জুমবাংলা ডেস্ক : ট্রেন যাত্রীদের দ্রুত টিকিট কাটা নিশ্চিত করতে কমলাপুর, বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন স্টেশনে ১৫টি ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে। স্টেশনের কাউন্টার, মোবাইল অ্যাপের পর বাংলাদেশ রেলওয়ের নতুন এই সংযোজনকে বলা হচ্ছে টিকিট ভেন্ডিং মেশিন ‘টিভিএম’ প্রযুক্তি।
সোমবার (২২ এপ্রিল) কমলাপুরে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে অটোমেটিক টিকিট ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়।
জানতে চাইলে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারোয়ার বলেন, কমলাপুরে দুটি অটোমেটিক টিকিট ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে। মোট চারটি ভেন্ডিং মেশিন বসানো হবে। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ ২১ স্টেশনে ভেন্ডিং মেশিন বসানো হবে।
রেলসূত্র জানিয়েছে, কমলাপুরে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে ৪টি, বিমানবন্দর স্টেশনে ২টি, চট্টগ্রাম স্টেশনে ২টি, সিলেট স্টেশনে ১টি, কক্সবাজার স্টেশনে ১টি, রাজশাহী স্টেশনে ২টি, খুলনা স্টেশনে ১টি, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশনে ১টি ও রংপুর স্টেশনে ১টি ভেন্ডিং মেশিন বসানো হবে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট কাউন্টারের পাশে টাচ স্ক্রিনের মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। স্ক্রিনে- প্রারম্ভিক স্টেশন, যাত্রার তারিখ ও গন্তব্য স্টেশনের নাম লেখার ঘর রয়েছে। তারিখ ও গন্তব্যের ঘর পূরণ করে সার্চ ট্রেন অপশনে ক্লিক করলেই দেখা মিলবে কাঙ্খিত গন্তব্যের ট্রেনগুলোর নাম এবং আসন সংখ্যা। সেখানে ওয়েবসাইটের মতো প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে অনলাইনে পেমেন্ট করলেই বের হয়ে আসবে টিকিট। তবে এই মেশিনে নগদ টাকা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
যাত্রীরা রেলওয়ের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও টিকিট কাটতে অতিরিক্ত ২০ টাকা চার্জ কাটায় যাত্রীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। মাইনুল মিজান নামে এক যাত্রী বলেন, স্টেশনে গিয়ে টিকিট ভেন্ডিং মেশিনে টিকিট কাটতে যদি অনলাইন চার্জ দিতে হয় তাহলে এই মেশিনের দরকার কী!
রেলওয়ে অপারেশন দপ্তর সূত্রে জানা যায়, আধুনিক এ মেশিনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবে সহজ ডটকম। এর মাধ্যমে যাত্রীরা সহজেই নিজের টিকিট নিজে কাটতে পারবেন। তবে এজন্য অনলাইনে টিকিট কাটতে যে পরিমাণ চার্জ (২০ টাকা) দিতে হয়, ভেন্ডিং মেশিন থেকে টিকিট কাটলে একই পরিমাণ চার্জ কাটা হবে। ইন্টারনেট ও মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপের মাধ্যমে সাধারণ যাত্রীরা টিকিট কাটতে পারবেন।
এ সেবা চালুর বিষয়ে রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী বলেছেন, রেলে বিনা টিকিটের যাত্রী রোধ এবং তাৎক্ষণিক ট্রেনে ভ্রমণ করা যাত্রীদের সেবা নিশ্চিত করতে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সবকটি অনলাইনভিত্তিক স্টেশনে এ ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করা হবে।
রেলওয়ের টিভিএম স্থাপন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান কালবেলাকে বলেন, যে লক্ষ্য সামনে নিয়ে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেটা ইতিবাচক। টিভিএম পৃথিবীর কোথাও শুধু অনলাইন পেমেন্টের মাধ্যমে হয় না। টিভিএম থাকলে সেখানে অবশ্যই নগদ টাকা প্রবেশ করানোর ব্যবস্থা থাকতে হবে। কিন্তু এখানে নগদ টাকা প্রবেশ করানোর কোনো সুযোগ নেই।
স্টেশনে টিভিএম মেশিন স্থাপন প্রসঙ্গে রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শাহ আলম কিরণ শিশির কালবেলাকে বলেন, ঢাকা, বিমানবন্দর, ময়মনসিংহ, সিলেটসহ বড় স্টেশনগুলোতে টিভিএম দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে টিকিটের বেশি চাহিদা আছে এমন স্টেশনগুলোতেও দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে চারটি টিভিএম ও একটি বুথ, বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে তিনটি টিভিএম ও একটি বুথ থাকছে। স্টেশনে এসে যাত্রী যেন নিজেই টিকিট কাটতে পারেন এবং অনলাইনে টাকা পরিশোধ করতে পারেন, সেজন্য এ ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাত্রীর সুবিধার্থে এটি সবসময় খোলা থাকবে।
পেমেন্টের গোপন নম্বর প্রবেশের ক্ষেত্রে যাত্রীর অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, লাইনে কেউ থাকলে পেছনের জনতো তার সামনের মনিটর দেখতে পারবেন না। এ ছাড়া এটার পাশে একটি বুথের মতো ব্যবস্থা থাকবে। সেখানে গেলে যাত্রীকে টিকিট কাটা থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত সবকিছু বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য একজন লোক থাকবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।