শ্রীলংকার একটি প্রাচীন শহরের নাম হচ্ছে সিগুরিয়া। এ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের অনেক রহস্য বিজ্ঞানীদের কাছে আজও অজানা। এ দুর্গ এতটাই মজবুত যে যারা ভ্রমণ এসেছেন তারা দেখে বিস্মিত হয়েছেন।
ইউনেস্কো ১৯৮০ সালে সিগুরিয়া শহরকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ এর অন্তর্ভুক্ত করে নেয়। এ শহর পাথর দিয়ে নির্মিত বলে একে ‘রক সিটি’ বলা হয়। শ্রীলংকার জনগণ বিশ্বাস করে যে এ শহর মানুষ নয় বরং ঈশ্বর দ্বারা নির্মিত হয়েছে।
১৫০০ বছর ধরে সিগুরিয়া শহর তার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস নিয়ে স্বগর্বে দাঁড়িয়ে আছে। আজ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে বৌদ্ধ ধর্মের সন্ন্যাসীরা এ জায়গায় বসবাস করতেন। এটি এমন এক দুর্গম জায়গায় অবস্থিত যে ওই সময়ে সেনাদলের পক্ষে তা জয় করা কঠিন কাজ ছিলো। এজন্য সিগুরিয়া শহরের দুর্গে যারা থাকতেন তারা বেশ নিরাপদ অনুভব করতেন।
ইতিহাস থেকে জানা যায় যে যুবরাজ কাসাপা তার পিতাকে হত্যা করে সিংহাসনে আরোহন করেন। এ প্রত্নতাত্ত্বিক অঞ্চল ওই সময়ে কাসাপার রাজধানী ছিল। বর্তমানে এ শহরকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে এটা একটা সময় প্রাচীন সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল।
কাসাপার সৎ ভাই বিশাল সেনাবাহিনী নিয়ে এ শহর আক্রমণ করেন এবং কাসাপাকে পরাজিত করে তিনি সিংহাসনে আরোহন করেন। পিতার হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যই কাসাপাকে আক্রমণ করা হয়েছিল।
এ শহরের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে যে ওই সময়ে সেনাদল আক্রমণ করলে অবরোধের মুখে যেন পানি শেষ হয়ে না যায় সেজন্য অনেক খাল-বিল নির্মাণ করা হয়েছিল।
ঊনবিংশ শতাব্দীর সময় এক ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক সিগুরিয়া শহরের অনেক মূল্যবান তথ্য সংগ্রহ করেন। শহরের ভেতরে ফাউন্টেন গার্ডেনের নির্মাণ কৌশল আপনাকে মুগ্ধ করবে।
সিগুরিয়া শহর ও তার দুর্গ ও বাগানের জটিল কাঠামো দেখে প্রত্নতাত্ত্বিকরা বিস্মিত হয়েছেন। ফাউন্টেন বাগানের নির্মাণ কৌশল বৈচিত্র্যে ভরা। এখানে ঘুরতে আসলে আপনি বৌদ্ধ ধর্মের অনেক মূর্তি দেখতে পারবেন।
বৌদ্ধ ধর্মের সন্ন্যাসীদের জীবনের নানা উপকরণ উপভোগ করতে পারবেন। তাদের জীবন-যাপন ও সংস্কৃতির নিদর্শন হিসেবে এ শহর আজও দাঁড়িয়ে আছে।প্রাচীনকালের স্থাপত্য শিল্পের প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা পেতে হলে সিগুরিয়া শহরে আপনাকে আসতেই হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।