আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রতি বছর গড়ে চার হাজার ছয়শ কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে ভারতের রাষ্ট্রীয় বিমান পরিবহন সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া। পাশাপাশি মাথার ওপর চেপে বসেছে ঋণের বোঝা। এমন অবস্থায় এয়ার ইন্ডিয়াকে পুরোপুরি বেসরকারি মালিকানায় ছেড়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় সরকার।
একটি সাক্ষাৎকারে ভারতের অর্থমন্ত্রী সীতারমণ বলেছেন, এয়ার ইন্ডিয়ার লোকসান আর বইতে পারছে না সরকার। আগামী মার্চের মধ্যে এটি পুরোপুরি বেসরকারি মালিকানায় ছেড়ে দেয়া হবে। একই কারণে এয়ার ইন্ডিয়ার পাশাপাশি ভারত পেট্রোলিয়ামও বিক্রি করে দেওয়া হবে।
আগামী বছরের মার্চের মধ্যেই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া ও ভারত পেট্রোলিয়াম বিক্রি করে দেওয়া হবে। শনিবার এমন কথাই জানালেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। খবর: দ্য ওয়াল।
একটি ইংরেজি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমরা এ নিয়ে এগোচ্ছি, আশা করছি এই অর্থবর্ষের মধ্যেই কাজ সম্পূর্ণ করতে পারব।” রাষ্ট্রাযত্ত সংস্থা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনার কথা জানতে চাওয়া হলে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ জানান, চলতি অর্থবর্ষে সরকার এই প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে এক লক্ষ কোটি টাকা তুলতে চায়।
তিনি দাবি করেন, এয়ার ইন্ডিয়া নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ দেখেছেন। আন্তর্জাতিক রোড-শোতেও এ নিয়ে উৎসাহ দেখেছেন। যদিও ক্রমাগত লোকসানে চলা এই সংস্থা বিক্রি করতে গিয়ে ধাক্কা খেয়েছে সরকার। এখন কোষাগারের অবস্থা শোচনীয়। এই অবস্থায় সরকার চাইছে অর্থের সংস্থান করতে।
সীতারমণ জানান, আর্থিক শ্লথগতি কাটিয়ে বেরিয়ে আসার জন্য সরকার সময়োচিত পদক্ষেপই করছে, যে সব ক্ষেত্র সমস্যায় পড়েছিল, তারা ক্রমেই এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত শিল্পপতিরা নতুন করে বিনিয়োগ টানার ব্যাপারে কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
জিএসটি সংগ্রহ যে আশানুরূপ হচ্ছে না, সে কথাও বলেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী, তবে যে সব জায়গায় ফাঁকফোকর রয়েছে সেগুলি মেরামত করে ফেলায় সংগ্রহ আবার বাড়বে বলে মনে করছেন তিনি। এসার স্টিল নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের প্রভাব আগামী ত্রৈমাসিকেই ব্যাঙ্কগুলির ব্যালান্সশিটে পড়বে বলেই তিনি মনে করেন। এর ফলে দেউলিয়া আইনের ভিত আরও মজবুত হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
ভোগ্যপণ্যের ক্ষেত্রে উপভোক্তাদের মানসিকতা বদলাচ্ছে বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। উৎসবের মরসুমে ব্যাঙ্কে ঋণের চাহিদা ১.৮ লক্ষ কোটি টাকা ছিল বলে তিনি জানিয়েছেন। ঘুরিয়ে তিনি প্রশ্ন করেন, “যদি ক্রেতাদের আগ্রহ না বেড়ে থাকে তা হলে তা হলে ব্যাঙ্কের মাত্র দু’টি প্রোগ্রামের মাধ্যমে এত টাকা ঋণ দিতে পারে?” তিনি সারা দেশের অঙ্কটাই বলেছেন।
দেশের অর্থনীতি বৃদ্ধির হার নিম্নমুখী। বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাহিদা কমছে। গ্রামাঞ্চলেও চাহিদা কমেছে বলে ন্যাশলা স্যাম্পেল সার্ভের রিপোর্টে দেখা গেছে। এই অবস্থায় দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। অর্থনীতিবিদদের একাংশ অবশ্য মনে করছেন, বিশ্ববাজারেই এখন অর্থনীতির শ্লথগতি চলছে। সেই তুলনায় ভারতের অবস্থায় ভাল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।