জুমবাংলা ডেস্ক: ময়মনসিংহে এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে বোরো ধান আবাদ। সেইসঙ্গে বাম্পার ফলন হয়েছে। এখন ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। ফলন ভালো হওয়ায় খুশি তারা। বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদক আতাউর রহমান জুয়েল-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিস্তারিত।
সদরের পাড়াইল গ্রামের রুহুল আমিন চলতি মৌসুমে ৯০ শতক জমিতে ব্রি-২৮ ও ৫৮ জাতের ধান চাষ করেছেন। বীজতলা তৈরিতে এক হাজার ৫০, জমি চাষে তিন হাজার, চারা রোপণে তিন হাজার ৬০০, স্যার বাবদ চার হাজার ৮০০, কীটনাশক বাবদ এক হাজার ২০০, সেচ বাবদ ছয় হাজার ও ধান কাটার শ্রমিক বাবদ ছয় হাজার টাকা খরচ হয়েছে তার। সবমিলে খরচ করেছেন ২৫ হাজার ৬৫০ টাকা। ধান ঘরে তুলতে পেরেছেন ৩৬ মণ।
এবার বোরো মৌসুমে প্রতি কেজি ধানের দাম ৩০ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। সে হিসাবে প্রতি মণ এক হাজার ২০০ টাকা। এই হিসাবে ৩৬ মণ ধানের দাম ৪৩ হাজার ২০০ টাকা। ফলে খরচ বাদে ১৭ হাজার ৫৫০ টাকা লাভ পাচ্ছেন রুহুল আমিন।
এবার বৃষ্টি কম হলেও ধানের ফলন ভালো হয়েছে উল্লেখ করে কৃষক রুহুল আমিন বলেন, ‘তবে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলে আরও বেশি ফলন হতো। লাভের পরিমাণ আরও বাড়তো। আগামীতে আরও বেশি জমিতে বোরো আবাদ করবো।’
শুধু রুহুল আমিন নন, বোরোর ভালো ফলন পেয়ে খুশি জেলার কৃষকরা। সদরের গোপালনগর গ্রামের তালেব উদ্দিন বলেন, ‘এবার বোরোর ফলন ভালো হয়েছে। কাঁচা ধান হওয়ায় বাজারে দাম কিছুটা কম। তবে এখন বিক্রি না করে শুকিয়ে ঘরে রেখে দিতে পারলে আরও বেশি লাভবান হবেন কৃষকরা।’
ঋণ করে জমি আবাদ করায় কম দামে কাঁচা ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানালেন সদরের বোরোরচর গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এবার ফলন ভালো হয়েছে। ধান ঘরে তুলছেন কৃষকরা। তবে কাঁচা ধান বিক্রি করায় বাজারে সরকারি দাম পাচ্ছি না।’
এবার এক একর জমিতে বোরো আবাদ করেছেন সদরের কুষ্টিয়া গ্রামের শাহেদ আলী। তিনি বলেন, ‘অর্ধেক জমির ধান কেটে ঘরে তুলেছি। বাকি ধান এখনও কাঁচা। কয়েকদিনের মধ্যে কাটতে পারবো। তবে গতবারের চেয়ে এবার ফলন ভালো হয়েছে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, ময়মনসিংহ জেলায় চলতি বোরো মৌসুমে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল দুই লাখ ৬২ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমি। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে দুই লাখ ৬২ হাজার ৯৮৫ হেক্টর। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১ লাখ ১২ হাজার ৫১৮ মেট্রিক টন। তবে বেশি জমি আবাদ হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
এবার বোরো আবাদে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. মতিউজ্জামান। তিনি বলেন, ‘বেশি জমিতে আবাদ ও বাম্পার ফলন হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত ৩৭ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় কৃষকরা ধান কেটে ঘরে তুলতে পারছেন। আশা করছি, বিক্রি করে লাভবান হবেন তারা।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।