জুমবাংলা ডেস্ক : দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা শেরপুরে টানা ভারী বৃষ্টি ও ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ভারত সীমান্তবর্তী জেলা শেরপুরের ১৭টি ইউনিয়নের প্রায় লাখো মানুষ। বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গিয়ে ডুবে মৃত্যু হয়েছে নারী ও কিশোরসহ পাঁচজনের। পানির তোড়ে ভেসে গেছে পুকুরের মাছ, কাঁচা ঘরবাড়ি, গাছগাছালি, গবাদিপশু, বিধ্বস্ত হয়েছে কয়েকটি মহাসড়কসহ অসংখ্যা গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়ক। সংকট তৈরি হয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানীয় জলের।
ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী ধোবাউড়া ও হালুয়াঘাট উপজেলায়ও পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ। এ ছাড়া ভারী বৃষ্টি ও নদ-নদীর উপচে পড়া পানিতে যশোরের কেশবপুর পৌরসভাসহ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের ১০৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
শেরপুর প্রতিনিধি জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে টানা ভারী বৃষ্টি ও ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ভারত সীমান্তবর্তী জেলা শেরপুরের ১৭টি ইউনিয়নের প্রায় লাখো মানুষ। বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গিয়ে ডুবে মৃত্যু হয়েছে নারী ও কিশোরসহ পাঁচজনের। পানির তোড়ে ভেসে গেছে পুকুরের মাছ, কাঁচা ঘরবাড়ি, গাছগাছালি, গবাদিপশু, বিধ্বস্ত হয়েছে কয়েকটি মহাসড়কসহ অসংখ্যা গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়ক। সংকট তৈরি হয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানীয় জলের।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৯টার পর থেকে শুরু হয় টানা ভারী বর্ষণ। রাতভর বর্ষণের ফলে বিপদসীমার ওপর উঠে যায় জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি। এসব নদীর বাঁধ উপচে এবং অসংখ্য স্থানে বাঁধ ভেঙে প্রবল বেগে লোকালয়ে প্রবেশ করে বানের পাানি। সকাল হতেই বাড়িঘর, রাস্তাঘাট সব তলিয়ে যায়। আকস্মিক বন্যায় মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়ে। পানিতে তলিয়ে যায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যসেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান। এতে ঝিনাইগাতি উপজেলা পরিষদ ও সদর বাজারসহ অন্তত ৭টি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়ে পড়ে। নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী পাহাড়ি ইউনিয়নগুলো ছাড়াও নদী তীরবর্তী অন্যান্য ইউনিয়ন ও নিম্নাঞ্চলের ইউনিয়নগুলো প্লাবিত হয়ে পড়ে। শুক্রবার রাত থেকে পাহাড়ি নদীগুলোতে পানির তীব্রতা কিছুটা কমে এলেও ভাটি অঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হতে শুরু করে। সবমিলিয়ে অন্তত ১০টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয় এ উপজেলার।
শুক্রবার দুপুরে উপজেলার অভয়পুর গ্রামের বাছির উদ্দিনের ছেলে হাতেম আলী (৩০) ও সহোদর আলমগীর (১৬) চেল্লাখালী নদীর ভেঙে যাওয়া পানির স্রোতে নিখোঁজ হয়। শনিবার পানি কিছুটা কমে আসায় বিকাল ৪টার দিকে কুতুবাকুড়া গ্রামের ধান ক্ষেত থেকে ওই দুই সহোদরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। একইভাবে শুক্রবার বন্যার পানিতে ডুবে মারা যান উপজেলার বাঘবেড় বালুরচর গ্রামের মানিক মিয়ার স্ত্রী ওমিজা বেগম। একই দিন সন্ধ্যায় খলিসাকুড়া গ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে মারা যান বৃদ্ধ ইদ্রিস আলী। এ ছাড়া আরও একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও এখনও পর্যন্ত তার নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন আরও একজন।
এদিকে বানভাসি মানুষকে উদ্ধারে শুক্রবার থেকেই কাজ করছে সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, বিজিবি ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। শনিবার দিনভর স্পিডবোট, নৌকা, ভেলা, টিউব ইত্যাদি নিয়ে চলে বন্যায় আটকে পড়াদের উদ্ধার অভিযান। এ ছাড়াও শুকনা খাবারসহ অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে বানভাসিদের মাঝে। এসব কাজে অংশ নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন, বিএনপি, ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এদিকে শনিবার বিকাল পর্যন্ত নিম্নাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটতে দেখা গেছে। কেউ আত্মীয় বাড়ি আবার কেউ বা ছুটেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে।
ময়মনসিংহ ব্যুরো জানায়, মযমনসিংহে জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা হালুয়াঘাট এবং ধোবাউড়া উপজেলার দুদিনের প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ৮০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছেন। এর সঙ্গে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন দুটি উপজেলার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। শনিবারও বন্যার অবনতির কথা জানিয়েছেন এলাকাবাসী। দুটি উপজেলার পানিবন্দি মানুষের জন্য ২০ টন চাল বরাদ্দ দিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন।
শুক্রবার ও গতকাল শনিবার দুদিন ধরে প্রবল বর্ষণ হয় জেলার সব উপজেলায়। জেলার বিভিন্ন উপজেলা নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে হাজার হাজার মৎস্য খামার। পানির নিচে তলিয়ে গেছে একরের পর একর জমি।
যশোর থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, সম্প্রতি ভারী বৃষ্টি ও নদ-নদীর উপচে পড়া পানিতে কেশবপুর পৌরসভাসহ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কেশবপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের মধ্যকুল ও হাবাসপোল এলাকা প্রায় এক মাস প্লাবিত থাকায় মানুষ বাধ্য হয়েই যশোর চুকনগর সড়কের দুই পাশে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে টং ঘর বেঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।
কেশবপুরে সম্প্রতি টানা বৃষ্টি ও নদ-নদীর উপচে পড়া পানিতে প্লাবিত হয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়। এ পানি নিষ্কাশন হতে না পেরে এখন ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জলাবদ্ধতায় উপজেলার ১০৪ গ্রাম প্লাবিত হয়ে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দির শিকার হয়েছে। কেশবপুরের আপার ভদ্রা, হরিহর নদ ও বুড়িভদ্রা নদী পলিতে ভরাট হওয়ায় পানি প্রবাহে বাধাগ্রস্ত হয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পানি মানুষের বাড়িঘরে ঢুকে পড়ায় বাধ্য হয়েই উঁচু স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন। সরেজমিন শুক্রবার দুপুরে যশোর-চুকনগর সড়কের কেশবপুর মধ্যকুল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রায় শতাধিক পরিবার রাস্তার দুই পাশে টং ঘর বেঁধে রয়েছেন। রহিমা খাতুনের মতো ওই রাস্তার দুই পাশে আশ্রয় নিয়েছেন আবদুল মজিদ, এনামুল হোসেন, শহীদ হোসেনসহ প্রায় শতাধিক পরিবার। অনেকেই বাড়ির গরু, ছাগল ও হাঁস-মুরগি নিয়ে রাস্তায় এসে উঠেছেন।
নেত্রকোনা প্রতিনিধি জানান, নেত্রকোনায় টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে প্রধান নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে আবারও বন্যার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। জেলার উব্ধাখালী, কংস নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি। এতে করে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। দুর্গাপুর উপজেলার গাওকান্দিয়া ও কাকৈরগড়া ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্ধ রয়েছে গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নেত্রকোনার জারিয়া-জাঞ্জাইল পয়েন্টে ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টি ও দুর্গাপুরে ১৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এই বৃষ্টির ফলে জেলার সোমেশ্বরী, উব্ধাখালী, কংস ও ধনু নদের পানি বেড়ে চলেছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যা দেখা দিতে পারে। তবে এখনও প্রধান নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জানান, দুর্গাপুরে পানি বৃদ্ধি পেলেও এখনও মানুষের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেনি। শনিবার দুর্গাপুরে বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিলে ত্রাণ ও আশ্রয়কেন্দ্রসহ সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে।
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি জানান, টানা বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামে আবারও নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার ও তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, পানি বাড়লেও এখনও সব নদ-নদী বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম পাউবোর নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, শনিবার সকাল ৯টার রিপোর্ট অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। একই সময়ে ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ২৫ সেন্টিমিটার এবং ধরলা পানি শহরের সেতু পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এখনও বিপদসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, নদ-নদীর পানি বাড়লেও জেলায় আপাতত বন্যার পূর্বাভাস নেই। ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পেলেও বিপদসীমার ওপরে ওঠার সম্ভাবনা নেই । তবে ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমারের পানি কমার পূর্বাভাস রয়েছে।
নোয়াখালী প্রতিনিধি জানান, নোয়াখালীতে টানা বৃষ্টিতে আবারও তীব্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলাতে ১২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে নোয়াখালী জেলা শহরের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত পাড়া, স্কুল-কলেজ-মাদরাসা, সড়ক, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারের বাস ভবনের নিচ তলা, জেলা রেকর্ড রুমসহ বিভিন্ন স্থাপনায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে সেবাপ্রত্যাশীরা পড়েছে চরম দুর্ভোগে। এ ছাড়াও জেলার আটটি উপজেলায় সড়ক ও বাসাবাড়িও জলাবদ্ধতায় কবলিত হয়েছে। এতে ২ লাখ ৬ হাজার ৮১৫টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শনিবার জেলার সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নিম্নাঞ্চলীয় এলাকাগুলোতে নতুন করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
জেলা আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক আরজুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ১২৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আরও কয়েক দিন বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, নোয়াখালীতে জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রশাসন কাজ করছে। এর মধ্যে পানি নিষ্কাশনে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করার উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে মানুষ জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে।
চাঁদপুর প্রতিনিধি জানান, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ ২৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে চাঁদপুর জেলায়। শুক্রবার রাতভর থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি এখনও চলমান রয়েছে।
এদিকে চাঁদপুরে রেকর্ড বৃষ্টিপাতে তলিয়ে গেছে চাঁদপুর শহরসহ বিভিন্ন উপজেলা। ঘরবাড়ি, মসজিদ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। শহরের বিষ্ণুদী মাদরাসা রোড, নাজিরপাড়াসহ বেশ কিছু এলাকার দুই শতাধিক মানুষ পানিবন্দি।
চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক শাহ মো. শোয়াইব বলেন, গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত চাঁদপুর জেলায় ২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ছিল। এর মধ্যে আজকেই ভোর ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, টানা বৃষ্টিতে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে পানি বাড়ছে। তবে যমুনায় পানি বাড়লেও বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে শনিবার সকাল ৬টায় পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ২৪ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ১২ সেন্টিমিটার। এতে শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে যমুনার পানি বিপদসীমার ২৬৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে কাজীপুরের মেঘাই ঘাট পয়েন্টে শনিবার সকাল ৬টায় পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৮৮ মিটার। এ পয়েন্টে ২৪ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ১৪ সেন্টিমিটার। এতে মেঘাই ঘাট পয়েন্টে যমুনার পানি বিপদসীমার ২৯২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাজমুল হোসাইন জানান, টানা বৃষ্টির কারণে শুক্রবার থেকে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে যমুনায় পানি কিছুটা বাড়লেও সিরাজগঞ্জে বন্যার আশঙ্কা নেই।
কচুয়া (চাঁদপুর) প্রতিনিধি জানান, জেলার কচুয়া উপজেলার পালাখাল মডেল ইউনিয়নের পালাখাল গ্রামের অর্ধশতাধিক পরিবার আকস্মিকভাবে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গ্রামের পালাখাল দ্বীনিয়া মাদরাসা মাঠের একই চিত্র। ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের অভিযোগ, পাশের একটি স্কুলের মাঠ থেকে পাশর্^বর্তী দীঘিতে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া চারদিকের বিভিন্ন স্থান থেকে আসায় পানি জমে জলাবদ্ধতা হয়। বৃষ্টির পানি সরতে না পেরে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। কয়েক দিন ধরে এলাকায় টানা বৃষ্টি হচ্ছে। যার কারণে পালাখাল উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন দ্বীনিয়া মাদরাসাসহ প্রায় ৪টি বাড়ির লোকজন পানিবন্দি রয়েছে। এতে করে ওই বাড়ির লোকজন চরম দুর্ভোগে রয়েছেন।
ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, কী কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, তা দেখে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।