রোহিঙ্গা ডাকাতের খোঁজে হেলিকপ্টার নিয়ে অভিযানে র‌্যাব

88-88জুমবাংলা ডেস্ক : রোহিঙ্গা ডাকাত দলের খোঁজে কক্সবাজার টেকনাফের শরণার্থী শিবিরের পাশে একটি দুর্গম পাহাড়ে হেলিকপ্টার দিয়ে অভিযান চালিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়ন (র‌্যাব-১৫)। আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত টেকনাফের বেশ কয়েকটি পাহাড়ে এ অভিযান চালায় র‌্যাব।

অভিযানে ডাকাতদের বেশ কয়েকটি আস্তানার সন্ধান পায় র‌্যাব। তবে আকাশ পথছাড়া স্থলপথে পাহাড়ি এলাকায়ও অপর একটি দল অভিযান পরিচালনা করে।

হেলিকপ্টার অভিযানে নেতৃত্বে দেন কক্সবাজারস্থল র‌্যাব-১৫ অধিনায়ক উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ। এ ছাড়া অভিযানে আরও উপস্থিত ছিলেন র‌্যাব-১৫-এর উপঅধিনায়ক মেজর রবিউল হাসান, সিপিএসসি কোম্পানি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান, সিপিসি-১ কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট মির্জা শাহেদ মাহাতাব (এক্স), সিপিএসসি স্কোয়াড কমান্ডার এডিশনাল এসপি বিমান চন্দ্র কর্মকার, বিএন, সিপিসি-২ কোম্পানি কমান্ডার এএসপি শাহ আলম।

কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ বলেন, ‘প্রথমে শরণার্থী শিবিরের কাছের পাহাড়ে ডাকাত দলের খোঁজে ড্রোন দিয়ে অভিযান চালানো হয়েছিল। পাহাড়গুলো অনেক বড় হওয়ায় ড্রোন দিয়ে ডাকাত দলের সন্ধান পাওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ে। যে কারণে এবার হেলিকপ্টার দিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সঙ্গে লাগোয়া পাহাড়ে অভিযান চালানো হয়েছে। এ সময় হেলিকপ্টার থেকে বেশ কয়েটি দুর্গম পাহাড়ের ভেতরে ডাকাত দলের আস্তান সন্ধান পাওয়া যায়। এসব আস্তানা চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে। পরে এসব আস্তানায় অভিযান চালান হবে।’

আনসার ক্যাম্পের অস্ত্র লুট
২০১৬ সালের ১৩ মে হাকিম ও তার বাহিনীর সদস্যরা হামলা চালিয়ে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের নয়াপাড়া মুছনী রোহিঙ্গা শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার ব্যারাকে লুটপাট চালায়। এ সময় গুলিতে নিহত হন ব্যারাকের আনসার কমান্ডার মো. আলী হোসেন। সেদিন আনসারের ১১টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৬৭০টি গুলি নিয়ে পাহাড়ে অত্মগোপন করে হাকিম ডাকাত। পরদিন হাকিমসহ বাহিনীর ৩৫ সদস্যের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় খুনসহ অস্ত্র লুটের মামলা হয়। পরে র‌্যাব বিভিন্ন আস্তানায় হানা দিয়ে লুন্ঠিত ৯টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১১৫টি গুলিসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হয়। তবে হাকিম ডাকাত রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

পাহাড়ে হাকিমের একাধিক আস্তানা
টেকনাফের গহীন অরণ্যে রয়েছে হাকিম ডাকাতের একাধিক আস্তানা। টেকনাফের ফকিরামুরা ও শিয়ালা গুনা, রোহিঙ্গা সংলগ্ন পাহাড়, উড়নিমুরা নামে পরিচিত গহীন বনের বিশাল এলাকায় এসব আস্তানার অবস্থান। এখানে তার বাহিনীর অন্তত অর্ধশত অস্ত্রধারী ক্যাডারেরও বসতি রয়েছে। হাকিমের সঙ্গে সব সময় দুটি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র থাকে। এ ছাড়া একাধিক দেহরক্ষী নিয়েও চলেন তিনি। টেকনাফ শহরের বিভিন্ন স্থানে আছে তার একাধিক সোর্স। পাহাড়ের কোনো স্থানে হাকিম কখন অবস্থান করেন, তা কেউ জানেন না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একবার অভিযান চালিয়ে তার আস্তানা থেকে একটি স্যাটেলাইট ফোনসেটও উদ্ধার করেছিল।

এ অভিযান অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে র‌্যাবের উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ বলেন, বিশেষ করে রোহিঙ্গা ডাকাত আবদুল হাকিমসহ এসব পাহাড়গুলোতে কয়েটি ডাকাত দলের সদস্যরা রয়েছে। তারা খুন, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। অতি দ্রুত তারা র‌্যাবের জালে ধরা পড়বে।

এদিকে গত ২৫ অক্টোবর প্রথমবারে মতো র‌্যাব সদর দপ্তর থেকে ড্রোন এনে পাহাড়ি এলাকায় উড়িয়ে রোহিঙ্গা ডাতাদের আস্তানায় অভিযান চালায় র‌্যাব-১৫।

Write a Comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *