শীতকালে অনেকেই অতিরিক্ত ঠান্ডা অনুভব করেন, কারও কারও ক্ষেত্রে হাত–পা অসাড় হয়ে আসে। শুধু আবহাওয়া নয়—শরীরের কিছু পুষ্টির ঘাটতিও এই সমস্যার বড় কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশেষ করে কিছু ভিটামিন ও খনিজের অভাব শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়, ফলে স্বাভাবিকের তুলনায় শীত বেশি লাগে।

ভিটামিন বি১২: ঘাটতি হলে বেড়ে যায় শরীরের ঠান্ডা লাগা
ভিটামিন বি১২ শরীরে লোহিত রক্তকণিকা (আরবিসি) তৈরি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ভিটামিনের অভাবে পর্যাপ্ত আরবিসি তৈরি না হলে রক্তাল্পতা (অ্যানিমিয়া) দেখা দেয়। এতে রক্তে অক্সিজেন পরিবহনের ক্ষমতা কমে যায়।
ফল হিসেবে—
*হাত–পায়ে অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগা
*অসাড়তা
*ক্লান্তি ও মাথা ঘোরা
*শ্বাসকষ্ট
বিশেষজ্ঞদের মতে, বি১২ ঘাটতি সাধারণত প্রাণিজ উৎসের খাবার কম খেলে হয়।
আয়রনের অভাব: শীত অনুভূতির প্রধান কারণ
আয়রন ঘাটতিও রক্তাল্পতার অন্যতম কারণ। এতে রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যায়, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছায় না।
এর ফলে—
*হাত–পায়ের তাপমাত্রা কমে যায়
*শীত সহ্য করার ক্ষমতা হ্রাস পায়
*শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে
মহিলাদের ক্ষেত্রে আয়রন ঘাটতি তুলনামূলক বেশি দেখা যায়।
ভিটামিন ডি: কমে গেলে দুর্বল হয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
ভিটামিন ডি কম হলে ফুসফুসের কার্যকারিতা ব্যাহত হয় এবং শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এসব সংক্রমণ শরীরকে সংবেদনশীল করে তোলে এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যাহত করে।
এ কারণে শীত বেশি অনুভূত হয় এবং ক্লান্তিও বেড়ে যায়।
আরও যেসব কারণে শীত বেশি লাগে
রক্তাল্পতা
ভিটামিন বি১২ বা আয়রনের ঘাটতি ছাড়াও অন্যান্য কারণে রক্তাল্পতা হতে পারে, যা শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে দেয়।
থাইরয়েডের সমস্যা
হাইপোথাইরয়েডিজমে শরীরের বিপাকক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। এতে—
*শরীরের তাপ উৎপাদন কমে
*হাত-পা ঠান্ডা থাকে
*অবসাদ, তন্দ্রাচ্ছন্নতা দেখা যায়
* হরমোন পরিবর্তন
বিশেষ করে নারীদের হরমোন ওঠানামা শীত–গরম সহ্যক্ষমতায় প্রভাব ফেলে। মেনোপজের সময় এ সমস্যাটি বেশি হয়।
কীভাবে বুঝবেন আপনার শীত লাগার কারণ পুষ্টির ঘাটতি কি না?
*বারবার হাত–পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া
*পায়ের আঙুল বা হাত অসাড় হয়ে থাকা
*অল্প কাজেই ক্লান্ত হয়ে পড়া
*মাথা ঘোরা, শ্বাসকষ্ট
*ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া
এ ধরনের লক্ষণ দেখলে রক্ত পরীক্ষা করে বি১২, আয়রন ও ভিটামিন ডি–এর মাত্রা জানা প্রয়োজন।
সমাধান কী?
*খাদ্যতালিকায় ডিম, দুধ, মাছ, মাংস, কলিজা—বি১২ সমৃদ্ধ খাবার যোগ করা
*আয়রন পাওয়ার জন্য সবুজ শাক, কলিজা, ডাল, বাদাম, খেজুর খাওয়া
*ভিটামিন ডি–এর জন্য রোদে থাকা এবং প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ
*থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে নিয়মিত পরীক্ষা ও চিকিৎসা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



