নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকারে বদলে গেছে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়েও রোগীরা এখন আন্তরিকতার সাথে পূর্ণ সেবা পাচ্ছেন। বিগত দিনের চেয়ে বেড়েছে সব রকম সেবার মান।
জানা গেছে, প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। কমপ্লেক্সটির পুরো এলাকায় বাহারি ফুল আর সবুজের সমারোহ। নিয়ম-শৃঙ্খলার উন্নতি ও সেবার মান ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে হাসপাতালের সেবা নিয়ে স্থানীয় সাধারণ মানুষ সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছে। এ হাসপাতালে বিগত দিনে চিকিৎসকসহ জনবল সংকট থাকলেও বর্তমানে সব সংকট কেটে এখন মডেল হাসপাতালে রূপান্তরিত হয়েছে। এই পরিবর্তনের নেপথ্য কারিগর কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনজুর-এ-এলাহী।
স্বাস্থ্য সেবার আরও উন্নতির জন্য বর্তমানে এখানে রয়েছে দুটি অ্যাম্বুলেন্স। স্বাভাবিক প্রসব, সিজারিয়ান অপারেশন, প্রসব-পূর্ব ও পরবর্তী সেবা, এনসিডি কর্নার, এএনটি কর্নার, আইএমসিআই কর্নার, শিশু ওয়ার্ড ও স্যাম কর্নার, ডে কেয়ার সেন্টার, সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম, প্যাথলজি বিভাগে উন্নতমানের মেশিন সংযোজন, জরুরী বিভাগকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, হাসপাতালের গ্যারেজ ও দৃষ্টি নন্দন কনফারেন্স রুম তৈরি করা হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তার সাথের লোকজনের জন্য তৈরি করা হয়েছে বিশ্রামাগার। শুধু তাই নয় হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল সৃষ্টি করে সেবার মান ব্যাপক উন্নতি করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দৃশ্যপট একেবারে পাল্টে দিয়েছেন বর্তমান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। তিনি এখানে যোগদানের পর থেকে হাসপাতালে রোগীদের খাবার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, ফুল-ফলাদির বাগান, অফিস স্টাফ ও রোগী এবং স্বজনদের অবসর সময় কাটানোর জন্য নানামুখী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একাধিক স্বাস্থ্যকর্মী জানান, কিভাবে আরও সহজে প্রতিটি ইউনিয়ন, ওয়ার্ড এবং গ্রাম পর্যায়ে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যায় এ ব্যাপারে প্রতিনিয়ত সভা-সমাবেশের মাধ্যমে তাদের সঠিক দিক-নির্দেশনা এবং পরামর্শ প্রদান করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মনজুর-এ-এলাহী। এখানে স্বাস্থ্যকর্মীরা তাদের কর্মকর্তার সৃজনশীল ভাবনা এবং উদ্যোগের জন্য কৃতজ্ঞতা জানান।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. সৈয়দ মো. শহিদুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে এক্স-রে মেশিন অচল অবস্থায় ছিল। এখন সেটি চালু করা হয়েছে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম চালু করা হয়েছে। অপুষ্টিহীন শিশুদের জন্য আলাদা কেবিন, রোগীদের খাবারের জন্য সু-ব্যবস্থা, শিশুদের দুগ্ধ স্থাপনের জন্য কেবিন, রোগীদের সিরিয়াল অনুযায়ী টিকিট ও চিকিৎসার জন্য সারিবদ্ধ লাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিশোর-কিশোরীদের জন্য রয়েছে এডোলেসেস সেন্টার।
আরএমও আরও জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আওতায় উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক এবং স্যাটেলাইট ক্লিনিকগুলো নিয়মিত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণ এবং সকলের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অপরিসীম ভূমিকা পালন করছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএনএফপিও) ডা. মনজুর-এ-এলাহী বলেন, আমি এ হাসপাতালে যোগদানের পর থেকেই ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করি। প্রথমে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন কর্মপরিবেশ তৈরি, অচল ও অর্ধসচল যন্ত্রপাতি ব্যবহার নিশ্চিত করা ও মানসম্মত চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আধুনিক সরঞ্জামের ব্যবহার নিশ্চিত করি।
তিনি আরও বলেন, সকল চিকিৎসক এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রচেষ্টা, উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সার্বিক সহযোগিতায় এ সফলতা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। আমরা আগামীতেও এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে চাই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।