কচুরির ডো। এর জন্য একটি পাত্রে সুজি, ময়দা, বেকিং সোডা, লবণ এবং সামান্য পানি যোগ করে একটি ডো তৈরি করুন। এটি অন্তত আধ ঘণ্টা একটি পাতলা কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখে দিন।
এরপর বানিয়ে ফেলুন কচুরির পুর। একটি পাত্রে সেদ্ধ আলু, কাঁচামরিচ কুচি, সেদ্ধ মটর, ধনে পাতা কুচি, বিট লবণ, লেবুর রস এবং গোলমরিচের গুঁড়ো নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে আলাদা করে রাখুন।
বানিয়ে ফেলুন কচুরির পুর। একটি পাত্রে বেসন, মরিচের গুঁড়ো, লবণ, বেকিং সোডা, বেকিং পাউডার, ঘি এবং সামান্য পানি যোগ করে একটি ঘন পেস্ট তৈরি করুন।
চাইলে তেঁতুলের চাটনি বাড়িতেই বানিয়ে ফেলতে পারেন। পাত্রে দুই কাপ পানি বসিয়ে তাতে আধ কাপ তেঁতুল এবং ২ অথবা ৩ কাপ গুড় দিয়ে কম করে ১০ মিনিট ফোটাতে থাকুন।
এবার মিশ্রণটি ভালোভাবে ছেঁকে নিয়ে ফের সসপ্যানে ঢেলে দিয়ে গরম করতে থাকুন।
অন্য একটি পাত্রে এক টেবিল চামচ তেল গরম করে তাতে আধ চামচ করে আস্ত জিরা এবং মৌরি ফোঁড়ন দিন। সঙ্গে দিন ২-৩টি শুকনো মরিচ। মশলার সুগন্ধ উঠলে সেটি ছেঁকে নেওয়া ফুটন্ত চাটনিতে ঢেলে দিন। চাটনি ঘন হয়ে গেলে নামিয়ে ঠান্ডা করে নিন।
এ বার কচুরি ভাজার পালা। ময়দার ডো-এর লেচি কেটে সামান্য বেলে তাতে বেসনের পুর ভরে বেলে নিন। বেলার সময় তেলের বদলে ময়দা ব্যবহার করবেন।
কড়াইয়ে সাদা তেল গরম করে মাঝারি আঁচে কচুরি ভাজুন। ধীরে ধীরে দেখবেন কচুরি ফুলে উঠছে। তবে সেগুলো যতক্ষণ না সোনালি হয়ে মুচমুচে হয়ে যাচ্ছে ততক্ষণ ভাজতে হবে।
ভাজা কচুরি টিস্যু পেপারে তুলে রাখুন। এবার একেবারে পেশাদার চাট বিক্রেতার মতো কচুরিগুলো সাজিয়ে ফেলুন। কচুরির গায়ে ফুচকার থেকে একটু বড় গর্ত করে চামচে করে এক চামচ আলুর পুর ভরে নিন। তারপর যথাক্রমে ধনে পাতার চাটনি, তেঁতুলের চাটনি, দই এবং চাট মশলা যোগ করুন। স্বাদ অনুযায়ী চাটনি, দই, মশলা পুনরায় ভরে ফেলুন। স্টাফ করা কচুরির ওপর ছড়িয়ে দিন ঝুরি ভাজা, ধনেপাতা এবং বেদানার দানা। সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশন করুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।