বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক: ইঁদুরের তালজ্ঞান আছে বলে আবিষ্কার করেছেন ইউনিভার্সিটি অফ টোকিওর একদল গবেষক। শুধু তাই নয়, লেডি গাগা আর কিংবদন্তী ব্যান্ড কুইনের গানে মাথা দুলিয়ে নাচেও ইঁদুরগুলো।
শুক্রবার বিজ্ঞান সাময়িকী ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’-এ প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মিনিটে ১৩২ বিটের গানের তাল ধরতে পারে ইঁদুরগুলো। গানের তাল ধরতে পারা এবং তার সঙ্গে মিলিয়ে নড়াচড়া করার সক্ষমতা কেবল মানুষেরই আছে বলে এতদিন ভেবে এসেছেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষণার কাজে ১০টি ইুঁদুর ব্যবহার করেছেন ইউনিভার্সিটি অফ টোকিওর গবেষকরা। প্রতিটি ইঁদুরের মাথার নড়াচড়ার তথ্য সংগ্রহ করার জন্য জুড়ে দেওয়া হয়েছিল তারহীন অ্যাক্সেলেরোমিটার।
তারপর ইঁদুরগুলোকে লেডি গাগার ‘বর্ন দিস ওয়ে’, কুইনের ‘অ্যানাদার ওয়ান বাইটস দ্য ডাস্ট’, মোৎসার্টের ‘সোনাটা ফর টু পিয়ানোস ইন ডি মেজর’, মাইকেল জ্যাকসনের ‘বিট ইট’ এবং মেরুন ফাইভের ‘সুগার’ গানগুলো স্পিকারে বাজিয়ে শুনিয়েছেন।
গানগুলো থেকে এক মিনিটের ট্র্যাক নিয়ে চারটি ভিন্ন গতিতে ১০টি ইঁদুর এবং ২০ জন মানুষকে বাজিয়ে শোনান গবেষকরা। প্রতি মিনিটে গানের বিট ১২০ থেকে ১৪০-এর মধ্যে থাকলে ইঁদুরগুলোর সহজেই গানের তাল ধরতে পারছে বলে আবিষ্কার করেন তারা।
গবেষণা প্রসঙ্গে নিউ ইয়র্ক পোস্ট জানিয়েছে, আকারে ছোট প্রাণীগুলো মানুষের চেয়ে দ্রুত তালের গান বেশি পছন্দ করে কি না এবং এর সঙ্গে হৃদস্পন্দন এবং দেহের আকৃতির মতো শারীরিক বিষয়ের কোনো যোগসূত্র আছে কি না, সে বিষয়ে অনুসন্ধান চালাচ্ছিলেন গবেষকরা।
কিন্তু গবেষণায় উঠে এসেছে, মানুষের মতোই প্রতি মিনিটে ১২০ বিটের কাছাকাছি গান শুনতে পছন্ত করে ইঁদুররা।
“কোনো প্রশিক্ষণ বা আগের অভিজ্ঞতা ছাড়াই, মিনিটে ১২০ থেকে ১৪০ বিটের গানের সঙ্গে তাল মেলানোর সক্ষমতা দেখিয়েছে ইঁদুরগুলো। ওই একই গতির গানের সঙ্গে তাল মেলাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে মানুষও,” এক সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন ইউনিভার্সিটি অফ টোকিও সহযোগী অধ্যাপক হিরোকাজু তাকাহাসি।
গানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষের মতোই ইঁদুরও মাথা নাড়ায় বলেও আবিষ্কার করেছেন গবেষকরা। গানের গতি বাড়ালেই কমে আসছিল মাথা নাড়ানোর গতি।
“আমাদের জানা মতে, প্রশিক্ষণ বা গান শোনার অভিজ্ঞতা নেই এমন কোনো প্রাণীর মধ্যে তাল সমন্বয়ের অভ্যন্তরীণ সক্ষমতার প্রথম প্রমাণ এটি,” বলেন তাকাহাশি।
সামনের দিনগুলোতে গানের মেলোডি এবং হারমোনির সঙ্গে মস্তিষ্কের কার্যক্রমের সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা চালাতে আগ্রহী এই গবেষক।
“আমি বিশ্বাস করি, এই প্রশ্নটি আমাদের মস্তিষ্ক কীভাবে কাজ করে বোঝার এবং পরবর্তী প্রজন্মের এআই নির্মাণের চাবিকাঠি। তাছাড়া, একজন প্রকৌশলী হিসেবেও সুখী জীবন পেতে গানের ব্যবহার নিয়ে আগ্রহী আমি,” বলেন তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।