্ ডেস্ক : সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে পরিবার পরিজন ছেড়ে যুবক দীপু হোসেন শ্রমিক হিসেবে পাড়ি জমান লিবিয়াতে। সেখানে দীর্ঘ আট বছর থাকার পর উন্নত জীবন যাপনের জন্য ইতালি যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু একটি সংঘবদ্ধ মানব পাচার চক্রের খপ্পরে পড়ে যান। ইতালিতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে লিবিয়াতে তাকে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখে। এরপর শারীরিক নির্যাতনসহ তার পরিবারের কাছে মোটা অংকের টাকা মুক্তিপণ দাবি করে মানব পাচার চক্রের সদস্যরা।
নিরুপায় হয়ে ভুক্তভোগীর বড় ভাই মতিউর রহমান বুলু বাদী হয়ে গত ১৭ আগস্ট নওগাঁ সদর থানায় মানব পাচার চক্রের সদস্যের দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে পরে সেটি মানব পাচার আইনে মামলায় দায়ের করা হয়। মামলার পর পুলিশি তৎপরতা দুই সহযোগীকে আটক করা হয়।
ভুক্তভোগী দীপু হোসেন নওগাঁ সদর উপজেলার সাহাপুর (মাস্টারপাড়া) গ্রামের মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে।
আটকরা হলেন কুমিল্লার চান্দিনা থানার আটচাইল গ্রামের হিরন মিয়ার ছেলে নাভিদ হাসান ও লেবাশ প্রধানিয়া বাড়ি গ্রামের মৃত আবু তাহেরের ছেলে কামাল হোসেন।
শুক্রবার দুপুরে নওগাঁ পুলিশ লাইন ড্রিল সেডে পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, আট বছর দীপু হোসেন লিবিয়াতে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত। তিনি আরো উন্নত জীবন যাপনের আশায় লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার জন্য চেষ্টা করাকালীন সময় একটি সংঘবদ্ধ মানব পাচার চক্রের খপ্পরে পড়েন। গত ১৪ আগস্ট সংঘবদ্ধ মানবচক্রের মূল হোতা লিবিয়া প্রবাসী ইয়াসিন মিয়া এবং কামাল হোসেনসহ আরো কয়েকজন মানব পাচারকারী দীপুকে সাগর পথে ইতালি পাঠানোর কথা বলে নিয়া যায়। লিবিয়ার অজ্ঞাত স্থানে তাকে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতনসহ তার পরিবারের সদস্যদের কাছে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে তাকে হত্যা করে সাগরে ফেলে দেওয়ার হুমকি প্রদান করেন তারা। মুক্তিপণের টাকা বাংলাদেশে তাদের সহযোগী নাভিদ হাসান ও কামাল হোসেনের কাছে বিকাশের মাধ্যমে পাঠাতে বলে।
তিনি বলেন, ভুক্তভোগী দীপুর বড় ভাই মতিউর রহমান বুলু মানবপাচার চক্রের সহযোগী নাভিদ হাসান ও কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে নওগাঁ সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ করেন। পরে সেটি একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে ১৯ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) একেএম মামুন চিশতী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) গাজিউর রহমান, সদর থানার ওসি নজরুল ইসলাম, এসআই নাজমুল জান্নাত শাহ এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রবিউল ইসলাম ফোর্সসহ কুমিল্লাসহ আশেপাশের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় কুমিল্লার চান্দিনা থানার দোল্লাই নবাবপুর তাদের গ্রেফতারের পর জিম্মি থাকা ভুক্তভোগী দীপুকে লিবিয়ায় মানব পাচার চক্রের অন্যান্য সদস্যরা ছেড়ে দেয়।
আবদুল মান্নান মিয়া আরো বলেন, ভিকটিম দীপুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এখন বিপদমুক্ত এবং সুস্থভাবে আছেন বলে জানা যায়। আইনানুগ ব্যবস্থা শেষে বিকেলে আসামিদের জেল হাজতে পাঠানো হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।