নভেম্বর মাসে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি আবারও কমেছে ৬ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ে ৪১২ কোটি ডলার রপ্তানি হলেও চলতি নভেম্বরের রপ্তানি হয়েছে ৩৮৯ কোটি ডলার, যা টানা চার মাস ধরে হ্রাসের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, শীর্ষ পাঁচ খাতের মধ্যে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য ছাড়া সব খাতের রপ্তানি কমেছে। এতে রয়েছে তৈরি পোশাক, পাট ও পাটজাত পণ্য, কৃষিপ্রক্রিয়াজাত পণ্য এবং হোম টেক্সটাইল। এছাড়া চামড়াবিহীন জুতা, হিমায়িত খাদ্য ও প্লাস্টিক পণ্যের রপ্তানিও হ্রাস পেয়েছে।
তৈরি পোশাকের রপ্তানি নভেম্বর মাসে ৩১৪ কোটি ডলার হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। তবে চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বরের পাঁচ মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি এখনও ১,৬১৩ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ০.৯ শতাংশ বেশি।
চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য দ্বিতীয় শীর্ষ রপ্তানি খাত হিসেবে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখিয়েছে। গত নভেম্বরের রপ্তানি হয়েছে ৯ কোটি ৮৯ লাখ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৫.১৪ শতাংশ বৃদ্ধি। চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর পর্যন্ত এই খাতের রপ্তানি হয়েছে ৫১ কোটি ডলার, যেখানে প্রবৃদ্ধি ৯.৮৮ শতাংশ।
পরিসংখ্যানগুলো দেখাচ্ছে, চামড়া খাতকে বাদ দিলে অন্যান্য প্রধান রপ্তানি খাতে স্থিতিশীলতা এখনও ধরে রাখা কঠিন। সরকারের জন্য এটি সতর্কতার সংকেত, যাতে রপ্তানি পতনের ধারা বন্ধ করা যায়।
দেশের তৃতীয় শীর্ষ রপ্তানি খাত কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য রপ্তানিতে ব্যাপক ধস নেমেছে। গত মাসে রপ্তানি হয়েছে ৮ কোটি ২৮ লাখ ডলারের পণ্য। এ রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ কম। চলতি অর্থবছরের পাঁচ মাসের হিসাবেও রপ্তানি কমেছে। এ সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৪৬ কোটি ডলারের পণ্য, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ৮১ শতাংশ কম।
চতুর্থ শীর্ষ রপ্তানি খাত পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি গত মাসে সাড়ে ১০ শতাংশ কমেছে। এ সময়ে রপ্তানি হয়েছে ৬ কোটি ৮৯ লাখ ডলারের পণ্য। গত বছরের নভেম্বরে রপ্তানি হয়েছে ৭ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের পণ্য। চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত ৩৫ কোটি ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
পঞ্চম শীর্ষস্থানীয় রপ্তানি খাত হোম টেক্সটাইলের রপ্তানিও কমেছে। গত নভেম্বরে রপ্তানি হয়েছে ৬ কোটি ৬৩ লাখ ডলারের হোম টেক্সটাইল। এ রপ্তানি গত বছরের নভেম্বরের তুলনায় ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ কম। যদিও সামগ্রিকভাবে এখনো হোম টেক্সটাইলের রপ্তানি ইতিবাচক আছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে ৩৪ কোটি ৫৪ লাখ ডলারের হোম টেক্সটাইল রপ্তানি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের আমদানির প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক হলেও সাম্প্রতিক রপ্তানি ধীরগতি আগামী মাসগুলোতে চাপ বাড়াতে পারে। বাজার বহুমুখীকরণ, প্রযুক্তিনির্ভর উৎপাদন, পরিবেশবান্ধব লিড সার্টিফাইড কারখানা, মূল্য প্রতিযোগিতার কৌশল দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করতে সহায়ক হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



