বিনোদন ডেস্ক: এ সময়ের জনপ্রিয় ও বর্তমানে নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লুঙ্গিকে ‘অশ্লীল পোশাক’ বলার পর তা ভাইরাল হয়ে যায়। গত শনিবার মধ্যরাতে এ মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের ঝড় শুরু হয়। পক্ষে বিপক্ষে হাজার হাজার স্ট্যটাস লিখেন ফেসবুক ব্যবহারকারীরা। শুধু তসলিমা নাসরিনের ওই মন্তব্যের নিচে ২৯ হাজার লাইক, ১৬ শ শেয়ার হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার (৩০ জানুয়ারি) রাতে ফের লুঙ্গি প্রসঙ্গে আরও একটি মন্তব্য করে পরিস্থিতিকে হালকা করার চেষ্টা করেছেন তসলিমা। পাশাপাশি ক্ষোভও প্রকাশ করেন তিনি। তসলিমা এই মন্তব্যে জানান, ‘যেইনা মজাচ্ছলে লুঙ্গি নিয়ে লিখলাম, অমনি পুরুষজাতি ক্ষেপে আগুন।’
তিনি আরও বলেন, আমাদের উপমহাদেশীয় সমাজের অধিকাংশ পুরুষ বিশ্বাস করেন ধর্ষণের কারণ মেয়েদের পোশাক। তাঁরাও সরবে না হলেও নীরবে বিশ্বাস করেন মেয়েদের পোশাকের কারণেই ধর্ষণ ঘটে, যাঁরা আজ বলছেন পুরুষের লুঙ্গি নিয়ে কথা বলার অধিকার কোনও মেয়ের নেই। আমি লুঙ্গি নিয়ে কথা বলার স্পর্ধা দেখিয়েছি বলে আমাকে নানা ভাবে হেনস্থা করছেন।
তসলিমা এ প্রসঙ্গে আরও লিখেছেন, কেউ কেউ বলছেন, ‘প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালি পুরুষের পোশাক লুঙ্গি’। তাঁদের কোনও ধারণা নেই যে বাঙালি পুরুষের নির্দিষ্ট কোনও পোশাক নেই। পোশাকের বিবর্তন প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে। প্রাচীনকালে বাংলার পুরুষেরা গাছের বাকল পরতো। পরে কার্পাস তুলোর সুতোয় বানানো সেলাইবিহীন ল্যাংগোট পরতো। আরও পরে এসেছে ধুতি, তখন খাটো ধুতি পরতো। লুঙ্গি তো এই সেদিনকার।
তিনি এ প্রসঙ্গে আরও জানান, কোনও কোনও বিজ্ঞ বলছেন ‘পোশাক ব্যাপার নয়, প্যান্ট পাজামা পরেও পুরুষেরা অশ্লীল আচরণ করতে পারে, সমস্যা মানসিকতায়, পোশাকে নয়।’ আমার যেন জানতে বাকি রয়েছে প্যান্ট-পরা পুরুষদের অশ্লীলতা সম্পর্কে, তাঁদের নারীবিদ্বেষী মানসিকতার ব্যাপারে।
তিনি পুরুষদের পরামর্শ দেন, লুঙ্গি পরলেও আণ্ডারওয়্যার পরা উচিত বলে আমি মনে করি। লুঙ্গিকে আমি পোশাক হিসেবে পছন্দ না করলেও আমি কিন্তু বলিনি লুঙ্গিকে আইন করে নিষিদ্ধ করা হোক। তসলিমা মনে করেন, এমনিতে এটি একদিন বিলুপ্ত হবে, শাড়ি যেমন ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।