জুমবাংলা ডেস্ক : খুলনা কয়রায় এক শিক্ষক তৃতীয় শ্রেণির শিশু শিক্ষার্থীকে মেরে আহত করার পর তার কাঁধে চেয়ার তুলে দিয়ে গ্রাম ঘুরিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ন্যক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার উপজেলার ৩৫ নম্বর দক্ষিণ মঠবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। আহত দিপজয় মন্ডল (৭) কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, স্কুল চলাকালে ওই শিশু শিক্ষার্থী স্কুলের একটি প্লাস্টিকের চেয়ার নিয়ে খেলছিলো। এসময় চেয়ারটি তার হাত থেকে ছুটে পড়ে গিয়ে ফেটে যায়। বিষয়টি জানতে পেরে স্কুলের সহকারী শিক্ষক মনিরুজ্জামান ওই শিশুকে থাপ্পড় মারেন। এতে শিশুটিতে মাটিতে পড়ে কান্নাকাটি করতে থাকে। কিন্তু এতেও ক্ষ্যান্ত হননি শিক্ষক মনিরুজ্জামান। তিনি প্রধান শিক্ষককে ডেকে এনে শিশুটিকে ব্যাপক বকাঝকা করে তার কাঁধে তুলে দেন ফাটা সেই প্লাস্টিকের চেয়ারটি। এরপর বলেন, ওই চেয়ার কাঁধে করে বাড়ি নিয়ে যাবি। আগামী দিন তোর বাপের কাছ থেকে নতুন চেয়ার কিনে নিয়ে স্কুলে আসবি। নইলে স্কুলে আসার দরকার নেই।
শিক্ষকের ভয়ে বহনে অক্ষম আহত শিশু কাঁদতে কাঁদতে চেয়ারটি কাঁধে তুলে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে যেতে থাকে। এ সময় স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকসহ শিক্ষার্থীরা তার পিছে পিছে থাকায় উৎসুক কিছু জনতাও ঘটনাটি জানতে আসে। এসময় ভয় ও অপমানে শিশুটি আরো ভেঙে পড়ে।
পরে শিশুটির বাড়িতে কেউ না থাকায় শিক্ষকরা স্কুলে ফিরে যান। যাওয়ার সময় তারা বলে যান আগামী দিন নতুন চেয়ার কিনে নিয়ে স্কুলে আসবি। শিশুটির দাদু প্রদীপ কুমার মন্ডল বলেন, আমার নাতি চোখ ও কানের যন্ত্রণায় সারারাত ছটফট করেছে। ওর কান্নাকাটিতে আমরা বাড়ির লোক কেউ ঘুমাতে পারিনি। সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়েছি। এখন অনেকটা সুস্থ হলেও এখনো তার আতঙ্ক কাটেনি। সে আর স্কুলে যেতে চাচ্ছে না। আমি এর বিচার চাই বলে কেঁদে ফেলেন প্রদীপ মণ্ডল।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক সুশান্ত কুমার পাল জানান, শিশুটির চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তার বাম চোখ ও বাম কানে মারাত্মক আঘাত লেগেছে। পুুরোপুরি সুস্থ হতে কিছুদিন সময় লাগবে।
সহকারী শিক্ষক মনিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বড়জোর আমাকে অন্যত্র বদলি করতে পারে। এর জন্য আমি আরো এক মাস আগে বদলির দরখাস্ত করে রেখেছি।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আসলে আমাদের ভুল হয়েছে। আমরা শিশুটির অভিভাবকের সাথে কথা বলেছি। বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চলছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবুল বাশার বলেন, ঘটনাটা আমরা শুনেছি। তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিমুল কুমার সাহা বলেন, বিষয়টা আমি শুনিনি। তবে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।