জুমবাংলা ডেস্ক : দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার পাল্লা ভারী হচ্ছে। এরই মধ্যে তার নামে হত্যা মামলাও হয়েছে। গত ৫ আগস্ট গণআন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে দেশে ফেরানো হবে কি না তা নিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের মুখোমুখি হয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন।
তিনি জানান, শেখ হাসিনাকে দেশ ফেরানোর বিষয়ে ভারতকে আহ্বান জানানো হবে কি না তা নিয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। বৃহস্পতিবার তিনি বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানান।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, শেখ হাসিনা অনেক মামলার মুখোমুখি। স্বরাষ্ট্র এবং আইন ও বিচার মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিলে আমাদের তাকে দেশে ফিরিয়ে দিতে বলতে হবে। তবে এটি ভারত সরকারের জন্য একটি বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করবে। ভারত এ বিষয়ে অবগত এবং তারা এটির বিষয়ে যত্নবান হবে। তবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, পররাষ্ট্র উপদেষ্টার এমন মন্তব্যের পর এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাৎক্ষণিক তাদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
গত ১ জুলাই থেকে দেশে শুরু হয় শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন। এই আন্দোলন ১৫ জুলাই থেকে সহিংসতায় রূপ নেয়। ১৬ জুলাই সংঘর্ষে নিহত হয় ছয়জন। ৫ আগস্ট পর্যন্ত এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ৪৩৯ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এর বাইরে গত ৬ আগস্ট পর্যন্ত আরও ১০৩ জনসহ দেশে মোট ৫৪২ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। ৭ আগস্টও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে যাওয়া আরও ২৬ জনের মরদেহ। যা নিয়ে আগস্টের ৭ তারিখ পর্যন্ত আন্দোলনে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৬৮।
এর আগে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়।
আন্দোলনে শিক্ষার্থীসহ এত বিপুল সংখ্যক লোক নিহতের ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি তার দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদেরও অভিযুক্ত করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক বিচার ট্রাইবুনালের উপপরিচালক আতাউর রহমান জানান, শেখ হাসিনাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে হত্যা নির্যাতন ও গণহত্যার অভিযোগে তদন্ত হবে। এমনকি এরই মধ্যে মন্ত্রীসহ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে যেভাবে বিবৃতি আসছে তাতে প্রধান উপদেষ্টা অখুশি হয়েছেন। এ বিষয়টি গতকাল ভারতের রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
গতকাল ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিবৃতি দেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য স্বস্তিকর হচ্ছে না। তার কারণ হিসেবে সরকার মনে করছে, এটি দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক হবে না। শেখ হাসিনা ভারতে বসে যেন এটা না করেন সে বিষয়ে সে দেশের হাইকমিশনারকে বলা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।