জুমবাংলা ডেস্ক : বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে (শেবাচিম) সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে চিকিৎসকদের হামলার শিকার হয়েছেন সাংবাদিকেরা।
আজ শনিবার এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সাংবাদিকদের সেখানে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে পুলিশ এসে তাঁদের উদ্ধার করে।
হামলার শিকার কয়েকজন সাংবাদিক জানান, শেবাচিমে এক ছাত্রী র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন। তৃতীয় বর্ষের ওই ছাত্রীকে দুই দফা র্যাগিংয়ের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার সংবাদ সংগ্রহের জন্য গেলে সেখানে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় প্রশাসনিক ভবনের সব কটি ফটক আটকে রেখে সাংবাদিকদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে সাংবাদিকদের উদ্ধার করে।
কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পঞ্চম বর্ষের ছাত্রী নিলীমা জাহান জুঁই ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের অভিযোগ তোলেন তৃতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী। তাঁকে গত বুধবার রাতে দাঁড় করিয়ে রেখে মানসিক নির্যাতন করেন জুঁইয়ের নেতৃত্বে একদল সিনিয়র ছাত্রী। এতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে রাতেই শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয় কলেজ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে।
এদিকে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সময় কমিউনিটি মেডিকেল বিভাগের চিকিৎসক বাকি বিল্লাহ ও প্যাথলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক পবিত্র কুমার হামলার নেতৃত্ব দেন। তাঁরা কলেজের কর্মচারী ও শ্রেণিকক্ষ থেকে ছাত্রদের ডেকে এনে হামলার নির্দেশ দেন।
ঘটনার পর বরিশালের গণমাধ্যমকর্মীরা শেবাচিম অধ্যক্ষের কার্যালয়ে গিয়ে প্রতিবাদ জানান। পরিস্থিতি সামাল দিতে অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশার সাংবাদিক প্রতিনিধিদের নিয়ে বেলা দেড়টার দিকে বৈঠকে বসেন। বৈঠক শেষে অধ্যক্ষ ঘটনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তখন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ দাবি করেন, হামলার নেতৃত্ব দেওয়া চিকিৎসক বাকি বিল্লাহ ও পবিত্র কুমারকে শেবাচিম থেকে বদলি করতে হবে।
ঘটনার শিকার সাংবাদিকেরা বলেন, র্যাগিংয়ের শিকার তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী অভিভাবকসহ শনিবার অধ্যক্ষর কার্যালয়ে অভিযোগ দিতে যান। খবর পেয়ে সাংবাদিকেরাও সেখানে যান। তাঁরা ঘটনার শিকার ছাত্রীর বক্তব্য নেওয়ার সময় দুজন চিকিৎসকের নেতৃত্বে অতর্কিত চার-পাঁচজন হামলা চালান। সাংবাদিকদের মারতে মারতে অধ্যক্ষের কার্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয়।
এশিয়ান টেলিভিশনের সাংবাদিক ফিরোজ মোস্তফা বলেন, অভিযোগকারী ছাত্রী ও তাঁর অভিভাবকদের সামনেই হামলা চালানো হয়েছে। হামলা শুরুর পর কর্মচারী ও শ্রেণিকক্ষ থেকে ছাত্রদের ডেকে আনতে অন্য কর্মচারীদের নির্দেশ দেন নেতৃত্ব দেওয়া দুই চিকিৎসক। কর্মচারী ও ছাত্ররা ভবন থেকে বের হওয়ার সব কটি ফটক আটকে দিয়ে সাংবাদিকদের অবরুদ্ধ করে ফেলেন।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশার সাংবাদিকদের বলেন, ‘র্যাগিংয়ের শিকার অভিযোগকারী ছাত্রী মানসিক রোগী। তাঁর মা-ও অসুস্থ। দুজনকে চিকিৎসার জন্য একটি কক্ষে রাখা হয়েছিল। সেখানে সাংবাদিকেরা ঢুকে বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করেন। আমি তখন দায়িত্বরত শিক্ষকদের নির্দেশ দিই পরে এসে বক্তব্য নেওয়ার জন্য। তবে শিক্ষক ও সাংবাদিকদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।’
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার আলী আশরাফ ভূইয়া বলেন, মেডিকেল কলেজের ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।