আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আধুনিক যুগে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাই রোবটের ব্যবহার। দিন যত যাচ্ছে কর্মক্ষেত্রে রোবটের ব্যবহারও তত বাড়ছে। তবে এখনো কিছু কাজ আছে যা মানুষ তার নিজের হাতেই করে থাকে, যার মধ্যে রান্না অন্যতম। তবে এক্ষেত্রে সবাইকে অবাক করেছে ইউরোপের দেশ লাটভিয়ার একটি রেস্তোরাঁ।
দেশটির রাজধানী রিগায় অবস্থিত ফাস্ট ফুডের রেস্তোরাঁ রোবোইটজে গেলে আপনার চোখে পড়বে সেখানে ক্রেতাদের গরম–গরম খাবার সরবরাহ করছে একটি রোবট। রেস্তোরাঁটির অভ্যন্তরীণ নকশা এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে ক্রেতারা রোবটের হাতে রান্নার পুরো প্রক্রিয়াটি চোখের সামনে দেখতে পারেন।
চাইলে আপনি রোবটের বানানো খাবার সেখানে বসেই খেতে পারবেন। তবে করোনাকালে ওই রেস্তোরাঁয় বসে খেতে লাগবে টিকা নেয়ার সনদ। তাই এখন অনেক ক্রেতা অর্ডার করা খাবার বাড়িতে নিয়ে যেতে চান। খাবারের অর্ডার নেয়া ও বিল পরিশোধে রেস্তোরাঁটির আলাদা অ্যাপ রয়েছে।
কনস্ট্যান্টিস করজমকিনস ও জেনিস পোরুকস—এই দুজনের হাত ধরে ২০১৮ সালে জানুয়ারিতে রিগায় এই রেস্তোরাঁর যাত্রা শুরু হয়েছিল। এর আগে ২০০৯ সাল থেকে তারা লাটভিয়ার জনপ্রিয় ফাস্ট ফুড চেইন ওকি–চোকি পরিচালনা করতেন। ফাস্ট ফুড খাবারের ব্যবসায় পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন এই দুজন।
জেনিস বলেন, রেস্তোরাঁয় রোবট যুক্ত হওয়ায় চার থেকে ছয়জন কর্মী কাজ হারিয়েছেন। কিন্তু এটা আমাদের পরিচালন ব্যয় অনেকটাই কমিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইন মেনে একজন কর্মীকে ঘণ্টায় প্রায় ১৯ ডলার মজুরি দিতে হয়। সঙ্গে রয়েছে কর, বিমা, প্রশিক্ষণ ব্যয়সহ নানা খরচ। রোবটের ক্ষেত্রে এসব ব্যয় হয় না। এমনকি রোবট অসুস্থ হয় না। ছুটিও নেয় না। স্বাস্থ্য বিমার দরকার পড়ে না। কাজেই ভবিষ্যতে রেস্তোরাঁশিল্পে রান্নাঘর সামলাতে রোবটের জনপ্রিয়তা বাড়বে।
তবে জেনিস মনে করেন, রেস্তোরাঁয় রোবটের ব্যবহার বড় পরিসরে কর্মহীনতার কারণ হবে না। কেননা রোবটের কারণে খুব কম বেতনে যারা কাজ করেন, তাঁরা কর্মহীন হবেন। আর সচরাচর মানুষ কম বেতনের এসব কাজ করতে চান না।
রিগার রোবোইটজ রেস্তোরাঁয় খেতে এসেছিলেন ইভেতা রাতিনিকা। পেশায় শিক্ষক এ ভোজনরসিক বলেন, ‘আমি যেমনটা ভেবেছিলাম, রোবটের বানানো খাবার তার চেয়েও সুস্বাদু। আমি চাইব স্কুলের শিক্ষার্থীরা এখানে আসুক। রোবটের খাবার বানানো দেখুক। কেননা কয়েক বছরের মধ্যে স্কুলের ক্যাফেটেরিয়ার হেঁশেলও রোবটের দখলে চলে যেতে পারে।’
শুধু লাটভিয়া নয়, বিশ্বের অনেক দেশেই রেস্তোরাঁশিল্পে রোবটের কদর দিন দিন বাড়ছে। রোবটের চাহিদা বাড়ছে বাড়ির রান্নাঘরের কাজেও। করোনাকালে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে নতুন চালু হওয়া একটি রেস্তোরাঁয় পিৎজা বানানো ও প্যাকেট করার কাজে রোবটের ব্যবহার শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ‘স্যালি’ নামের একটি রোবট ভেন্ডিং মেশিনে খাবার বিক্রি করছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।