জুমবাংলা ডেস্ক : যশোর-ঝিনাইদহ ছয় লেন সড়ক নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার আগে রাতারাতি তৈরি হচ্ছে অর্ধশত বহুতল ভবন। এখনো চলছে এক, দুই, তিন ও চারতলার নির্মাণকাজ। জমি অধিগ্রহণের টাকার পাশাপাশি স্থাপনা বাবদ অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ পাওয়াই এর উদ্দেশ্য। স্থানীয়দের অভিযোগ, এর পেছনে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও সার্ভেয়ারদের ইন্ধন রয়েছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকার দেবে এক হাজার ৪৮২ কোটি চার লাখ ৯৯ হাজার টাকা এবং বিশ্বব্যাংক ঋণ দেবে দুই হাজার ৭০৫ কোটি ৬৫ লাখ ১৮ হাজার টাকা।
ছয় লেন প্রকল্পের যশোর অফিসের উপব্যবস্থাপক মো. সাজেদুর রহমান বলেন, ‘ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ক (এন-৭) উন্নয়নে ব্যয় ধরা হয়েছে চার হাজার ১৮৭ কোটি টাকা। ঝিনাইদহের হামদহ পর্যন্ত সড়কটি হবে ৪৮.৫ কিলোমিটার এবং যশোর পালবাড়ি থেকে মান্দারতলা পর্যন্ত সড়কটি সাড়ে ১৭ কিলোমিটার। ’
গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন দেখা গেছে, বারীনগর বাজারে হৈবতপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম চারতলা ভবন নির্মাণ কয়েক দিন আগে শেষ করেছেন। সেই ভবনের নিচতলায় রাইসমিলের একটি ছোট মেশিন বসিয়েছেন। বাকি তিনতলা ফাঁকা।
বাজার থেকে প্রায় এক কিলোমিটার ঝিনাইদহের দিকে গেলে রয়েছে আব্দুস সালামের একটি ইটখোলা। ভাটার সামনে আরো একটি চারতলা ভবন নির্মাণাধীন। সেই ভবনের তিনতলার ছাদ এরই মধ্যে ঢালাই হয়েছে। চারতলার ছাদ ঢালাই চলমান। পাশে তার আরেকটি দোতলা ভবনের ছাদ ঢালাই হয়েছে।
বারীনগর বাজারে সড়কের পাশে পুরাতন আমলের সেমিপাকা হাজী আ. খালেক সুপারমার্কেট। টিনের চালা দেওয়া মার্কেটের সামনে নির্মাণসামগ্রী রাখা। পেছনে দেখা গেল তিনতলা ভবন নির্মাণের আয়োজন। চলছে প্রথম তলার ছাদ ঢালাই। এই বাজারে একতলা মণ্ডল সুপারমার্কেট। অল্প কিছুদিন আগে এই মার্কেটের ওপর আরো তিনটি তলা নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় তলায় লাগানো হয়েছে একটি মাদরাসার সাইনবোর্ড। শুধু এই বাজারে হঠাৎ গজানো ভবন কমপক্ষে ৩০টি বলে জানান স্থানীয় এক ব্যক্তি।
স্থানীয় বাসিন্দা মোবারক বলেন, ‘ভবন নির্মাণকারীদের সঙ্গে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণকারী কর্মকর্তা ও সার্ভেয়ারদের সঙ্গে পার্সেন্টেজের বিনিময়ে রফা হয়েছে। কারো কারো আরো ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে সখ্য রয়েছে।’
হৈবতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিক বলেন, ‘২২ মার্চের পর নতুন স্থাপনা করা যাবে না, এমন একটি চিঠি পাই। অথচ, এর কয়েক মাস আগে থেকে এসব ভবন নির্মাণ শুরু হয়েছে। ক্ষতিপূরণের টাকা যাঁরা দেবেন, সার্ভেয়ার যাঁরা আছেন, তাঁদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে এগুলো হচ্ছে বলে আমার বিশ্বাস। আর শুধু ভবন না, অনেকে পুকুর খনন করছেন।’
চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দাউদ হোসেন বলেন, ‘দুই মাস আগে মাইকিং করা হয়েছে। গ্রাম পুলিশ পাঠিয়েও নিষেধ করেছি। এর পরও চুড়ামনকাটি বাজারে ২০টি ভবন হচ্ছে।’
প্রকল্প ব্যবস্থাপক খ ম নকিবুল বারী বলেন, ‘দুইবার ভিডিও সার্ভে করেছি। কেউ নতুন করে স্থাপনা তুললে ক্ষতিপূরণ পাবে না।’ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশ আছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এমন অভিযোগ পাইনি।’ সূত্র : কালের কন্ঠ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।