নিজস্ব প্রতিবেদক : রূপালী ব্যাংকে নিজস্ব চক্র গড়ে তুলে অভিনব উপায়ে একের পর এক ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে কাজী নুরুদ্দীন নামে চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।
তার এই কার্মকাণ্ডে বাধা হয়ে দাঁড়ালে কিংবা ঋণের টাকা ফেরত চাইলে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন উপায়ে হয়রানি করছেন তিনি। দিচ্ছেন ভুল তথ্যে ভরপুর একের পর এক লিগ্যাল নোটিশ।
রূপালী ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, নুরুদ্দীনের এই কর্মকাণ্ডে সঙ্গ দিচ্ছেন খোদ রূপালী ব্যাংকেরই কিছু অসাধু কর্মকর্তা।
ঋণের অর্থ ইচ্ছাকৃতভাবে ফেরত না দেওয়ায় নুরুদ্দীনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতে মামলা করেছে রূপালী ব্যাংক। নুরুদ্দীনকে চট্টগ্রামের স্থানীয় লোকজন একজন পেশাদার প্রতারক হিসেবে জানেন। তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে গত কয়েক বছর ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে আত্মসাত করেছেন।
জানা যায়, কাজী নুরুদ্দীনের কাজ হচ্ছে ব্যাংকের অসৎ কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশ করে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া। পরবর্তীতে টাকা পরিশোধ না করে ইচ্ছাকৃত খেলাপী হওয়া। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যাতে যোগসাজশকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয় এবং ঋণের টাকা যেন পরিশোধ করা না লাগে সেজন্য ব্যাংকের লোকজনকে মানসিকভাবে দূর্বল করার জন্য নানা রকম অসত্য, প্রতারণামূলত তথ্য দিয়ে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে চিঠি প্রেরণ করে।
এই ব্যবসায়ী রূপালী ব্যাংকের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহায়তায় সর্বপ্রথম ২০১৮ সালে চট্টগ্রামের হালিশহর শাখা থেকে ঋণ গ্রহণ করেন। এই ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে তার আত্মীয় মোঃ ফয়সাল তৃতীয়পক্ষ হিসেবে জামানত দেন ব্যাংককে।
২০২০ সালে নুরুদ্দীন তার ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ওড়না হাউজের নামে রূপালী ব্যাংকের সাগরিকা রোড শাখা হতে ৩০ লাখ টাকা ঋণ নেন। এর পরের বছর ব্যাংকটির ওমর আলী মার্কেট শাখা হতে আবরণ নামক প্রতিষ্ঠানের নামে ৫ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন।
সাগরিকা রোড শাখা থেকে তিনি যখন ঋণ নেন তখন শাখার ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে ছিলেন শামীম সিদ্দিকী যিনি নুরুদ্দিন চক্রের হয়রানির স্বীকার হয়ে বর্তমানে সাময়িক বরখাস্ত। এছাড়া হালিশহর শাখা ও ওমর আলী মার্কেট শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন শাহেদুর রহমান, যিনি বর্তমানে হবিগঞ্জের আউশকান্দি শাখায় কর্মরত রয়েছেন।
ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফেরত না দেওয়ার চক্রান্ত করে নুরুদ্দীন। এজন্য সাগিরিকা রোড তৎকালীন ব্যবস্থাপক শামীম সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে ঋণের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম শাখায়। ওই অভিযোগপত্রে বলা হয়েছিল, শামিম সিদ্দিকী ঋণের টাকা নিজে নিয়েছেন এবং এটি ৩শ টাকার স্ট্যাম্পে লিখিতভাবে স্বীকার করেছেন।
এই অভিযোগের প্রাথমিক তদন্তে ওড়না হাউজের নামে নেওয়া ঋণের হতে প্রায় সব টাকাই কাজী নুরুদ্দীনের চেক মারফত উত্তোলনের প্রমাণ মেলে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে নুরুদ্দীন বলেন, ‘আমার টাকা ব্যাংক ম্যানেজার উঠিয়ে আত্মসাত করেছে, যা আদালতে স্বীকার করেছে। ঘটনা ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্য আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হচ্ছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।