শেষ পর্যন্ত মহাবিশ্বে টিকে থাকবে কেবল দানবাকৃতির ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বর! যদি গ্রাস করার মতো কোনো বস্তুর অস্তিত্ব না থাকে, তাহলে কী ঘটবে ব্ল্যাকহোলদের ভাগ্যে? এরা কি অনন্তকাল ধরে নিঃসঙ্গ পথিকের মতো মহাশূন্যে ভেসে বেড়াবে? নাকি অন্য সব মহাজাগতিক বস্তুর মতো অজানা উপায়ে জীবনাবসান হবে তাদেরও?
ব্ল্যাকহোলদের সরাসরি দেখা সম্ভব নয়। পরোক্ষভাবে আশপাশের বস্তুদের আচরণ থেকে এদের খোঁজ পাওয়া যায়। বস্তুগুলো প্রবল মহাকর্ষের প্রভাবে ভেঙ্গেচুরে দুমড়ে-মুচড়ে গিয়ে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এই অংশগুলোকে ব্ল্যাকহোল ক্রমান্বয়ে নিজেদের দিকে টেনে নিতে থাকে।
এগুলো যত নিকটবর্তী হয়, তত বাড়তে থাকে গতিবেগ। তীব্র গতিতে চলমান অংশগুলোর মধ্যে ঘটতে থাকে তুমুল সংঘর্ষ, উৎপন্ন হয় তাপশক্তি। ফলে ব্ল্যাকহোলে গিয়ে পড়ার আগে বস্তুগুলো আলোকিত হয়ে উঠে। এভাবে ব্ল্যাকহোল ঘিরে তৈরি হয় ডিস্ক আকৃতির একটি আলোকিত অঞ্চল। বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন অ্যাক্রেশন ডিস্ক। এটি মূলত নির্দেশ করে ঘটনা দিগন্তের সীমা। ২০১৯ সালে ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপ দিয়ে তোলা ব্ল্যাকহোলের প্রথম ছবিটি দেখতে পারেন। এতে স্পষ্ট দৃশ্যমান অ্যাক্রেশন ডিস্ক।
প্রসঙ্গত ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপের ব্যাপারে দু-কথা বলা প্রয়োজন। এটি একক কোনো টেলিস্কোপ নয়। পুরো পৃথিবীর নানা প্রান্তে বসানো আটটি টেলিস্কোপের সমন্বয়ে এই টেলিস্কোপ গড়ে উঠেছে। বৈশ্বিক এক দুরবিন বলা চলে। ব্ল্যাকহোলের মতো মহাজাগতিক বস্তুর ছবি তোলার জন্য এ ধরনের টেলিস্কোপ আবশ্যক। যাহোক, প্রসঙ্গে ফিরি।
পয়েন্ট অব নো রিটার্ন-খ্যাত ঘটনা দিগন্তকে ঘিরে অদ্ভুত এক কোয়ান্টাম মেকানিক্যাল ইফেক্ট আবিষ্কার করেন বিখ্যাত ব্রিটিশ তাত্ত্বিক পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং। ১৯৭৪ সালে তিনি দাবি করেন, কোয়ান্টাম মেকানিকসের দৃষ্টিতে ব্ল্যাকহোল থেকেও পালানো সম্ভব! আরও সঠিকভাবে বললে, পালানো সম্ভব ব্ল্যাকহোলের ঘটনা দিগন্ত থেকে। বিষয়টি তিনি তাত্ত্বিকভাবে প্রমাণও করেন। চলুন জেনে নিই, কীভাবে ঘটতে পারে এই আপাত অসম্ভব ঘটনা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।