Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ভরসা এখন এরশাদের ফর্মুলা
    জাতীয়

    রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ভরসা এখন এরশাদের ফর্মুলা

    Shamim RezaAugust 23, 2019Updated:August 23, 20199 Mins Read
    ফাইল ছবি
    Advertisement

    আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধনের পৈশাচিক হামলার দু’বছর পার হলো। এখনও রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে দৃশ্যমান কোনো সাফল্য নেই বিশ্ব সম্প্রদায়ের হাতে। নির্দোষ ও নিরস্ত্র রোহিঙ্গা জাতির ওপরে ইতিহাসের বর্বরতম হামলা করেও মিয়ানমার সারা বিশ্বের সামনে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী নিরাপদ ও সম্মানজনক কোনো সমাধানের পথে হাঁটছে না। কিন্তু কেউই মিয়ানমারকে নমনীয়ও করতে পারেনি।

    আবার জীবনের শংকা আর ভয়াবহ স্মৃতি তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে রোহিঙ্গাদের। তাই বাংলাদেশে নিবন্ধিত ১১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গাই শর্তবিহীন স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরে যেতে রাজি নয়। আর বাংলাদেশ ১১ লাখ রোহিঙ্গার ভার বহন করতে করতে যেন ক্লান্ত। বিশ্ব সম্প্রদায়ের সব দরবারে ধর্না দিয়েও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুই করতে পারেনি।

    জাতিসংঘ ঘোষিত বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত জাতি রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশ রয়েছে বিশাল সমস্যার মধ্যে। রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা, আস্থা আর নাগরিকত্বের প্রশ্নে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি কোনো উদ্যোগ।

    রোহিঙ্গাদের ঐতিহাসিকভাবে আরাকানি ভারতীয় বলা হয়। যারা শত শত বছর ধরে পশ্চিম মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের আদি বাসিন্দা। ২০১৬-১৭ সালে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের পূর্বে আনুমানিক ১ মিলিয়ন রোহিঙ্গা মিয়ানমারে বসবাস করত। অধিকাংশ রোহিঙ্গা ইসলাম ধর্মের অনুসারি, আছে কিছুসংখ্যক হিন্দু ধর্মাবলম্বী রোহিঙ্গাও।

    ২০১৩ সালে জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের বিশ্বের অন্যতম নিগৃহীত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ১৯৮২ সালের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব আইনে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব অস্বীকার করা হয়েছে। এ ছাড়াও রোহিঙ্গাদের আন্দোলনের স্বাধীনতা, রাষ্ট্রীয় শিক্ষা এবং সরকারি চাকরির অধিকার হরণ করা হয়েছে। যদিও নিজ এলাকায় কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করার অধিকার ছিল রোহিঙ্গাদের।

    রোহিঙ্গারা ১৯৭৮, ১৯৯১-১৯৯২, ২০১২, ২০১৫ ও ২০১৬-২০১৭ সালে সামরিক নির্যাতন এবং দমনের সম্মুখীন হয়েছে। জাতিসংঘ ও হিউম্যান রাইটস্ ওয়াচ মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো দমন ও নির্যাতনকে জাতিগত নির্মূলতা হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। যেখানে গণহত্যার মতো অপরাধের তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো।

    এ ছাড়া মিয়ানমার সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড পুলিশ এবং উগ্রবৌদ্ধ যুবকদের দ্বারা গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন অসংখ্য রোহিঙ্গা নারী। আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর। বুলড্রোজার দিয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর, স্কুল-কলেজ ও মসজিদ-মাদ্রাসা। রাখাইনের আদিবাসী রোহিঙ্গাদের কোনো স্মৃতিচিহ্নই অবশিষ্ট রাখেনি মিয়ানমার সরকার।

    জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের ভেতরে অতি জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধদের দ্বারা ঘৃণা এবং ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার শিকার হয়েছে। একই সঙ্গে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক বিচারবহির্ভূত হত্যা, অবৈধ গ্রেফতার, নির্যাতন, ধর্ষণ এবং জোরপূর্বক শ্রমে রোহিঙ্গাদের বাধ্য করছে সে দেশের সরকার। জাতিসংঘের মতানুসারে, রোহিঙ্গাদের ওপর চলা এ নির্যাতনকে মানবতাবিরোধী অপরাধ চিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।

    ২৫ আগস্ট ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের কথিত হামলায় ১২ জন নিরাপত্তাকর্মীসহ ৭০ জন বেসামরিক লোক নিহত হওয়ার অভিযোগে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ক্লিয়ারেন্স অপারেশন শুরু করে। যদিও রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি মিয়ানমার।

    রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার কোনো প্রামাণ্য ছবি, হামলার স্থান বা রোহিঙ্গাদের হামলায় নিহতের নাম-ঠিকানা পর্যন্ত প্রকাশ করতে পারেনি মিয়ানমার সরকার। যে কারণে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার বিষয়টি এখনও অনেকের কাছেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। শুধু রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা চালানোর অযুহাত তৈরি করতেই একটি বানোয়াট অপবাদ দেয়া হয়েছে রোহিঙ্গাদের ওপর।

    ক্লিয়ারেন্স অপারশেন-এ কয়েক হাজার রোহিঙ্গা নিহত হন, অর্ধলক্ষাধিক রোহিঙ্গা আহত, নির্যাতন ও অগণিত রোহিঙ্গা নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে তাদের প্রায় শতভাগ বাড়িঘর।

    ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাতে অপারেশন ক্লিয়ারেন্স নামে যে বর্বর হামলা চালানো হয়েছে রোহিঙ্গাদের ওপর, তা বিশ্বের ইতিহাসে জঘন্য হামলার নিকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে থাকবে। ২৫ আগস্ট সকাল থেকেই বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ এবং বান্দরবান জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে থাকে লাখো রোহিঙ্গা নামের মানুষ।

    এর মধ্যে বান্দরবানের নাইখ্যাংছড়ি উপজেলার তমরু, কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার উনচিপ্রাং, থাইংখালী এবং টেকনাফ উপজেলার শাহপরীদ্বীপ দিয়ে লাখো রোহিঙ্গার ঢল নামে বাংলাদেশের উদ্দেশে।

    মিয়ানমার সরকারের নির্দেশে সে দেশের সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড পুলিশ এবং নাইন সিক্স নাইন সংঘের উগ্র বৌদ্ধ যুবকরা রোহিঙ্গাদের লাখো বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে। গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে অসংখ্য নারী, পুরুষ এবং শিশুকে। খুন হওয়ার আগে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে হাজারো রোহিঙ্গা নারী। অনেক হতভাগ্য শিশুই প্রত্যক্ষ করেছে ইতিহাসের জঘন্যতম হামলার ভয়াবহতা। দাউ দাউ আগুনে জ্বলতে দেখেছে নিজ ঘরবাড়ি।

    কেউ কেউ বাবাকে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে দেখেছে, কেউ মাকে হত্যা হতে দেখেছে। আবার কেউ কেউ মা-বাবা দু’জনের হত্যাকাণ্ডের বিভীষিকাময় লোমহর্ষক স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে। কোনো কোনো শিশু মা ও বোনের ওপর পাষবিক নির্যাতনের স্মৃতি এখনও ভুলতে পারছে না। অনেক মায়ের কোল থেকে দুধের শিশুকে কেড়ে নিয়ে চোখের সামনেই আছড়ে হত্যা করেছে মিয়ানমার সেনারা। আবার রোহিঙ্গাদের ঘরে আগুন দিয়ে ছোট শিশুদের সেই আগুনে ছুড়ে দিয়ে পুড়ে হত্যা করেছে মিয়ানমারের ঘাতকরা।

    এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে ৭ হাজার ৮০০ রোহিঙ্গা শিশু মা ও বাবা দু’জনকেই হারিয়েছে। আর হারিয়ে যাওয়া মা-বাবার সংখ্যা ৪৩ হাজার। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা ১১ লাখ ১৮ হাজার।

    ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে লাখো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে যে যেভাবে পেরেছে। যারা মাতৃভূমি ছাড়তে চায়নি তারা পালিয়ে ছিল মিয়নমারের পাহাড়-জঙ্গলে। কিন্তু অবস্থার আরও অবনতি হলে ২০১৭ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত নির্যাতিত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। রাত বা দিন ছিল না, রোহিঙ্গারা যখন সুযোগ পেয়েছে তখই ঢুকে পরেছে বাংলাদেশের ভেতরে।

    বাংলাদেশ সরকার বা আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থাই ধারণা করতে পারেনি পৈশাচিক হামলার ভয়াবহতা। তাই একই সঙ্গে লাখো মানুষের ঢল ব্যবস্থাপনায় ছিল না কোনো শৃংখলা। স্বজনহারা, শোকাতুর ও আহত রোহিঙ্গাদের ছিল না থাকার ব্যবস্থা, খাবার ও পরিসংখ্যান। কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দা এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হৃদয়বানরা দু’হাত খুলে যে সহায়তা দিয়েছে তাতেই ছিল রোহিঙ্গাদের জীবন বাঁচানোর ভরসা। বিশৃংখলা ছিল সর্বত্র।

    রোহিঙ্গাদের এমন দুর্দশায় সেপ্টেম্বরের শুরুতে নিজ হাতে রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ তুলে কক্সবাজারে ছুটে যান প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সেপ্টেম্বরের ১৪ ও ২১ তারিখ উখিয়া ও টেকনাফে নিজ হাতে ত্রাণ বিতরণ করেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। আহত ও অসুস্থ রোহিঙ্গাদের চিকিৎসার জন্য উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যক্যাম্প।

    এ সময় বিশাল সমাবেশে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দাবি করেন, রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলমানদের নিরাপত্তায় জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে শান্তিরক্ষী পাঠাতে হবে। নাগরিকত্বের পূর্ণ মর্যাদায় রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমিতে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে হবে। আর নিশ্চিত করতে হবে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মৌলিক অধিকার।

    দাবি করেছিলেন রোহিঙ্গা শিশুদের সব অধিকার সুরক্ষিত করতে। এর পরও বিভিন্ন সভা-সমাবেশে একমাত্র পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদই রাখাইনে শান্তিরক্ষী প্রেরণের দাবি তুলেছেন। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত এই দাবিতে সোচ্চার রয়েছেন পল্লীবন্ধু। রোহিঙ্গাদের তালিকা তৈরি এবং ত্রাণ বিতরণের সম্পূর্ণ ব্যবস্থাপনা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ওপর ন্যস্ত করতে বাংলাদেশ সরকারকে তিনিই পরামর্শ দিয়েছিলেন।

    তখন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দাবি ও পরামর্শ সব মহলেই প্রশংসা কুড়িয়েছে। বাস্তবধর্মী এই দাবির সঙ্গে ওই সময়ে একাত্মতা ঘোষণা করেছে দেশি-বিদেশি অনেক ব্যক্তিত্ব ও সংগঠন। ত্বরিৎগতিতে সরকার সেনাবাহিনী মোতায়েন করে রোহিঙ্গাদের তালিকা তৈরি এবং ত্রাণ বিতরণের সার্বিক দায়িত্ব দেয়।

    এ ছাড়া ছড়িয়ে-ছিঁটিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের নির্দিষ্ট এলাকায় ৩২টি ক্যাম্পে ব্লক অনুযায়ী ঘর তুলতে এবং অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করে। এতে হতভাগ্য রোহিঙ্গাদের জীবনের নিরাপত্তা, খাদ্য ও আবাসনের নিশ্চয়তা মেলে।

    কিন্তু রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিষয়ে বাস্তবসম্মত এবং সব পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য কোনো পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি দু’বছরে। ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে একটি দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তির আলোকে একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়। এই ওয়ার্কিং গ্রুপের ৩টি সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে সময় ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের একটি সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু নিরাপত্তার প্রশ্নে রোহিঙ্গারা ১৫ নভেম্বর মিয়ানমারে ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া আবারও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।

    ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আশাহত হয়েছি কারণ, আমাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্থায়ী ও টেকসই প্রত্যাবাসন শুরু করা সম্ভব হয়নি।

    মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী দেশ। প্রথম থেকেই আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার একটা শান্তিপূর্ণ সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছি।

    রোহিঙ্গাদের ওপর ঘটে যাওয়া অত্যাচার এবং অবিচারের বিষয়টি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো, বিশেষ করে জাতিসংঘ, গুরুত্বসহকারে দেখবে বলে আশা করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

    এ সময়, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানের লক্ষ্যে পাঁচটি পদক্ষেপ নেয়ার প্রস্তাব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১. অনতিবিলম্বে এবং চিরতরে মিয়ানমারে সহিংসতা ও জাতিগত নিধন, নিঃশর্তে বন্ধ করা। ২. অনতিবিলম্বে মিয়ানমারে জাতিসংঘের মহাসচিবের নিজস্ব একটি অনুসন্ধানী দল প্রেরণ করা। ৩. জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সব সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান করা এবং এ লক্ষ্যে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সুরক্ষা বলয় গড়ে তোলা। ৪. রাখাইন রাজ্য হতে জোরপূর্বক বিতাড়িত সব রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে তাদের নিজ ঘরবাড়িতে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা। ৫. কফি আনান কমিশনের সুপারিশমালার নিঃশর্ত পূর্ণ এবং দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।

    ২০১৯ সালের ১৮ জানুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তেনিও গুতেরেস বলেন, রোহিঙ্গাদের দুর্দশার পাশাপাশি তাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের উদ্যোগহীনতা আমাকে ভীষণভাবে হতাশ করেছে। যদিও রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছামূলক প্রত্যাবাসনের পরিবেশ তৈরির জন্য আমাদের চাপ অব্যাহত রয়েছে। তারপরও পরিস্থিতির অগ্রগতি অতি ধীর বলেই মনে হচ্ছে।

    এ বছর জানুয়ারি মাসেই জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) প্রধান ফিলিপ্পো গ্রান্ডির রাখাইন পরিদর্শনের পরিকল্পনা ছিল। যা মিয়ানমার সরকার বাতিল করে দিয়েছে।

    ২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে নিয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের আয়োজন করে চীন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ওই আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলরের দফতরের মন্ত্রী কিউ টিন্ট সোয়ে। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বৈঠকে যোগ দেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।

    বৈঠকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাখাইনের ইতিহাস যেহেতু জটিল, তাই এর সমাধান দুই দেশের স্বার্থ এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার নিরিখে হতে হবে। সমস্যাটি অনিবার্যভাবে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের। জাতিসংঘ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে ওয়াং ই জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ইতিবাচক ভূমিকার প্রত্যাশা করেন।

    ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বরের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বন্ধ হলেও বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতা সচল ছিল। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন মিয়ানমার, ভারত ও চীনসহ বিভিন্ন ফোরামে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

    সর্বশেষ ২২ আগস্ট রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের নতুন তারিখ ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সব প্রক্রিয়াই সম্পন্ন করা হয়েছিল। বাংলাদেশ সরকার রাখাইনের অধিবাসী ১০৩৭টি রোহিঙ্গা পরিবারের তালিকা মিয়ানমারের কাছে পাঠিয়েছিল। সেই তালিকা থেকে ৩৫৪০ শরণার্থীকে মিয়ানমার সরকার গ্রহণ করতে রাজিও হয়েছিল। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব শরাণার্থীবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউএনএইসিআর তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গাদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে।

    টেকনাফের ২৪, ২৬ ও ২৭ নম্বর ক্যাম্পের শরণার্থীদের পরিবহনে বাস, ট্রাক ও মাইক্রোবাস ও রেডি ছিল। কিন্তু সাক্ষাৎকার দিতে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীরা মিয়ানমারে ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। আবার অনেক রোহিঙ্গাই ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যায় অন্য ক্যাম্পে। মিয়ানমার ও চীনের প্রতিনিধিদের সামনেই আবারও মুখ থুবড়ে পড়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া।

    তুমরু নোম্যানসল্যান্ডে আশ্রয় ক্যাম্পে রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ জানান, নাগরিকত্বে অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সব সংঘাত বন্ধ করে জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। নিজ নিজ বাড়িঘরে ফিরে যেতে এবং ব্যক্তিগত সব সম্পদ ফিরিয়ে দিতে হবে। একই ক্যাম্পের মো. আরিফ জানান, ২০১৭ সালের লোমহর্ষক হামলার বিচার করতে হবে। তাদের এই দাবি পূরণ হলেই রোহিঙ্গা শরাণার্থীরা মিয়ানমারে ফিরে যাবে। তারা বলেন, মিয়ানমার সরকারকে বিশ্বাস করা যায় না। তারা মনে করেন শর্তহীনভাবে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া মানেই আবারও মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়া। যেটা কোনো রোহিঙ্গাই আর চাইবে না।

    শতভাগ রোহিঙ্গাই মিয়ানমার সরকারকে বিশ্বাস করতে পারে না। এখনও মিয়ানমার সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড পুলিশ…বিজিপি এবং নাইন সিক্স নাইন সংঘের বৌদ্ধ যুবকদের নৃশংস হত্যা, ধর্ষণ আর অগ্নিসংযোগ ভুলতে পারেনি রোহিঙ্গারা। তারা মনে করেন, জাতিসংঘের আগামী সাধারণ অধিবেশনে মিয়ানমার সরকার আন্তর্জাতিক মহলের চাপ এড়াতেই শর্তহীন প্রত্যাবাসনের নামে প্রতারণা শুরু করছে। আর এ কারণেই ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর এবং ২০১৯ সালের ২২ আগস্টের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় মিয়ানমারে ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা।

    এমতাবস্থায়, শুধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দেয়া ফর্মুলাই রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে পারে। সে জন্য জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারের রাখাইনে শান্তিরক্ষী পাঠাতে হবে। আর রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। কর্ম, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ মৌলিক অধিকার দিতে হবে রোহিঙ্গাদের। বিচার করতে হবে মিয়ানমারে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মানবতাবিরোধী অপরাধের। দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতে হবে গণহত্যা, গণধর্ষণ আর অগ্নিসংযোগের বিচারে। আর এ জন্য প্রতিবেশী দেশ ভারত ও চীনসহ বিশ্ব সম্প্রদায়কে আন্তরিকভাবে উদ্যোগী হতে হবে।

    লেখক: খন্দকার দেলোয়ার জালালী

    সাংবাদিক, রোহিঙ্গাদের নির্যাতন নিয়ে লেখা রক্তাক্ত রাখাইন বইয়ের লেখক

    জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    ‘জাতীয় এখন এরশাদের প্রত্যাবাসনে ফর্মুলা ভরসা রোহিঙ্গা
    Related Posts
    ফয়েজ আহমদ

    মার্কিন বিনিয়োগকারীদের ডিজিটাল খাতে বিনিয়োগে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবের আহ্বান

    September 12, 2025
    রিটার্নিং কর্মকর্তা

    জাবি শিক্ষক জান্নাতুলের মৃত্যুর দায় প্রশাসনের: রিটার্নিং কর্মকর্তা

    September 12, 2025
    Rajuk

    রাজউক অধ্যাদেশে বড় পরিবর্তন আসছে

    September 12, 2025
    সর্বশেষ খবর
    Charlie Kirk shooting suspect

    Fact Check: Tyler Robinson Social Media Profiles Linked to Charlie Kirk Shooting Suspect After Manhunt

    Leonardo DiCaprio Paul Thomas Anderson film

    Leonardo DiCaprio Eager to Star in Paul Thomas Anderson’s New Film

    agrochemical exports

    India’s Agrochemical Exports Surge to $3.3 Billion, Becoming Global Powerhouse

    Tyler Robinson Charlie Kirk shooting

    Who Is Tyler Robinson, Charlie Kirk Shooting Suspect Identified After Manhunt

    Charlie Kirk shooting

    Mystery Book “The Shooting of Charlie Kirk” Sparks Author Search

    Nolan Hansen CAA

    MrBeast Producer Nolan Hansen Signs With CAA

    iPhone Air China eSIM delay

    Apple Delays iPhone Air Launch in China Over eSIM Regulatory Hurdles

    Best Borderlands 4 Vex Build

    Borderlands 4 Siren Build Dominates Endgame

    best state for retirees

    Delaware Named Best State for Retirees in New National Study

    Utah student Charlie Kirk death

    Who Is the Shooter of Charlie Kirk? Suspect Identified After Utah Attack

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    • Feed
    • Banglanews
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.