জুমবাংলা ডেস্ক : বাজারে সুগন্ধি চালের সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই, গত বছরের মাঝামাঝি থেকে রপ্তানিও বন্ধ। এর পরও উচ্চমূল্যে বিক্রি হওয়া সুগন্ধি চালের দাম কমছে না। বিক্রি হচ্ছে চড়া দামেই। বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত বছরের শুরুর দিকে কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই সব ধরনের চালের দাম বেড়ে যায়। পরে কয়েক দফায় বিভিন্ন চালের দাম কমলেও, সুগন্ধি চাল উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল বলে প্রতিবেদন করেছে দৈনিক কালের কণ্ঠ।
ঈদ এবং এর পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে সুগন্ধি চালের চাহিদা বেড়ে যায়। এ বছর ঈদকে ঘিরে স্থিতিশীল বয়েছে সুগন্ধি বা পোলাও চালের বাজার। রমজান ও ঈদ উপলক্ষে নতুন করে সুগন্ধি চালের দামে তেমন পরিবর্তন নেই। আগের চড়া দামেই রাজধানীর বাজারগুলোতে এ চাল বিক্রি হচ্ছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্যাকেটজাত প্রতিকেজি সুগন্ধি চাল ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরায় ভালো মানের খোলা সুগন্ধি চাল প্রতি কেজি ১৫০ টাকায় এবং সাধারণ মানের সুগন্ধি চাল কেজি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, সুগন্ধি চালের রপ্তানি বন্ধ থাকায় দেশের বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি।
এ কারণে গত এক বছরে সুগন্ধি চালের দাম বাড়েনি। বরং গত দুই মাসের ব্যবধানে পাইকারি পর্যায়ে সুগন্ধি চালের দাম কিছুটা কমেছে। প্যাকেটজাত সুগন্ধি চাল সরবরাহকারী কম্পানির প্রতিনিধিরা বলছেন, ‘এ বছর বাড়তি দামে সুগন্ধি চালের ধান কেনার পরও আমরা দাম বাড়াইনি। গত বছরের মার্চে যে দামে সুগন্ধি চাল বিক্রি হয়েছিল, এখনো সে দামেই বিক্রি হচ্ছে। গত এক বছরে প্যাকেটজাত সুগন্ধি চালের মূল্য এক টাকাও বাড়ানো হয়নি বলে তাঁরা জানান। বাজার ঘুরে এর প্রমাণও পাওয়া গেছে।’
সম্প্রতি রাজধানীর বাবুবাজার, কারওয়ান বাজার, বাড্ডা ও জোয়ারসাহারা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে খোলা চাল বিক্রির পাশাপাশি প্রাণ, স্কয়ার, তীর, আকিজ, এসিআইসহ প্রায় ১০ থেকে ১২টি কম্পানির প্যাকেটজাত সুগন্ধি চাল বাজারে বিক্রি হচ্ছে। প্রাণের চিনিগুঁড়া সুগন্ধি চাল এক কেজির প্যাকেট ১৭০ টাকায়, স্কয়ারের চাষী চিনিগুঁড়া এক কেজি চালের প্যাকেট ১৭৫ টাকায়, ফ্রেশ চিনিগুঁড়া সুগন্ধি চাল এক কেজির প্যাকেট চাল ১৭০ টাকায়, এসিআই পিওর চিনিগুঁড়া সুগন্ধি চাল এক কেজির প্যাকেট ১৭০ টাকায়, স্বপ্ন চিনিগুঁড়ার এক কেজির প্যাকেট চাল ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আড়ং ন্যাচারাল কালোজিরা চাল দুই কেজির প্যাকেট ৩৩২ টাকায় এবং এসিআই অ্যারোমা সুগন্ধি চিনিগুঁড়া দুই কেজির প্যাকেট চাল ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ভালো মানের খোলা সুগন্ধি চাল ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও দাম ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকাও চাওয়া হয়েছে। সাধারণ মানের খোলা সুগন্ধি চাল কেজি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ১২০ থেকে ১২৫ টাকা কেজিতেও সুগন্ধি চাল বিক্রি হতে দেখা গেছে। বিক্রেতারা বলছেন, ‘১২০ থেকে ১২৫ টাকায় বিক্রি হওয়া সুগন্ধি চালের মান তেমন ভালো না। সুগন্ধি চালের সঙ্গে অন্য চাল মিশিয়ে কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে।’
রাজধানীর চালের পাইকারি বড় বাজার বাবুবাজার। এই বাজারের সুগন্ধি চালের পাইকারি ব্যবসায়ী মেসার্স কনিক এন্টারপ্রাইজের মালিক জিয়াবুল হক বলেন, ‘সুগন্ধি চালের বাজার এখন পুরোপুরি স্থিতিশীল। এবার ঈদের আগে বা পরে সুগন্ধি চালের দাম বাড়ার কোনো আশঙ্কা নেই। দুই মাস আগের তুলনায় এখন সুগন্ধি চালের দাম কিছুটা কম। সুগন্ধি চালের রপ্তানি বন্ধ থাকার কারণে বাজারেও পর্যাপ্ত চালের সরবরাহ রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পাইকারিতে ভালো মানের পুরনো সুগন্ধি চাল বস্তা (৫০ কেজি) ছয় হাজার ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভালো মানের নতুন সুগন্ধি চাল প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ছয় হাজার ২৫০ টাকায়। সাধারণ মানের সুগন্ধি চাল পাইকারিতে বস্তাপ্রতি পাঁচ হাজার ৪০০ থেকে পাঁচ হাজার ৭৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।’ রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ঢাকা রাইস এজেন্সির ব্যবসায়ী মো. সায়েম বলেন, ‘বাজারে পোলাও চালের চাহিদা এখন খুবই কম। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে বাজারে পোলাও চাল বিক্রি কমে গেছে। এ কারণে বাজার স্থিতিশীল অবস্থায় আছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।