সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখন থেকে আর থাকবে না দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসা ‘সহকারী শিক্ষক’ নাম পদটি।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই পদের নাম হবে শুধু ‘শিক্ষক’। একই সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার আরও চারটি পদে নাম পরিবর্তন আনা হয়েছে।
প্রশাসনিক কাঠামোর স্বচ্ছতা ও আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে এই পদের পুনরায় নামকরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. শামছুল আরিফের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে উল্লেখ করা হয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গত মে মাসে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভার সুপারিশের আলোকে এসব পরিবর্তন আনা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, এখন থেকে সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার এন্ট্রি পদ ‘সহকারী শিক্ষক’ না হয়ে শুধুই ‘শিক্ষক’ নামে পরিচিত হবে। এতে দেশের মোট ৩ লাখ ৬২ হাজার ৪১৮টি পদে এই পরিবর্তন প্রযোজ্য হবে।
মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য, মাঠপর্যায়ে শিক্ষক ও কর্মকর্তারা বাস্তবে যে দায়িত্ব পালন করছেন, নতুন নামগুলো সেটার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। একই সঙ্গে নামগুলোকে আরও সরল, আধুনিক ও দায়িত্ব-কেন্দ্রিক করে তোলার লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত।
শুধু সহকারী শিক্ষকই নয়, আরও চারটি পদের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এগুলো হলো —সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, যা এখন থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, অর্থ কর্মকর্তা, যা এখন থেকে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা, সহকারী মনিটরিং অফিসার, যা এখন থেকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা, পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, যা এখন থেকে সহকারী ইনস্ট্রাক্টর (পরীক্ষণ বিদ্যালয়) হিসেবে পরিচিত হবে।
বিশেষ করে পরীক্ষণ বিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রেও এই রদবদল গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে দেশে ৩৩৫টি পরীক্ষণ বিদ্যালয় রয়েছে, যেখানে শিক্ষকরা এখন থেকে ‘সহকারী ইনস্ট্রাক্টর’ হিসেবে পরিচিত হবেন।
মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় পদের নামকরণে দীর্ঘদিন ধরেই অসামঞ্জস্য ছিল। অনেক সময় একই পদবির মধ্যে ‘সহকারী’ শব্দ থাকায় বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতো— বিশেষ করে মাঠপর্যায়ে দায়িত্ব ভাগাভাগির ক্ষেত্রে। নতুন নামগুলো কর্মকর্তাদের দায়িত্ব ও অবদানকে আরও ভালোভাবে প্রতিফলিত করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, পদের নতুন নামকরণ একটি প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন, যা কেবল নামেই নয়- দায়িত্বের গ্রহণযোগ্যতায়ও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। একে শুধু নাম পরিবর্তন হিসেবে দেখলে হবে না বরং এটি প্রশাসনিক কার্যকারিতা এবং মর্যাদা বৃদ্ধির একটি পদক্ষেপ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই পরিবর্তনের ফলে প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণ থেকে নীতিনির্ধারকদের কাছে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের ভূমিকা আরও স্পষ্ট হবে। ভবিষ্যতে পদোন্নতি, প্রশিক্ষণ, দায়বদ্ধতা ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রেও এই নামকরণ কাঠামো সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।