লাইফস্টাইল ডেস্ক: শাশুড়ি-বউমার সম্পর্ক কেমন? বাড়িতে নতুন বউ আসার পর থেকে এই উত্তরের খোঁজেই বেশিরভাগ সময় কাটে প্রতিবেশীদের। সম্পর্ক ভাল হবে না, সেটাই যেন ভবিতব্য বলে ভেবে নেন কেউ কেউ। দু’জনের সম্পর্ক ভাল হলেও তা প্রতিবেশীদের বিশ্বাস করানো বড় কঠিন। এবার শাশুড়ি-বউমার বিষমাখা সম্পর্কের ইতি টানতে আসরে নামল পঞ্চায়েত। সম্পর্ক ভাল হলেই মিলবে পুরস্কারও।
ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের হিসার জেলার হানসি মহকুমার জগ্গা বররা গ্রাম। এখানে বাস করেন অন্তত ৩০০০ মানুষ। গ্রামের পঞ্চায়েত নারীশক্তির উপরেই জোর দেয়। তাই এই পঞ্চায়েতে মহিলা সদস্যের সংখ্যাই বেশি। তাঁদের দায়িত্বও যথেষ্ট বেশি। শহরের কাছাকাছি হওয়ায় সাইনি ও গুজ্জর সম্প্রদায়ের মানুষজন বসবাসকারী এই গ্রামে শিক্ষার হারও মন্দ নয়। হরিয়ানার প্রাক্তন সেচ ও শক্তি মন্ত্রী অতর সিং সাইনি এই গ্রামেরই বাসিন্দা। তাঁর দাদু জগ্গামল সাইনির নাম অনুসারেই গ্রামের নামকরণ করা হয়েছিল। এই গ্রামেই এবার পঞ্চায়েতের তরফে নজর দেওয়া হয়েছে গৃহশান্তিতে। শাশুড়ি-বউমার দ্বন্দ্ব দূর করতে বদ্ধপরিকর পঞ্চায়েত সদস্য়রা। তাঁদের দাবি, দু’জনের খারাপ সম্পর্ক সুখী সংসারে ভীষণভাবে কুপ্রভাব ফেলে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম যাতে খারাপ সম্পর্কের ধারা বজায় না রাখে তাই শাশুড়ি-বউমার সম্পর্কের উন্নতিই এখন লক্ষ্য পঞ্চায়েতের।
কিন্তু মুখে সম্পর্কের উন্নতি করার কথা বলে যে কোনও লাভ নেই তা পঞ্চায়েত সদস্যরা ভালই বুঝতে পেরেছেন। তাই পঞ্চায়েতের তরফে ভাল বউমাদের পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে পুরস্কার জেতার শর্ত একটাই, শ্বশুর-শাশুড়ির যত্ন নিতে হবে। যে বউমা যত ভাল যত্ন নেবেন প্রতিযোগিতার দৌড়ে এগিয়ে থাকবেন তিনিই। ভাল বউমার সার্টিফিকেট দেওয়ার আগে পঞ্চায়েতের তরফে ওই মহিলার শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে কথা বলা হয়। এছাড়া তাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেও খতিয়ে দেখা হবে আদতে তিনিই ‘ভাল’ বউমা কি না। উত্তর সদর্থক হলে প্রতি বছর ১৫ আগস্ট ‘ভাল’ বউমাকে পুরস্কার হিসাবে দেওয়া হবে ৫ হাজার ১০০ টাকা। তবে পুরুষরা কীভাবে তাঁদের বাবা-মাকে ভাল রাখবেন, তার কোনও নিদান দেয়নি পঞ্চায়েত।
চলতি বছর পঞ্চায়েতের তরফে মহিলাদের সম্মানিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ‘ভাল’ বউমা হিসাবে পুরস্কৃত হয়েছেন ৫০ বছর বয়সি পুষ্পা সাইনি। শ্বশুর-শাশুড়ির পাশাপাশি প্রতিবেশীদের চোখেও তিনি আদর্শ বউমা। বেশ কয়েক বছর ধরে তিনি তাঁর শয্যাশায়ী শ্বশুর-শাশুড়ির সেবা করছেন। তাই তাঁর হাতে পুরস্কার হিসাবে তুলে দেওয়া হয় পাঁচ হাজার একশো টাকা।
বিয়ের পর শ্বশুর-শাশুড়ির দায়িত্ব নিতে হবে জানতেন, নিয়েছেনও তাই। তবে তার জন্য যে পুরস্কৃত হতে পারেন কেউ তা স্বপ্নেও ভাবেননি পুষ্পা। আর্থিক পুরস্কার হাতে নিয়ে আনন্দে রীতিমতো কেঁদেই ফেলেন ওই মহিলা। পঞ্চায়েতের উদ্যোগে আদৌ শাশুড়ি-বউমার সম্পর্কের উন্নতি হয় কি না, সেটাই এখন দেখার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।