আমাদের আধুনিক জীবনযাত্রায় বাড়িতে রেফ্রিজারেটর একটি অপরিহার্য যন্ত্র হিসাবে স্থান করে নিয়েছে। রেফ্রিজারেটর আমাদের পচনশীল জিনিসগুলিকে সংরক্ষণ করে এবং আমাদের খাবারকে দীর্ঘ সময়ের জন্য তাজা রাখে।
যাইহোক, আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না যে আমাদের খাবারের নিরাপত্তা এবং আমাদের রেফ্রিজারেটরের কার্যকারিতা উভয়ই নিশ্চিত করার জন্য সঠিকভাবে এর ব্যবহার এবং সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণঃ
রেফ্রিজারেটরের সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখা খাদ্য নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভালোভাবে খাদ্য সংরক্ষণের জন্য আদর্শ তাপমাত্রার পরিসীমা হচ্ছে 35°F (1.6°C) থেকে 38°F (3.3°C) এর মধ্যে। তাপমাত্রার এই পরিসীমা ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিকে ধীর করে দেয়, যা খাবারকে দীর্ঘ সময় তাজা রাখতে সাহায্য করে। রেফ্রিজারেটরটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় মধ্যে কাজ করছে তা নিশ্চিত করতে একটি রেফ্রিজারেটর থার্মোমিটার ব্যবহার করুন।
খাবার সঠিক ভাবে গুছিয়ে রাখাঃ
রেফ্রিজারেটরের ভিতরে সঠিক ব্যাবস্থাপনার মাধ্যমে খাবার ও অন্যান্য জিনিস সুসজ্জিত রাখলে শুধুমাত্র স্থানই বৃদ্ধি করে না বরং খাদ্য নিরাপদ রাখতেও সাহায্য করে। অন্যান্য খাবারের উপর পানি বা তরল জাতীয় কিছুর সংস্পর্শে আসা ঠেকাতে আলাদা তাকে কাঁচা মাছ- মাংস সংরক্ষণ করুন এবং ক্রস-দূষণ রোধ করতে আলাদা পাত্র বা প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করুন। একটি পৃথক ড্রয়ার বা তাকে ফল এবং শাক-সবজির মতো খাবার রাখুন। এতে করে রেফ্রিজারেটরে রাখা প্রত্যেকটি জিনিস ভালোভাবে সংরক্ষিত হবে।
নিয়মিত পরিষ্কার করাঃ
নিয়মিতভাবে আপনার রেফ্রিজারেটর পরিষ্কার করুন যাতে স্পিল, ক্রাম্বস এবং ব্যাকটেরিয়া তৈরি না হয়। তাক, ড্রয়ার এবং দরজার সিলগুলি ভালোভাবে পরিষ্কার করতে ডিটারজেন্ট এবং হাল্কা গরম পানি ব্যবহার করুন। এরপর শুকনো কাপড় বা টিস্যু পেপার দিয়ে রেফ্রিজারেটরের ভিতরের ও বাহিরের অংশ ভালো করে মুছে ফেলুন ।
মেয়াদ উত্তীর্ণ খাদ্য চেক করাঃ
আপনার রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষিত খাবারের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ নিয়মিত পরীক্ষা করুন। খাদ্যজনিত অসুস্থতা এড়াতে মেয়াদোত্তীর্ণ আইটেম দ্রুত সরিয়ে ফেলুন। খাবারগুলি এমন ভাবে গুছিয়ে রাখুন যাতে পুরানো জিনিসগুলি প্রথমে ব্যবহার করা হয়, অপচয় রোধ করা এবং সতেজতা নিশ্চিত করা যায়।
খাদ্য অতিরিক্ত মজুত এড়িয়ে চলাঃ
যদিও প্রত্যেকটি রেফ্রিজারেটর অধিক ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন হয়ে থাকে , তারপরও অগোছালো অতিরিক্ত মজুত বাতাসের প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে এবং অসম শীতলতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। এর ফলে রেফ্রিজারেটরের কিছু অংশ অন্যদের তুলনায় বেশি উষ্ণ হতে পারে, এতে খাবার নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। আপনার রেফ্রিজারেটরে পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত রাখুন তবে এমন ভাবে রাখবেন না যাতে আপনার মজুতকৃত আইটেম শীতল হওয়া থেকে বাধাগ্রস্থ হয়।
পাত্র বা প্যাকেট সঠিকভাবে সিল করাঃ
বায়ুরোধী পাত্রে খাবার সঞ্চয় করুন বা প্লাস্টিকের মোড়কে বা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে শক্তভাবে আবৃত করুন যাতে গন্ধ স্থানান্তর থেকে রোধ করা যায় এবং সতেজতা বজায় থাকে। এটি ব্যাকটেরিয়ার বিস্তার রোধ করতে সাহায্য করে এবং ক্রস-দূষণের ঝুঁকি কমায়।
রেফ্রিজারেটর ব্যবহারে কিছু স্মার্ট অভ্যাস চর্চা করাঃ
এই অভ্যাস গুলো কেবল আপনার রেফ্রিজারেটর ব্যবহারে সহায়তাই করবে না বরং , আপনার ভুলে যাওয়া এবং অসচেতনতার চর্চা পরিহার করতে সহায়তা করবে।
রেফ্রিজারেটর ঘন ঘন খোলা থেকে বিরত থাকা
গরম খাবার ফ্রিজে নিয়ে যাওয়ার আগে ঠান্ডা হতে দেয়া
খাবার ভালোভাবে ঢেকে রাখা
খাবারে লেবেল দিয়ে রাখা
ফ্রিজার পূর্ণ রাখা
এই টিপস গুলো অনুসরণ করে, আপনি নিশ্চিত করতে পারবেন যে আপনার রেফ্রিজারেটর সঠিকভাবে এবং নিরাপত্তার সাথে কাজ করছে। সেইসাথে আপনার খাবারকে তাজা ও সতেজ রাখছে এবং আপনার পরিবারকে সুস্থ রাখছে। মনে রাখবেন, আপনার রেফ্রিজারেটরের সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ এবং যত্ন শুধুমাত্র এর জীবনকালকে দীর্ঘায়িত করে না বরং একটি নিরাপদ এবং আরও উপভোগ্য রান্নাঘরের অভিজ্ঞতায় অবদান রাখে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।