সমুদ্র যাত্রার সময়, উত্তাল ঢেউয়ের মধ্য দিয়ে যাত্রা করার অপ্রতিরোধ্য ইচ্ছা অনুভব করা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু আনন্দের এই অনুভূতি কখনো কখনো সারা জীবনের জন্য কালো হয়ে যায়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সমুদ্র সৈকতে দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে। এর জন্য দায়ী সাগরে সাঁতার কাটার সময় অপর্যাপ্ত সতর্কতা এবং সৈকতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাব। সুতরাং, সমুদ্রে গোসলের সময় দুর্ঘটনা এড়াতে কী করণীয় দেখে নেওয়া যাক।
সমুদ্রে গোসলের সময় কোনো বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য নিচের কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো—
চিহ্ন এবং পতাকা সম্পর্কে জানুন
সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রঙের পতাকা টাঙানো হয়। এগুলো কখন এবং কোথায় সমুদ্রের পানিতে যাওয়া নিরাপদ সে সম্পর্কে নির্দেশাবলী বহন করে। একটি লাল পতাকা মানে আপনি সমুদ্রের জলে প্রবেশ করতে পারবেন না। এগুলো ভাটার সময় রোপণ করা হয়। আর সবুজ পতাকা মানেই সাগরে সাঁতার কাটা এখন নিরাপদ। উচ্চ জোয়ারের সময় এই পতাকাটি লাইফগার্ড এলাকায় স্থাপন করা হয়।
একটি হলুদ পতাকা মানে সমুদ্রের ঢেউ ১.৫ মিটার উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে। অতএব, পানিতে সাঁতার কাটার সময় সতর্কতা বাঞ্ছনীয়। সাঁতার কাটার জায়গা বেছে নেওয়ার সময় সবুজ; যতটা সম্ভব হলুদ চিহ্নিত এলাকায় থাকুন। কোনো অবস্থাতেই লাল পতাকা অতিক্রম করা উচিত নয়।
রিপ কারেন্ট থেকে সাবধান
রিপ কারেন্ট একটি শক্তিশালী অবস্থা, যেখানে তরঙ্গ সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয়। এই তরঙ্গগুলো বিদ্যুতের গতিতে অভিজ্ঞ সাঁতারুদের সমুদ্রের গভীরে টেনে নিয়ে যেতে পারে। এই সময়ে আপনি সমুদ্রের পানিতে ডুব দিতে পারবেন না। যতটা সম্ভব আপনার রক্ষাকারীদের কাছ থেকে রিপ কারেন্টের সময় সম্পর্কে জানা উচিত।
লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার করা
সমুদ্রের পানিতে গোসলে নামার সময় লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার করা উচিত। সমুদ্রের আবহাওয়া যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে। টায়ার বা লাইফ জ্যাকেট থাকলে এ অবস্থায় বাঁচানোর সুযোগটা থাকে।
চোরাবালি থেকে সাবধান
সাগরে প্রায়ই শক্তিশালী স্রোত এবং লুকানো গর্ত থাকে। উচ্চ জোয়ারে সমতল অঞ্চলগুলো ভাটার সময় খাদে ভরাট হয়ে যায়। আর ঘূর্ণিপাকে একটি ভয়ানক চোরাবালির জন্ম দেয়। তাই এই চোরাবালি এড়াতে, আপনাকে উদ্ধারকারীদের সাহায্য চাইতে হবে। সবুজ পতাকা চিহ্নিত এলাকায় সাঁতার কাটা সম্ভব। যাই হোক, সবাই একত্র থাকতে হবে। যখন সমস্যা দেখা দিবে, তখন অন্যরা যাতে উদ্ধার করতে আসতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য সতর্কতা প্রয়োজন হতে পারে।
শিশু এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে করণীয়
সমুদ্র সাঁতারের ক্ষেত্রে শিশু এবং বয়স্করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিশু এবং বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তিদের কখনোই একা রাখা উচিত নয়। অসুস্থ বা দুর্বল ব্যক্তিদের নিয়ে সমুদ্রে হাঁটুপানির বেশি নামা যাবে না। যদি যুবকদের মধ্যে এমন থাকে, তবে তাদের থেকে অন্যদের সতর্ক হওয়া উচিত।
প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম ও খাবার পানি রাখা
সমুদ্যে সৈকতে শঙ্খ, ঝিনুক জাতীয় জিনিসে লেগে অনেক সময় পা কেটে যায়। বিশেষ করে ইনানি সৈকতে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। এই পরিস্থিতির জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম থাকা বাঞ্ছনীয়। আর ক্লান্তি এড়ানোর জন্য নিজের সঙ্গে খাবার পানি রাখতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।