জুমবাংলা ডেস্ক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থী রড দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে মাথা ফাটানোর অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। খবর ইউএনবি’র।
শনিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা।
আহত সোহরাব মিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলে তাকে মারধর করা হয়। পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মারধরে অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ কর্মী হলেন- আসিফ লাক ও হুমায়ুন কবির নাহিদ। তারা দুজনই শামসুজ্জোহা হল শাখা ছাত্রলীগের দায়িত্বে রয়েছেন এবং শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার অনুসারী।
তার সহপাঠীরা জানায়, সোহরাবের বাম হাতের কনুইয়ের ওপর ও নিচে দুই জায়গায় ভেঙে গেছে। চিকিৎসক জানিয়েছেন, মাথা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মোট ১৫টি সেলাই দেয়া হয়েছে।
বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমরা গণমাধ্যমে দেখেছি সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের টর্চার সেল রয়েছে। বুয়েটে আবরার হত্যা, রাজশাহী পলিটেকনিকে অধ্যক্ষকে পুকুরে ফেলেছে ছাত্রলীগ। রাবিতেও বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের মারপিট করে ছাত্রলীগ। সব অপকর্মে ছাত্রলীগের কিছু দুষ্কৃতিকারী জড়িত। তাদের এ ক্ষমতা কে দেয়?’
এ সময় তারা জড়িত ছাত্রলীগ কর্মীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এর আগে বেলা ১১টার পর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মহাসড়কে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। তবে বিকল্প ব্যবস্থায় যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, ছাত্রলীগ কর্মী আসিফ লাকের নেতৃত্বে সোহরাবসহ ফিন্যান্স বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে হলের তৃতীয় ব্লকের ২৫৪ নম্বর কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সোহরাবকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন আসিফ লাক ও হুমায়ুন কবির নাহিদ। এক পর্যায়ে তারা দুজন মিলে সোহরাবকে রড দিয়ে মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে তার মাথা ফেটে রক্ত বের হলে তারা মারধর বন্ধ করেন।
পরে সোহরাবের বন্ধুরা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমান সে রামেক হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
তবে এ বিষয়ে জানতে চেষ্টা করেও অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ কর্মীরা সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। ঘটনার পর থেকে দুজনের মোবাইল নম্বর বন্ধ এবং তাদের ফেসবুক আইডি ডিঅ্যাক্টিভ রয়েছে।
এ ব্যাপারে শহীদ শামসুজ্জোহা হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মো. জুলকারনাইন বলেন, ‘আমি ঘটনাটি শনিবার সকালে জেনেছি। এরপরই হল প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি।’
প্রসঙ্গত, গত ৬ অক্টোবর বুয়েটের ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে (২১) শের-ই-বাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।