আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীকে সহায়তা করা কয়েক হাজার আফগান অনুবাদক ও অন্যদের ভিসা প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি জুলাইয়ের শেষ দিকে তাদের যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার কার্যক্রম শুরু হতে পারে। আফগান অনুবাদক তাদের পরিবারসহ এই আশ্রয় প্রার্থীর সংখ্যা এক লাখ ছাড়াতে পারে।
বুধবার (১৪ জুলাই) এক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা এমন খবর দিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশে আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনী ও মিত্রদের সহায়তাকারী আফগান নাগরিক এবং তাদের পরিবারকে যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরের ফ্লাইট চালু হতে যাচ্ছে। খবর রয়টার্সের।
অনুবাদকদের মধ্যে যারা যুক্তরাষ্ট্রে যেতে প্রস্তুত, তারা মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইরাক ও আফগান অনুবাদকদের জন্য বিশেষ অভিবাসন ভিসা কর্মসূচির অধীন আবেদন করেছেন।
গত দুদশক ধরে মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনীর সঙ্গে কাজ করা আফগান অনুবাদকরা তালেবানের প্রতিহিংসার ভয়ে দিন পার করছেন। এখন পর্যন্ত ১৮ হাজার অনুবাদককে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় দেওয়ার জন্য যোগ্য বলে বিবেচনা করা হয়েছে। তাদের পরিবারসহ এই আশ্রয় প্রার্থীর সংখ্যা এক লাখ ছাড়াতে পারে।
পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, আফগান অনুবাদকদের যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরের বিষয়টি দেখভাল করবে মার্কিন সামরিক বাহিনী। তাদের প্রথমে বিদেশে মার্কিন ঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। তবে সব অনুবাদক আফগানিস্তান ছাড়তে ইচ্ছুক না।
মার্কিন বাহিনীর জন্য কাজ করা আফগানদের একটি বড় সংখ্যাকে হত্যা করেছে তালেবান। এছাড়াও অনুবাদকদের অনেকেই হত্যার হুমকি পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
এদিকে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাপ্রত্যাহারকে ভুল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ। এতে আফগান নারী ও শিশুরা ‘অবিশ্বাস্য খারাপ’ পরিণতির মুখোমুখি হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি করে দিয়েছেন তিনি।
বার্লিনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলেকে তিনি বলেন, আমি এমনটিই মনে করি যে, এতে আফগান নারী ও শিশুরা অবিশ্বাস্য খারাপ পরিণতির মুখোমুখি হবে। আমার মনে হয়, পরিস্থিতি চরম খারাপ অবস্থার দিকে যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই সাবেক প্রেসিডেন্টই আফগান যুদ্ধ শুরু করেছিলেন। ২০০১ সালের ১১ সেপেম্বরে টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার পর আফগানিস্তানে তিনি সেনা পাঠিয়েছিলেন।
বুশ সাধারণত তার উত্তরসূরির সিদ্ধান্ত নির্ধারণের সমালোচনায় অনিচ্ছুক। কিন্তু আফগানিস্তান থেকে যখন মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হচ্ছে, তখন তালেবানের অগ্রযাত্রায় দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আমার শঙ্কা, আফগান নারী ও শিশুরা অবর্ণনীয় ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। তারা আতঙ্কিত।
এদিকে প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ক্রোসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছে আফগানিস্তানের তালেবান বিদ্রোহীরা। দেশটি থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত এটিই তাদের সবচেয়ে বড় কৌশলগত অগ্রযাত্রা।
বুধবার (১৪ জুলাই) পাকিস্তানি কর্মকর্তারা বলেন, পাকিস্তানি শহর চামাম ও আফগান শহর ওয়েশের মধ্যকার সীমান্ত ক্রোসিংয়ের ফ্রেন্ডশিপ ফটক থেকে আফগান সরকারের পতাকা নামিয়ে দিয়েছে তালেবান।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আফগানিস্তানের কান্দাহারের দক্ষিণে এই ক্রোসিংয়ের অবস্থান। যা স্থলবেষ্টিত দেশটির দ্বিতীয় ব্যস্ততম সীমান্ত প্রবেশ পথ। এছাড়া আফগানিস্তানের বিপুল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে পাকিস্তানের বন্দরের মূল সংযোগ হচ্ছে এই ক্রোসিং।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।